দুঃসাহস নিয়ে নতুন পদক্ষেপ নিয়েছি: শামীম জামান
Published: 24th, February 2025 GMT
টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম জামান। অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন তিনি। এখন অভিনয়ের চেয়ে তাঁকে পরিচালনায় বেশি পাওয়া যায়। সম্প্রতি নিজের কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।
আপনাকে অভিনয়ে দর্শক কম পাচ্ছে, কারণ কি?
হ্যাঁ, বর্তমানে ক্যামেরার পেছনে সময় বেশি দিচ্ছি। এজন্য অভিনয় কম করছি। আমার নিজের নাটকে আমি বেশি অভিনয় করি। এখন ক্যামেরার পেছনে কাজ করার কারণে অভিনয়ে খুব একটা সময় দিতে পারছি না।
বাইরের গল্পে অভিনয়ের জন্য ডাক আসে না?
আসে না বললে ভুল হবে। অভিনয় ও নির্মাণ দুইটা দুই ধরণের। কিন্তু এখন নির্মাণ এক ধরণের নেশা হয়ে গেছে। আমি এখন পরিচালনা নিয়ে আছি বলে এখন অভিনয়ের জন্য অনেকে ডাকেও না।
সম্প্রতি মোশাররফ করিম ও আ খ ম হাসানের সঙ্গে আপনার ছবি নিয়ে আলোচনা.
..
আমরা তিনজন মিলে একটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছি। গল্পটার নাম ‘শাদী মোবারক’। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি পরিচালনাও করেছি। অনেকদিন পর এক হয়ে একটা সিরিজ করছি। গল্পটা দারুণ। অনেকদিন পর দর্শক একটা মজার নাটক পাবে।
অভিনেতা চঞ্চল, মোশাররফ, হাসান ও আপনাকে এখন নিয়মিত পাওয়া যায় না কেন?
সবাই এখন অনেক ব্যস্ত। বলতে গেলে সবাই বড় শিল্পী। সবাইকে একসঙ্গে করা অনেক কঠিন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাজেট। এখন নাটকের বাজেট যেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে এতো বড় বড় শিল্পীকে নিয়ে কাজ করা কঠিন। তারপরও সেই সাহস আমি দেখিয়েছি। মোশাররফ করিম, আ. খ. ম. হাসানকে সঙ্গে নিয়ে দুঃসাহসের পদক্ষেপটা আমি নিয়েছি।
আবার কবে আপনাদের একসঙ্গে পাওয়া যাবে?
সবাই তো আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। ছোটবেলার বন্ধু সবাই। এক সময় প্রযোজনা করেছি। যেমন ‘সার্ভিস হোল্ডার’, ‘গরু চোর’, ‘পত্র মিতালি’ ও ‘জামাই মেলা’সহ অনেক নাটক করেছি। কারণ, তখন বাজেট ভালো ছিল সেই সঙ্গে শিল্পীদের পারিশ্রমিকও কম ছিল। এখন চাইলেও সেটা কঠিন। তবে আমার ইচ্ছে আছে সাবাইকে নিয়ে আরও কাজ করার। সামনে আমরা এক হয়ে কাজ হবে।
বর্তমানে নাটকের মান নিয়ে মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। আপনি কী বলবেন?
আমার মনে হয় টেলিভিশন নাটকের অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। অনেক ভালো ভালো নাটক নির্মাণ হচ্ছে। দর্শকের পছন্দের ভিন্নতানুযায়ী সিরিয়াস ও কমেডি নাটক তৈরি হচ্ছে। তবে কিছু ক্রুটির কারণে বিভিন্ন মহলে কথা উঠছে এটা সত্য। ভাইরাল বা অতিরিক্ত ভিউয়ের জন্য এমন কিছু বিষয় সামনে আসছে যা কখনোই কাম্য নয়। এতে আমাদের ইন্ডাট্রির ক্ষতি হয়। তার চেয়ে বড় কথা সামাজিকভাবে আমরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছি। আমি বলবো, নিজেদের সংস্কৃতির কথা চিন্তা করে সবাই যেন সুস্থ বিনোদন দেওয়ার লক্ষে কাজ করেন।
সিনিয়র শিল্পীরা কী এখন সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছেন?
এটা নিয়ে বলা মুশকিল। কারণ, বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিচালকের ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে যারা গল্প লেখেন তাদের ওপরও কিছু দায়িত্ব থাকে। বাজেটের সঙ্গে আবার সিনিয়রদের পারিশ্রমিকের দিকেও তাকাতে হয়। তবে আমি চেষ্টা করি সিনিয়রদের নিয়ে কাজ করতে। তাতে একটি নাটকের মান উচ্চতর হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
আগামী ২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। সভায় অনুমোদন হলে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ শুক্রবার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের সভার এ তারিখ নির্ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ পর্ষদের বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে বিশেষত টাকা–ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি ডলার বাড়তি ঋণ চেয়েছে। বাড়তি ঋণ যোগ হলে মোট দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। বিবৃতিতে বিনিময় হার, রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।