আওয়ামী লীগের বিচার শুরুর আগে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটোয়ারী। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারের প্রথম কাজ আওয়ামী লীগের বিচার করা। অন্তর্বর্তী সরকার তাদের বিচার প্রশ্নে নীরবতা দেখালে, জনগণ রাজপথে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবে।

গতকাল রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত ‘জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন : জুলাই হত্যাকাণ্ডের ব্যবচ্ছেদ, দায় ও বিচার’ শীর্ষক সভায় এসব কথা বলেন নাসিরুদ্দীন।

সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ওনাদের চামড়া গন্ডারের মতো। ওনাদের ছয় মাস আগে কিছু বলা হলে, তা দেখা যায় ছয় মাস পর। চামড়াগুলো একটু পাতলা করুন। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সামনে অনেক বড় বড় কথা বলতেন। কিন্তু যখনই তিনি চেয়ারে বসে গেছেন, গদি অনেক মোটা হয়ে গেছে। জনতা আপনাদের যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা পালনে বাধ্য। এখানে অবাধ্য হওয়ার সুযোগ নেই।’

নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতা করে পরবর্তী সরকারে আসার পথ উপদেষ্টারা পরিষ্কার করবেন, এমন সুযোগ আর দেওয়া হবে না। কারণ, আপনারা যে চেয়ারে বসেছেন, সেটি শহীদদের রক্ত মাড়িয়ে বসেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলি না বাংলাদেশে নির্বাচন হবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিচার শুরু এবং কিছু প্রক্রিয়া শুরুর আগ পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, আওয়ামী লীগ ও খুনি হাসিনার বিষয় সুরাহা ছাড়া নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নিলে, তা সুষ্ঠু হবে না।’

নাগরিক কমিটির নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার সেলের সম্পাদক শফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন ব্যারিস্টার সারা হোসেন, নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সদস্য অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম মুসা, অ্যাডভোকেট হুমায়রা নূর প্রমুখ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ব চ র ব যবস থ কম ট র আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ