টিভি নাটকের জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম জামান। অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত নাটক পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন তিনি। এখন অভিনয়ের চেয়ে তাঁকে পরিচালনায় বেশি পাওয়া যায়। সম্প্রতি নিজের কাজসহ নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে।

আপনাকে অভিনয়ে দর্শক কম পাচ্ছে, কারণ কি?
হ্যাঁ, বর্তমানে ক্যামেরার পেছনে সময় বেশি দিচ্ছি। এজন্য অভিনয় কম করছি। আমার নিজের নাটকে আমি বেশি অভিনয় করি। এখন ক্যামেরার পেছনে কাজ করার কারণে অভিনয়ে খুব একটা সময় দিতে পারছি না।

বাইরের গল্পে অভিনয়ের জন্য ডাক আসে না?
আসে না বললে ভুল হবে। অভিনয় ও নির্মাণ দুইটা দুই ধরণের। কিন্তু এখন নির্মাণ এক ধরণের নেশা হয়ে গেছে। আমি এখন পরিচালনা নিয়ে আছি বলে এখন অভিনয়ের জন্য অনেকে ডাকেও না।

সম্প্রতি মোশাররফ করিম ও আ খ ম হাসানের সঙ্গে আপনার ছবি নিয়ে আলোচনা.

..
আমরা তিনজন মিলে একটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেছি। গল্পটার নাম ‘শাদী মোবারক’। অভিনয়ের পাশাপাশি এটি পরিচালনাও করেছি। অনেকদিন পর এক হয়ে একটা সিরিজ করছি। গল্পটা দারুণ। অনেকদিন পর দর্শক একটা মজার নাটক পাবে।

অভিনেতা চঞ্চল, মোশাররফ, হাসান ও আপনাকে এখন নিয়মিত পাওয়া যায় না কেন?
সবাই এখন অনেক ব্যস্ত। বলতে গেলে সবাই বড় শিল্পী। সবাইকে একসঙ্গে করা অনেক কঠিন। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো বাজেট। এখন নাটকের বাজেট যেখানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে এতো বড় বড় শিল্পীকে নিয়ে কাজ করা কঠিন। তারপরও সেই সাহস আমি দেখিয়েছি। মোশাররফ করিম, আ. খ. ম. হাসানকে সঙ্গে নিয়ে দুঃসাহসের পদক্ষেপটা আমি নিয়েছি।

আবার কবে আপনাদের একসঙ্গে পাওয়া যাবে?
সবাই তো আমরা একসঙ্গে বড় হয়েছি। ছোটবেলার বন্ধু সবাই। এক সময় প্রযোজনা করেছি। যেমন ‘সার্ভিস হোল্ডার’, ‘গরু চোর’, ‘পত্র মিতালি’ ও ‘জামাই মেলা’সহ অনেক নাটক করেছি। কারণ, তখন বাজেট ভালো ছিল সেই সঙ্গে শিল্পীদের পারিশ্রমিকও কম ছিল। এখন চাইলেও সেটা কঠিন। তবে আমার ইচ্ছে আছে সাবাইকে নিয়ে আরও কাজ করার। সামনে আমরা এক হয়ে কাজ হবে।

বর্তমানে নাটকের মান নিয়ে মাঝে মধ্যেই প্রশ্ন উঠছে। আপনি কী বলবেন?
আমার মনে হয় টেলিভিশন নাটকের অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। অনেক ভালো ভালো নাটক নির্মাণ হচ্ছে।  দর্শকের পছন্দের ভিন্নতানুযায়ী সিরিয়াস ও কমেডি নাটক তৈরি হচ্ছে। তবে কিছু ক্রুটির কারণে বিভিন্ন মহলে কথা উঠছে এটা সত্য। ভাইরাল বা অতিরিক্ত ভিউয়ের জন্য এমন কিছু বিষয় সামনে আসছে যা কখনোই কাম্য নয়। এতে আমাদের ইন্ডাট্রির ক্ষতি হয়। তার চেয়ে বড় কথা সামাজিকভাবে আমরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছি। আমি বলবো, নিজেদের সংস্কৃতির কথা চিন্তা করে সবাই যেন সুস্থ বিনোদন দেওয়ার লক্ষে কাজ করেন।

সিনিয়র শিল্পীরা কী এখন সঠিক মূল্যায়ন পাচ্ছেন?
এটা নিয়ে বলা মুশকিল। কারণ, বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিচালকের ওপর নির্ভর করে। এক্ষেত্রে যারা গল্প লেখেন তাদের ওপরও কিছু দায়িত্ব থাকে। বাজেটের সঙ্গে আবার সিনিয়রদের পারিশ্রমিকের দিকেও তাকাতে হয়। তবে আমি চেষ্টা করি সিনিয়রদের নিয়ে কাজ করতে। তাতে একটি নাটকের মান উচ্চতর হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।

আরো পড়ুন:

নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”

খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”

পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”

প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”

তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”

গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।

শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান, খোঁচা দিলেন ট্রাম্প
  • কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডোর ডিনার, গুঞ্জন
  • শিক্ষার্থী সাজিদ স্মরণে ইবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
  • ৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী