মুরাদনগরে বাবার বিরুদ্ধে ১৬ মাসের শিশু সন্তান নিজের নয় সন্দেহে গলাটিপে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত ক্বারি আবু নাঈম ওরফে নাঈম হুজুর মুরাদনগর উপজেলা সদরের উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে। ঢাকার একটি মসজিদে ইমামতি করেন তিনি। তাঁর তৃতীয় সন্তান নিহত শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসান।
শিশু আব্দুল্লাহ ওরফে রাফসানের মা জানান, শিশু রাফসানের জন্মের পর থেকেই তার বাবা তাকে নিজের সন্তান হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না। এ বিষয়টি নিয়ে তাদের সাংসারিক জীবনে দীর্ঘদিন ধরে ঝামেলা চলছিল। শনিবার সকাল ৯টার দিকে শিশু রাফসানকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা শহরে নিয়ে যেতে চান তার বাবা নাঈম। তখন শিশুটির মা তাদের সঙ্গে যেতে চাইলে বাধা দেন তাঁর স্বামী। বিষয়টিকে খুব ভালোভাবে নিতে পারেনি শিশুটির মা। তাই নিজে যেতে না পারায় স্বামীর সঙ্গে তাঁর বড় ছেলে ১২ বছর বয়সী আনাসকে পাঠায়। অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর বড় ছেলে একা বাড়ি চলে আসে। বাড়ি ফিরে বড় ছেলে আনাস জানায়, তার বাবা তাকে মুরাদনগর সদরের বাজারে রেখে ছোট ভাইকে নিয়ে একা চলে গেছে কুমিল্লায়। পরে দুপুর ১২টার দিকে মৃত অবস্থায় রাফসানকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। তিনি জানান, কুমিল্লা শহরে যাওয়ার পথে কংশনগর এলাকায় গাড়ির ভেতরেই অসুস্থতার কারণে শিশু রাফসান মৃত্যুবরণ করেছে। শিশুটির মায়ের দাবি দীর্ঘদিন ধরে তাঁর স্বামী হুমকি দিয়ে আসছিলেন সন্তানটিকে মেরে ফেলার। অসুস্থতার কারণে নয়, তাঁর স্বামী শিশু রাফসানকে গলাটিপে হত্যা করেছে।
স্থানীয়রা জানান, রাফসানের জন্মের পর থেকে স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে তাঁর স্বামী বহুবার সালিশ ডেকেছেন। প্রতিটি সালিশেই শিশু সন্তান রাফসানকে মেরে ফেলার হুমকি দিত তার বাবা নাঈম। সালিশে স্ত্রীর পরকীয়ার কোনো প্রমাণ দিতে না পারায় স্থানীয় মাতব্বরদের পরামর্শে তারা একসঙ্গে সংসার করছিলেন। হয়তো তাঁর স্ত্রীর সেই পরকীয়া সন্দেহের জেরেই শিশু রাফসানকে হত্যা করা হয়েছে।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির বাবা নাঈম মিয়াকে আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র দনগর

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু

কুমিল্লার বরুড়া ও মুরাদনগরে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বরুড়ায় দুই স্কুল ছাত্র এবং মুরাদনগরে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরুড়া উপজেলার পয়ালগাছা গ্রামের মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং বিল্লাল হোসেন ছেলে মোহাম্মদ জিহাদ (১৪) দুপুরে হালকা বৃষ্টির মাঝে মাঠে ঘুড়ি উড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় হঠাৎ বজ্রপাত হলে দুই ছাত্র মারাত্মকভাবে আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দুই স্কুলছাত্র বরুড়ার উপজেলার বড়হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হাসান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। পরিবারের কোনও অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

অপর ঘটনায় মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানা এলাকায় বজ্রপাতে দুই কৃষক মারা গেছেন।

স্থানীয়রা বলেন, পূর্বধইর পূর্ব ইউনিয়নের কোরবানপুর পশ্চিম পাড়ার মৃত বীর চরন দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৫৫) ও উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে জুয়েল ভূঁইয়া (৩২) মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আহত হন আরও ২ ব্যক্তি।

কোরবানপুর গ্রামের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থনের পাশের একটি মাঠে জমিতে ধান কাটছিলেন ওই দুই কৃষক। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে ঘটনাস্থলে ওই দুই কৃষক মারা যান। পরে এলাকাবাসী গিয়ে তাদের উদ্ধার করে থানায় খবর দেন।

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, কোরবানপুর পূর্বপাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে দুই জন কৃষক বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আইনি প্রক্রিয়া শেষ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগ দাবিতে মুরাদনগরে বিক্ষোভ, পুলিশের বাধা
  • উপদেষ্টা আসিফের পদত্যাগের দাবিতে মুরাদনগরে বিক্ষোভ মিছিল, পুলিশের বাধা
  • উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ
  • কুমিল্লায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু