জার্মানির ২১তম সাধারণ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হবে সন্ধ্যা ছয়টায়। ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টার মাথায় প্রাথমিক ফলাফল পাওয়া যাবে।

গত নভেম্বরে জার্মানির তিনদলীয় জোট সরকার ভেঙে যায়। এই পরিপ্রেক্ষিতে নির্দিষ্ট সময়ের ছয় মাস আগেই জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে।

মধ্য ইউরোপের বড় দেশ জার্মানির এই নির্বাচনকে এ মুহূর্তে ইউরোপে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, ইউরোপে কট্টর জাতীয়তাবাদীদের উত্থান ঘটছে। জার্মানিতে কী হয়, সেটা দেখার বিষয়। আবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা ইউরোপীয় রাজনীতি নিয়ে নানা কথাবার্তা বলছেন, আস্ফালন করছেন। ফলে জার্মানিতে কারা ক্ষমতায় আসছে, তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

জার্মানিতে নির্বাচন হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু দলীয় কোনো মিছিল-মিটিং হয়নি। মাইকের ব্যবহার ছিল না। ছিল না পথসভা, হইহুল্লোড়। কোনো হাঙ্গামাও হয়নি।

নির্বাচন নিয়ে যা হয়েছে, তা হলো, দেশজুড়ে নির্ধারিত জায়গায় বা বিলবোর্ডে দলের ও প্রার্থীদের ছবি বা বক্তব্যসংবলিত পোস্টার এবং পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনে দলীয় বিজ্ঞাপন।

জার্মানিতে সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববারে নির্বাচন হওয়াটাই রেওয়াজ। সুতরাং, নির্বাচনের খাতিরে বাড়তি ছুটি বরাদ্দ নেই।

জার্মানির নির্বাচন আইন অনুযায়ী, নির্বাচন ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব হলো নির্বাচনী প্রশাসনের। এই প্রশাসন ভোটারদের বাড়িতে ছয় সপ্তাহ আগেই নির্বাচনী এলাকার নাম, ভোটকেন্দ্রের ঠিকানা, ভোট দেওয়ার সময়সহ কার্ড পাঠিয়ে দেয়।

জরিপ বলছে, এবারও কোনো একক দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না। জার্মানিতে আবার জোট সরকার হতে যাচ্ছে।

নির্বাচনে সহায়তার জন্য এই প্রশাসন জার্মানিজুড়ে ছয় লাখ স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ দিয়েছে। অবৈতনিক বা নামমাত্র সম্মানীপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবীরা নির্বাচনের দিন সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভোটাররা তাঁদের কাছে পাঠানো নির্বাচনী কার্ড ও পরিচয়পত্র নির্বাচনী স্বেচ্ছাসেবীদের দেখিয়ে ভোট দিতে পারছেন। ভোটাররা প্রত্যেকে দুটি ভোট দিতে পারবেন। একটি ভোট প্রার্থীকে, অপরটি দলকে।

জার্মানির নির্বাচন ঘিরে রাস্তার ধারে নানা দলের পোস্টার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ