যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভন্ডুল করতে নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন: হামাস
Published: 23rd, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভন্ডুল করতে নেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন বলে মন্তব্য করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির অভিযোগ, ইসরাইল সরকার চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে আলোচনায় যুক্ত হচ্ছে না, যা আগামী ১ মার্চ শেষ হওয়ার কথা।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের রাজনৈতিক শাখার জ্যেষ্ঠ সদস্য বাসেম নাঈম এ অভিযোগ করেন।
বাসেম নাঈম বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আবারও এই চুক্তিকে ভন্ডুল ও গুরুত্বহীন করার নোংরা খেলা চলছে। আর এই খেলার মাধ্যমে আবার নতুন করে যুদ্ধে ফিরে যাওয়ার বার্তা দেয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলা হয়েছে।
হামাসের এই নেতার অভিযোগ, ইসরাইল চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করছে। চুক্তির প্রথম পর্যায় কার্যকর থাকার মেয়াদকালে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রতিশ্রুতি মেনে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা গাজায় ঢুকতে দেয়া হয়নি। নেতজারিম করিডর (গাজার উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে সংযোগকারী সংকীর্ণ পথ) থেকে সেনা প্রত্যাহার স্থগিত রাখা হয়েছিল।
এর আগে এই মাসের শুরুতে দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইসরাইলি কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, হামাসের অভিযোগ সত্য। তবে সরকারিভাবে ইসরাইল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
যুদ্ধবিরতির এই চুক্তির দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায় ছয় সপ্তাহের প্রথম পর্যায়ের মধ্যে চূড়ান্ত করার কথা ছিল। প্রথম পর্যায়ে ইসরাইলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছেড়ে দেয়া, গাজা থেকে আংশিকভাবে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহার এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা হয়।
১৯ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় পর্যায় চূড়ান্ত হলে সব ইসরাইলি বন্দির মুক্তি এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা।
এদিকে যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী শনিবার ইসরাইলের ছয়জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ছয় ইসরাইলি জিম্মির বিনিময়ে ৬২০ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা ছিল।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর অভিযোগ, সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া জিম্মিদের ‘অপমানজনক অনুষ্ঠানের’ মাধ্যমে মুক্তি দেয়ায় আপাতত ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেয়া হবে না।
বিএইচ
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: পর য য়
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কার্যত সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। এ পরস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার দুজনকে করা এ ফোন কলে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনা কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়া দুই
ফোনালাপের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে দেওয়া পৃথক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় মার্কো রুবিও বলেন, তিনি পেহেলগাম হামলায় নিহতদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি আরও বলেন, ভারত যেন পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করার আগে সতর্ক থাকে, কারণ এখনও পর্যন্ত ভারত এই হামলায় পাকিস্তানের সম্পৃক্ততার কোনও প্রমাণ প্রকাশ করেনি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা কমাতে এবং শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে ভারতকে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করার জন্য বলেছেন।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে ফোনালাপে রুবিও- ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পর্যটন কেন্দ্র পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, রুবিও এই অযৌক্তিক হামলার তদন্তে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ বলেন, ভারতের উস্কানিমূলক আচরণ শুধু উত্তেজনাই বাড়াচ্ছে এবং পাকিস্তানের সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান, যেন তারা ভারতের ওপর দায়িত্বশীল আচরণ ও ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাপ প্রয়োগ করে।
এর আগে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে কাশ্মীরের পেহেলগাম জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন, যাদের প্রায় সবাই পর্যটক। হামলার দায় স্বীকার করে রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন। এটিকে পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে মনে করা হয়।
এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজনকে আহত হন। যাদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তারা সবাই পুরুষ। বস্তুত, ২২ এপ্রিলের হামলা ছিল ২০১৯ সালের পুলোয়ামা হামলার পর জম্মু ও কাশ্মীরে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী হামলা। বর্তমানে এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। সূত্র-এএফপি