দেশে নির্বাচিত সরকার ও শৃঙ্খলা ফিরে আসার আগপর্যন্ত সেনাবাহিনীকে ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে। পেশাদারত্বের মাধ্যমে এ কাজ করতে হবে।

আজ সোমবার সাভার সেনানিবাসে ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফায়ারিং প্রতিযোগিতা-২০২৫’–এর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। অনুষ্ঠানে তিনি ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা মনে করেছিলাম তাড়াতাড়ি সেনানিবাসে ফেরত আসতে পারব। কিন্তু কাজটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আমি জানি যে বহুদিন ধরে এই কাজটা করে যাচ্ছি। ধৈর্য রাখতে হবে এবং পেশাদারত্বের মাধ্যমে কাজটা করে যেতে হবে। দেশ ও জাতির জন্য এই সার্ভিসটা (সেবা) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

‘দেশ ও জাতির জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। যত দিন না আমরা একটা নির্বাচিত সরকার না পেয়ে যাই, দেশ একটা শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যে আসে, তত দিন পর্যন্ত এই কাজটা ধৈর্যের সঙ্গে করে যেতে হবে। কোনো উচ্ছৃঙ্খল কাজ করা যাবে না। এদিকে আমাদের নজর রাখতে হবে। বল প্রয়োগ করা যাবে না। মাঝে মাঝে এ কাজগুলো করতে যেয়ে কিছু বল প্রয়োগ হয়ে যায়।.

..বল প্রয়োগ করতে গেলেও একেবারে প্রপোরসনেট (যতটুকু না করলেই নয়) যেন হয়। যত কম বল প্রয়োগের মাধ্যমে কাজগুলো করা যায়, ততই ভালো। ইনশা আল্লাহ আমরা যদি সবাই একসঙ্গে কাজ করি, আমরা দেশের শান্তি–শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারব এবং একটা সুন্দর দেশ পাব—ইনশা আল্লাহ’, যোগ করেন সেনাপ্রধান।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, ১৮ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনীর সদর দপ্তর ৯ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় এই ফায়ারিং প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেনাবাহিনীর সব ফরমেশন, লজিস্টিকস এরিয়া, ৫টি স্বতন্ত্র ব্রিগেড ও প্যারা কমান্ডো ব্রিগেডসহ মোট ১৭টি দল অংশ নেয়। ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় ৩৩ পদাতিক ডিভিশন চ্যাম্পিয়ন ও ৭ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেড রানারআপ হয়।

আইএসপিআর জানায়, ফায়ারিং প্রতিযোগিতায় ১১ পদাতিক ডিভিশনের সৈনিক মো. রাজু সরদার শ্রেষ্ঠ ফায়ারার, ৬ স্বতন্ত্র এডিএ ব্রিগেডের সৈনিক (ওসিইউ) মো. জুবায়ের আলী দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ ফায়ারার ও ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট সামিয়া রহমান শ্রেষ্ঠ নারী ফায়ারার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

সিএএস ট্রফি ফায়ারিং প্রতিযোগিতা–২০২৪–এর মাইনর ইউনিটগুলোর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় অ্যাডহক ৪৭ মর্টার রেজিমেন্ট আর্টিলারি, রানারআপ হয় সদর দপ্তর ১০৫ পদাতিক ব্রিগেড এবং মেজর ইউনিটগুলোর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় ১ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, রানারআপ হয় ২৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। ব্যক্তিগতভাবে ছয়জন শ্রেষ্ঠ ফায়ারার হন। সেনাপ্রধান সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে সেনা কর্মকর্তা, সেনাসদস্য ও গণমাধ্যম ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি

সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।

ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।

আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।

নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।

আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।

আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?

সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিটিআরসির খসড়া নীতিমালা বাস্তবায়ন হলে ইন্টারনেটের দাম বাড়বে
  • সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি