কুড়িগ্রামে নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা
Published: 24th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। গতকাল রোববার চিলমারী মডেল থানায় মামলাটি করেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। এ ছাড়া নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৯৫ (ক)–এর ধারায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানারও অভিযোগ করা হয়েছে।
নাহিদ হাসান (নলেজ) চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য।মামলার বাদী গোলাম মোস্তফার বাড়ি উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের ছোটকুষ্টারি গ্রামে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি রাখাল রাহাকে নিয়ে তৌহিদী মুসলিম জনতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর পক্ষ নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন নাহিদ হাসান। সেখানে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.
এদিকে নাহিদ হাসান তাঁর ফেসবুক পোস্টটি সরিয়ে নিলেও তৌহিদী মুসলিম জনতার ব্যানারে দুই দিন ধরে চিলমারী, উলিপুর ও কুড়িগ্রাম জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ জনসমাবেশ হয়েছে। সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নিয়েছেন। গতকাল চিলমারীতে বিক্ষোভ মিছিল শেষে নাহিদ হাসানকে আজ সোমবার বেলা দুইটার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে নাহিদ হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ফেসবুকে এক পোস্টে নাহিদ হাসান নিজেকে ‘বিশ্বাসী মুসলিম’ দাবি করে লিখেছেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আল্লাহ ও প্রিয় রাসুলের বিরুদ্ধে কোথাও কিছু লিখেছি—এটা কেউ দেখাতে পারবে না। এমন কিছু কখনো বলিনি, লিখিনি, তাই কেউ দেখাতেও পারবে না। গণ-অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করা, প্রিয় মাতৃভূমিকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া একটি পক্ষের আইন হাতে তুলে নিতে চাওয়ার বিপক্ষে আমি মত দিয়েছি। এটা কি অপরাধ হতে পারে? তবু সেই পোস্ট আমি ডিলিট করেছি।’
চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশাহেদ খান আজ সকালে বলেন, ‘নাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা ডিজিটাল ও অ্যানালগ—দুই পদ্ধতিতে নাহিদ হাসানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশা করি, তাঁকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের হাতে তুলে দিতে পারব।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত ও নিপীড়ন বন্ধের দাবি সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের
গণতান্ত্রিক শ্রম আইন, শ্রমিকের সামাজিক সুরক্ষা, ন্যায্য মজুরি, অবাধ ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার নিশ্চিত ও শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। একই সঙ্গে তারা বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেপ্তারকৃত শ্রমিকনেতাদের মুক্তির দাবিও জানায়।
মে দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়।
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক জুলফিকার আলী, আইনবিষয়ক সম্পাদক বিমল চন্দ্র সাহা, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, নির্বাহী সদস্য ও বোম্বে সুইটস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রতন মিয়া প্রমুখ।
সমাবেশে নেতারা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন করার চেষ্টার অপরাধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দিয়ে গার্মেন্টস উইংয়ের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, রবিনটেক্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ৭ জনকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে এবং রিকশা শ্রমিকদের রুটি–রুজির আন্দোলনে সংহতি জানানোর অপরাধে চট্টগ্রামে রিকশা সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি আল কাদেরি জয়, মিরাজ উদ্দিন ও রোকন উদ্দিনকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। অথচ সরকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তারা শ্রমক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক শ্রমমান বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় নেতারা শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হচ্ছে কি না, তা জানতে চান। তাঁরা বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার চর্চায় বাধা দেওয়া বন্ধ না হলে, শ্রমিকের ওপর নিপীড়ন বন্ধ না হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র পরিচালনা বা বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রতারণা হিসেবে পরিগণিত হবে।
মে দিবসের ইতিহাস তুলে ধরে নেতারা আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শ্রমজীবী মানুষের ৮৫ শতাংশ শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শ্রম খাতের দুর্দশার যে ভয়ানক চিত্র ফুটে উঠেছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতা–পরবতী প্রতিটি সরকার শ্রম শোষণকে তীব্র থেকে তীব্রতর করার ক্ষেত্র তৈরি করেছে।
এ সময় গ্রেপ্তার সব শ্রমিকের মুক্তি, শ্রমিক নিপীড়ন বন্ধ এবং মে দিবসের প্রকৃত চেতনায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা।