রাত ৩টা, গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন চারপাশ। হঠাৎই ডাকতে শুরু করে প্রতিবেশীর মোরগ। এভাবে প্রতিদিন ঠিক রাত ৩টায় মোরগ চিৎকার করে ডাকাডাকি শুরু করে, ঘুম ভেঙে যায় রাধাকৃষ্ণ কুরুপের।

রাধাকৃষ্ণ কুরুপের বয়স হয়েছে। এই বয়সে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে ঘুম খুব জরুরি। কিন্তু মোরগের ডাকে প্রতিরাতে ঘুম ভেঙে যায় এই বৃদ্ধের। একসময় অতিষ্ঠ হয়ে তিনি প্রতিবেশীর মোরগের নামে উপবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নালিশ করে বসেন।

রাধাকৃষ্ণের বাড়ি ভারতের দক্ষিণের রাজ্য কেরালায়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, মোরগের ডাকাডাকিতে তিনি ঘুমাতে পারছেন না। এর প্রভাব তাঁর স্বাস্থ্যের ওপর পড়ছে।

রাধাকৃষ্ণের দাবি, মোরগ ঠিক রাত ৩টা থেকে ক্রমাগত ডাকতে শুরু করে। যে কারণে তাঁর পক্ষে বিশ্রাম নেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তিনি এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছিলেন।

এ কারণে প্রতিবেশী অনিল কুমারের মোরগের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে নালিশ জানাতে তিনি স্থানীয় রেভিনিউ ডিভিশনাল অফিসে (আরডিও) হাজির হন। তাঁর অভিযোগ, অনিলের মোরগ প্রতিরাতে তাঁর ঘুম নষ্ট করছে।

রাধাকৃষ্ণের অভিযোগ গুরুত্বের সঙ্গে নেয় আরডিও কর্তৃপক্ষ। প্রথমে তারা রাধাকৃষ্ণ ও অনিলকে তাদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠায়। পরে তদন্তে নেমে আরডিও কর্তৃপক্ষ দেখতে পায়, মোরগের ক্রমাগত ডেকে যাওয়ার শব্দ সত্যি বিরক্তিকর।

তদন্তে নেমে কর্তৃপক্ষ আরও একটি বিষয় লক্ষ করে। তারা দেখতে পায়, রাধাকৃষ্ণের প্রতিবেশী অনিলের বাড়ির ওপরের তলায় মোরগের খাঁচা রাখা। ওপরের তলায় থাকায় মোরগ যখন ডাকে, আশপাশ থেকে শব্দ আরও বেশি জোরে শোনা যায়।

এ সমস্যার সমাধান করতে আরডিও কর্তৃপক্ষ মোরগের মালিককে ১৪ দিনের মধ্যে সেটির খাঁচা সরিয়ে ফেলতে বলেছে। বলেছে, বাড়ির দক্ষিণ প্রান্তের কোথাও খাঁচা রাখতে।

রাধাকৃষ্ণের এই অভিযোগ দায়ের পোষা প্রাণী ও বাড়িতে পশুপাখি পালন নিয়ে প্রতিবেশীদের মধ্যে সৌহার্দ্য নষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে আলোচনা উসকে দিয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ