বাংলাদেশে ‘উগ্র বামপন্থিদের’ ভোট দিতে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া
Published: 23rd, February 2025 GMT
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবেশ উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডির ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া নিয়ে ফের মুখ খুললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছিল যেন তারা ‘উগ্র বাম কমিউনিস্টদের’ ভোট দিতে পারে।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওয়াশিংটনে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ট্রাম্প।
এর আগে, গত শুক্রবার ওয়াশিংটনে গভর্নরদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, “২৯ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিকাঠামো শক্তিশালী করতে এমন একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে, যার নাম কেউই শোনেনি। ২৯ মিলিয়ন ডলার! তারা চেক পেয়েছে। কল্পনা করতে পারেন?”
আরো পড়ুন:
সরকারি কর্মচারীদের কাজের হিসাব চাইলেন মাস্ক, না দিলেই বিদায়
বাংলাদেশে পাঠানো ২৯ মিলিয়ন ডলার গিয়েছিল দুই কর্মীর প্রতিষ্ঠানে: ট্রাম্প
সমালোচনা করে ট্রাম্প আরো বলেন, “তোমার একটা ছোট প্রতিষ্ঠান আছে, এখান থেকে ১০ হাজার ডলার, ওখান থেকে ১০ হাজার ডলার করে পায়, আর তারপর হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের সরকার থেকে ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়ে যায়! ওই প্রতিষ্ঠানে মাত্র দু’জন লোক কাজ করে। দু’জন! আমি মনে করি, তারা খুব খুশি। তারা এখন অনেক ধনী হয়ে গেছে। শিগগিরই তারা একটা নামকরা বিজনেস ম্যাগাজিনের কভারে চলে আসবে- মহাপ্রতারক হিসেবে!”
শনিবার সিপিএসি সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউএসএআইডির তহবিল নিয়ে আবারো সমালোচনা করেন।তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডল শক্তিশালীকরণের বিষয়টি ব্যবহার করা হয়েছে উগ্র বামপন্থি কমিউনিস্টদের ক্ষমতায় আনতে। বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার গেছে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলকে শক্তিশালীকরণ ও তাদের সহায়তা করতে; যাতে তারা উগ্র বাম কমিউনিস্টদের ভোট দিতে পারেন।”
বাংলাদেশ ছাড়াও ট্রাম্প ভারতে খরচ করা ১৮ মিলিয়ন ডলারেরও সমালোচনা করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারতে নির্বাচনের জন্য ১৮ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হয়। কেন? আমাদের নিজেস্ব নির্বাচনে সহায়তা করা উচিত, তাদের নয়।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় কমানো এবং কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য ইলন মাস্কের নেতৃত্বে নতুন দপ্তর ‘ডিওজিই’ চালু করেন ট্রাম্প। এই দপ্তরের সুপারিশে সম্প্রতি ১১টি দেশে ইউএসএআইডির মোট ১৭টি মার্কিন সাহায্য প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলারের রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালীকরণের প্রকল্প ও ভারতে ২১ মিলিয়ন ডলারের ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর প্রকল্পও রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’