খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ৬ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল। এছাড়া তারা মৌখিকভাবে কুয়েটের সার্বিক পরিস্থিতি প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন। 

রোববার বেলা সাড়ে ৩টায় তারা রাজধানীর ‘যমুনায়’ গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি দেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, দুটি বাসে করে তারা দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছান। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে যান। শিক্ষার্থীরা তার কাছে উপাচার্য, উপ-উপাচার্যকে অপসারণ এবং নতুন নিয়োগ দেওয়াসহ ৬ দফা দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দেন। এছাড়া মৌখিকভাবে কুয়েটের সংঘর্ষ পরবর্তী সার্বিক অবস্থা তাকে অবহিত করেন। 

তারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা বিষয়টি দেখবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন। এখন শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করবেন। আপাতত তাদের আর কোনো কর্মসূচি নেই। তাদের বিশ্বাস, সরকার নিশ্চয়ই সংকটের সমাধান করবে।

এর আগে সকাল ৮টায় কুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৮০ জন দুটি বাসে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।

যাত্রা শুরুর আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসে তারা নিরাপত্তাহীন। এজন্য তাদের দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে যাবেন। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ফিরবেন না তারা। অনলাইনে কার্যক্রম চলবে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত, কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম, পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে বিরোধের জের ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছিলেন। এরপর থেকে ৬ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি অনুষদের যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অনুষদটির শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে চলমান যৌক্তিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের শিক্ষার্থীদের কতিপয় বিপথগামী বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই অনুষদের শিক্ষার্থীরা বিকেলে অনুষদীয় চত্বরে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা করেন।

এর আগে, বেলা ১১টার দিকে বাকৃবি শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাহা’র নেতৃবৃন্দ ও অনুষদের ডিনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার অভিযোগ তুলে মতামত দেন।

আরো পড়ুন:

গোবিপ্রবিতে ২ বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, প্রক্টর-প্রাধ্যক্ষসহ আহত ১৫

ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষক ও অফিস সহায়ককে বিদায়

আলোচনা সভা শেষে বাহা ও ওই অনুষদ একটি যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন। যেখানে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। এই কার্যক্রমে অনুষদের সব শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন ও হেয় করতে একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপচেষ্টায় লিপ্ত।

বিবৃতিতে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানানো হয় এবং প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাগুলো সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই বিবৃতির তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের সমাবেশে পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা সর্বসম্মতভাবে বাংলাদেশ অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে বয়কটের ঘোষণা দিচ্ছে। আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী শিবলী বলেন, “আমরা পশুপালন অনুষদের বিভিন্ন লেভেলের কয়েক’শ গত ১ সপ্তাহ ধরে আমাদের যৌক্তিক দাবি কম্বাইন্ড ডিগ্রি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করলে যারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপদগামী বলে সম্বোধন করছেন, তাদের আমরা এ অনুষদ চত্বর থেকে লালকার্ড দেখাই। কোনো বিবৃতি বা হুমকি দিয়ে এই যৌক্তিক আন্দোলনকে থামানো যাবে না।”

আন্দোলনরত আরেক শিক্ষার্থী হিমেল বলেন, “বাকৃবিতে চলমান যৌক্তিক কম্বাইন্ড ডিগ্রি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাহা’র মহাসচিব ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন। আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও, তার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিপথগামী বলা হয়। এছাড়া আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনকে কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর আন্দোলন হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা করা হয়, যা মিথ্যা, অপমানজনক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।”

ঢাকা/লিখন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যৌথ বিবৃতি প্রত্যাখান করে বাহা’কে বয়কট ঘোষণা শিক্ষার্থীদের