চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন দুটি আবাসিক ছাত্র হলে আসন বরাদ্দের জন্য আবেদন গ্রহণ করেছে প্রশাসন। তবে পূর্ব ঘোষিত নির্দিষ্ট তারিখে ফলাফল প্রকাশ না করায় চরম বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নবনির্মিত শহীদ ফরহাদ হোসেন হল (পূর্বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল) ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলে আসন বরাদ্দের ফলাফল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তা প্রকাশিত হয়নি। 

এদিকে, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল থাকায় সিট পেতে পারেন এমন আশায় অনেক শিক্ষার্থী আগামী মাস থেকে বাসা-কটেজ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে এ মাসের মধ্যে আসন বরাদ্দের ফলাফল না দিলে আগামী মাসে  তারা কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তরা। এ মাসের মধ্যেই আসন বরাদ্দের ফলাফল প্রকাশ করার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল রাকিব ভূইয়ান বলেন, “প্রশাসন বলেছিল ২২ ফেব্রুয়ারি ফলাফল দেবে। আমি ইতোমধ্যে কটেজ ছেড়ে দিয়েছি। এখনো আসন বরাদ্দের ফলাফল দেয়নি। এখন ১ মার্চ থেকে আমি কোথায় থাকব?”

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত ২২ ফেব্রুয়ারি হল দুটির সিট বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। তা না দিয়ে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এখনো আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কত তারিখ দেবে, সে বিষয়েও কোন পরিষ্কার তথ্য প্রশাসন ও আইসিটি সেল প্রদান করেনি। ফলে শিক্ষার্থীরা আবারো দোটানার মধ্যে পড়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “যাদের রেজাল্ট ভালো, এ রকম অনেক শিক্ষার্থী হলে সিট পাওয়ার আশায় ইতোমধ্যে বাসা-কটেজ ছেড়ে দিয়েছে। এ মাসের মধ্যে ফলাফল না দিলে ১ মার্চ থেকে তারা কোথায় থাকবে?”

এদিকে, আবেদনের সময় বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল বেশকিছু শিক্ষার্থী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বলা হয়, সমস্যা হয়েছে এমন সব আবেদন বাতিল অথবা সমাধান না করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, “আবেদনের সময় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ৪০০টির বেশি ইমেইল জমা পড়েছে। সেগুলো সমাধানের কাজ চলছে। ফলাফল কখন দেওয়া হবে, তা বলা যাচ্ছে না। কাজ শেষ হলে ফলাফল দেওয়া হবে।”

এর আগে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ স্বাক্ষরিত আসন বরাদ্দের একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে নবনির্মিত শহীদ ফরহাদ হোসেন হল (পূর্বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল) ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলে গত ১২-১৪ ফেব্রুয়ারি আবেদনের আহ্বান জানানো হয়। একইসঙ্গে ২২ ফেব্রুয়ারি আসন বরাদ্দপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলেও জানানো হয়।

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২২ ফ ব র ফল ফল দ

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় ফুটপাত দখল করে দোকানের পসরা, কোটি টাকার চাঁদাবাজির অভিযোগ

বগুড়া শহরের সার্কিট হাউস-কালীবাড়ি মোড় সড়কে সারি সারি ভ্যানে হরেক খাবারের পসরা। পিৎজা, বার্গার, স্যান্ডউইচ, চিকেন শর্মা, মিটবক্স—সবই মিলছে রাস্তার পাশের এসব দোকানে। ক্রেতারা মূলত কিশোর ও তরুণ-তরুণী।

দোকানগুলোতে নেই কোনো আলাদা শেফ। বিক্রেতারাই নিজের হাতে খাবার তৈরি করছেন, পরিবেশনও করছেন। কারও হাতে গ্লাভস নেই, শরীরে নেই অ্যাপ্রোন। বিকেল গড়াতেই এসব ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকানে ভিড় জমছে। কোর্ট হাউস স্ট্রিটের পাশেই আছে ‘পিজ অ্যান্ড বার্গ’, ‘পদ্মা ফুডস’ ও ‘হিলিয়াম রেস্টুরেন্ট’-এর মতো নামীদামি খাবারের দোকান। একসময় সন্ধ্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্রেতার ঢল নামত। এখন সে ভিড় চলে গেছে রাস্তার পাশে বসা দোকানগুলোর দিকে।

পদ্মা ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জলেশ্বরীতলা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমদাদ আহমেদ বলেন, ‘অভিজাত এ এলাকায় একটি খাবারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। অন্তত ১৪টি প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ নিতে হয়। এসব নবায়নে প্রতিবছর মোটা অঙ্কের টাকা গুনতে হয়। ভবন ভাড়া, দামি শেফ ও কর্মচারীর বেতন—সব মিলিয়ে খরচ বিপুল। অথচ রাস্তার পাশে ভ্যানে বসা দোকানে বিনিয়োগ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। কোনো সনদ নেই, দোকানভাড়া নেই, কর্মচারীও নেই। শুধু দামে সস্তা বলে ক্রেতারা ঝুঁকছেন ওদিকে। সড়ক দখল করে দোকান বসায় যানজটও বাড়ছে। অভিযোগ করেও প্রশাসনের কাছ থেকে কোনো প্রতিকার মিলছে না।

বগুড়া হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম দেলোয়ার হোসেন বলেন, জলেশ্বরীতলা অভিজাত এলাকা। এখানে দোকান দিতে বিপুল বিনিয়োগ লাগে। নামীদামি দোকানে একটি পিৎজার দাম ৫০০ টাকা হলে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকলেও ক্রেতারা সস্তা পেয়ে সেখান থেকেই কিনছেন। এতে অভিজাত রেস্টুরেন্টগুলো লোকসানে পড়ছে। এর সঙ্গে তিনি যুক্ত করেন, ‘আমরা স্ট্রিট ফুড ব্যবসার বিরোধী নই। তবে সেটা অভিজাত এলাকা থেকে সরিয়ে পৌর পার্ক, অ্যাডওয়ার্ড পার্কসংলগ্ন সড়ক কিংবা সরকারি আজিজুল হক কলেজের পাশের এলাকায় নিতে প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।’

সড়কজুড়ে দোকান, ভোগান্তিতে শহরবাসী

সম্প্রতি দেখা যায়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে সড়কের এক পাশে ২০-২৫টি ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান বসেছে। অন্য পাশে ফলের দোকান। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আদালত প্রাঙ্গণের সামনে যানজট লেগেই থাকে।

এ ছাড়া পৌরসভা লেন, জেলা খানা মোড়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল বাকী সড়ক, মহিলা ক্লাব মোড়, শহীদ আবদুল জব্বার সড়ক, সাতমাথা-সার্কিট হাউস সড়কসহ শহরের নানা সড়কেই বসছে ফুচকা, চটপটি, জুস, ফাস্ট ফুড ও ফলের দোকান।

সাতমাথায় প্রতিদিন বসছে অর্ধশতাধিক দোকান। জিলা স্কুলের সামনে চটপটি ও কাবাবের দোকানগুলোর চেয়ার বসানো হয়েছে ফুটপাত দখল করে। কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, থানা মোড়, বড়গোলা, দত্তবাড়ি, কালিতলা—সবখানেই দুই পাশে দোকান।

রাস্তা দখল করে দোকান বসানোয় বেশির ভাগ সময় যানজটে থাকে শহরে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ