যানজটে আটকে থাকা জামায়াতে ইসলামীর আমিরের গাড়িবহরকে পার হওয়ার জায়গা করে দিতে গিয়ে বাসচাপায় নিহত কুমিল্লার লালমাই উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দীনের পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

আজ শনিবার সন্ধ্যায় নিহত কর্মীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে এই আশ্বাস দেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। এ সময় জামায়াতের আমির নিহত কর্মীর বড় ছেলে আবু বকর ছিদ্দিক (১৫) ও মেজ ছেলে আলী আহসানের (১৩) হাতে প্রাথমিক অনুদানের একটি খাম তুলে দেন।

এ সময় নিহত কর্মীর তিন বছরের শিশুসন্তানকে কোলে নিয়ে শফিকুর রহমান ঘোষণা করেন, ‘এখন থেকে এই শিশুসন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে কর্মক্ষম না হওয়া পর্যন্ত পরিবারটির সকল সদস্যের পুরো দায়িত্ব নিল জামায়াতে ইসলামী, ইনশা আল্লাহ।’ নিহতের স্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি মন খারাপ করবেন না। এই পৃথিবী থেকে আমরাও একদিন চলে যাব। তিনি ভালো কাজের ওপরে থেকে বিদায় নিয়েছেন। আল্লাহ তাঁকে শহীদ হিসেবে কবুল করুক।’

পরে গ্রামবাসীর উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আজকে অল্প কিছু টাকা হাতে তুলে দিয়েছি। প্রতি মাসের ১ তারিখে আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের হাতে তুলে দেব, ইনশা আল্লাহ। তবে এইটা ঠিক আমরা তাদের বাবাকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। নিশ্চয়ই তাদের নিয়ে বাবার অনেক স্বপ্ন ছিল। আল্লাহ প্রিয় ভাইটির স্বপ্নগুলো পূরণ করে দিক।’

এর আগে আজ বিকেলে শফিকুর রহমান নিহত জামায়াত কর্মী জসিম উদ্দীনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুবারক হোসাইন, কুমিল্লা মহানগর জামায়াতের আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ইয়াছিন আরাফাত, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান, সেক্রেটারি সরওয়ার উদ্দিন ছিদ্দিকী প্রমুখ।

আরও পড়ুনকুমিল্লায় জামায়াত আমিরের গাড়িবহর যানজটে, নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে বাসচাপায় কর্মীর মৃত্যু২২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত র আম র আল ল হ পর ব র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ