ইসরায়েল স্পষ্টত যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেছে
Published: 23rd, February 2025 GMT
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মেনে ছয়জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। কিন্তু এর বিনিময়ে ৬২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে গাজায় পাঠাননি ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্তকে ‘খুবই বিরক্তিকর’ বলেছেন স্টিফেন জুনেস। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের পরিচালক।
স্টিফেন জুনেস আল–জাজিরাকে বলেন, ‘এটা যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্টত লঙ্ঘন।’ তিনি আরও বলেন, চুক্তির শর্ত মেনে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা সরবরাহ, তাঁবু, ভ্রাম্যমাণ ঘর, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিতে অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল। তাতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে ইসরায়েল।
যুক্তরাষ্ট্র কখনোই যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পূরণে ইসরায়েলকে চাপ দেবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চাপ ছাড়া ইসরায়েলেরও চুক্তিটি শেষ করার জন্য খুব বেশি উৎসাহ নেই।স্টিফেন জুনেস, যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো ইউনিভার্সিটির মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের পরিচালক।স্টিফেন জুনেস বলেন, ‘বিরক্তিকর বিষয় হলো, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত পূরণে ইসরায়েলকে চাপ দেবে না। যুক্তরাষ্ট্রের কোনো চাপ ছাড়া ইসরায়েলেরও চুক্তিটি শেষ করার জন্য খুব বেশি উৎসাহ নেই।’
এই বিশ্লেষকের মতে, নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্ত ‘বিশ্বাসের ওপর আঘাত’। অন্তত এই মুহূর্তে যতটুকু বিশ্বাস অবশিষ্ট আছে।
আস্থা ও বিশ্বাসের কথা বলতে গিয়ে স্টিফেন জুনেস বলেন, ‘যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়টি ইসরায়েল পূরণ না করে, তাহলে তাঁরা (ফিলিস্তিনিরা) কীভাবে জানবে যে ইসরায়েলিরা চুক্তির পরবর্তী পর্যায়ের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে?’
আরও পড়ুনজিম্মিদের একসঙ্গে মুক্তি দিতে ‘রাজি’ হামাস১৪ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননেতানিয়াহু ‘নোংরা খেলা’ খেলছেন: হামাস৩ ঘণ্টা আগেদীর্ঘ প্রায় ১৬ মাস রক্তাক্ত সংঘাতের পর গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৫ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তানুযায়ী ইসরায়েলের কাছে চার জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করে হামাস.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমল ৭৫ পয়সা
রাজশাহীতে হিমাগারে আলু সংরক্ষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ সোমবার আলুচাষি, ব্যবসায়ী ও হিমাগারমালিকদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, হিমাগারে প্রতি কেজি আলু রাখার জন্য ভাড়া দিতে হবে ৫ টাকা ৫০ পয়সা। এর সঙ্গে যুক্ত হবে শ্রমিকের খরচ ৫০ পয়সা। সেই হিসাবে প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া কমেছে ৭৫ পয়সা।
এর আগে গত মার্চে সরকার প্রতি কেজি আলু রাখার ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পর থেকে এ নিয়ে রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি ভাড়ায় আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। এ নিয়ে কয়েক দফা তাঁরা রাজপথে আন্দোলনও করেছেন। অন্যদিকে হিমাগারমালিকদের দাবি ছিল, প্রতি কেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা করা হোক।
রাজশাহী কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও আলু ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীতে হিমাগার থেকে বাড়তি ভাড়া না দিলে আলু ছাড়া হবে না। এর প্রতিবাদে ঈদের পর নতুন করে আলুচাষি ও ব্যবসায়ীরা আন্দোলন করে আসছেন। তাঁদের দাবি, আলু রাখার খরচ আগের বছরের মতো চার টাকা করতে হবে। এ নিয়ে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তাঁরা। হিমাগার মালিকপক্ষ এ নিয়ে আলোচনায় বসার তাগিদ দিয়ে আসছিল।
এরই মধ্যে আলুচাষিনেতারা ১৪ জুন সেনাবাহিনীর কাছে এ নিয়ে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আজ দুপুরে সভা ডাকা হয়। সভায় সব পক্ষের সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয় যে এ বছর সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি আলুর হিমাগারভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সার বদলে ৫ টাকা ৫০ পয়সা ও শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা রাখা হবে। আর পেইড বুকিংয়ের ক্ষেত্রে শুধু শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে আলু রাখা চাষি ও ব্যবসায়ীদের। পরে বিকেলে ক্যান্টনমেন্টে হওয়া এই সিদ্ধান্ত প্রশাসনিকভাবে পাস করার জন্য রাজশাহী জেলা প্রশাসকের দপ্তরে সভা হয়।
সভায় আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, হিমাগার মালিক সমিতি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি, পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল মঙ্গলবার রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে নতুন ভাড়ার বিজ্ঞপ্তি সব হিমাগারে প্রচার করা হবে।
এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, এবার আলুর দাম কম। আবার এ নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাতের আশঙ্কা ছিল। এ নিয়ে একটি অভিযোগ পান তাঁরা। পরে দুই পক্ষকে নিয়ে সভা হয়। সভায় সবার সম্মতিতে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বিকেলে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আরেকটি সভার মাধ্যমে পাস হয়েছে।
রাজশাহীর আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মিঠু আহমেদ বলেন, শুরু থেকেই তাঁরা বাড়তি ভাড়ার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কয়েক দিন ধরে তাঁরা হিমাগার থেকে আলু নিতে পারছিলেন না। হিমাগারগুলোয় বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছিল। এ নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি সেনাবাহিনীকেও অবহিত করেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত একটি ভালো সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রহমান সিডস স্টোরেজের ব্যবস্থাপক আবদুল হালিম বলেন, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি কেজি আলু রাখতে খরচ পড়বে ৫ টাকা ৫০ পয়সা আর শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা। এ ছাড়া যাঁরা আগে থেকেই টাকা দিয়ে অগ্রিম বুকিং দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে আলুর কেজিপ্রতি শ্রমিক খরচ ৫০ পয়সা দিতে হবে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত সব হিমাগারমালিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হবে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে হিমাগারে ভাড়া বাড়ানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ১৫ জুন ২০২৫