চবিতে হলে আসন বরাদ্দে বিলম্ব, বিপাকে শিক্ষার্থীরা
Published: 25th, February 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন দুটি আবাসিক ছাত্র হলে আসন বরাদ্দের জন্য আবেদন গ্রহণ করেছে প্রশাসন। তবে পূর্ব ঘোষিত নির্দিষ্ট তারিখে ফলাফল প্রকাশ না করায় চরম বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) নবনির্মিত শহীদ ফরহাদ হোসেন হল (পূর্বনাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল) ও অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলে আসন বরাদ্দের ফলাফল দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো তা প্রকাশিত হয়নি।
এদিকে, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল থাকায় সিট পেতে পারেন এমন আশায় অনেক শিক্ষার্থী আগামী মাস থেকে বাসা-কটেজ ছেড়ে দিয়েছেন। ফলে এ মাসের মধ্যে আসন বরাদ্দের ফলাফল না দিলে আগামী মাসে তারা কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তরা। এ মাসের মধ্যেই আসন বরাদ্দের ফলাফল প্রকাশ করার জোর দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আব্দুল রাকিব ভূইয়ান বলেন, “প্রশাসন বলেছিল ২২ ফেব্রুয়ারি ফলাফল দেবে। আমি ইতোমধ্যে কটেজ ছেড়ে দিয়েছি। এখনো আসন বরাদ্দের ফলাফল দেয়নি। এখন ১ মার্চ থেকে আমি কোথায় থাকব?”
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “গত ২২ ফেব্রুয়ারি হল দুটির সিট বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। তা না দিয়ে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে এখনো আবেদন ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কত তারিখ দেবে, সে বিষয়েও কোন পরিষ্কার তথ্য প্রশাসন ও আইসিটি সেল প্রদান করেনি। ফলে শিক্ষার্থীরা আবারো দোটানার মধ্যে পড়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “যাদের রেজাল্ট ভালো, এ রকম অনেক শিক্ষার্থী হলে সিট পাওয়ার আশায় ইতোমধ্যে বাসা-কটেজ ছেড়ে দিয়েছে। এ মাসের মধ্যে ফলাফল না দিলে ১ মার্চ থেকে তারা কোথায় থাকবে?”
এদিকে, আবেদনের সময় বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিল বেশকিছু শিক্ষার্থী। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে বলা হয়, সমস্যা হয়েছে এমন সব আবেদন বাতিল অথবা সমাধান না করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হবে না।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক সাইদুর রহমান চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, “আবেদনের সময় বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ৪০০টির বেশি ইমেইল জমা পড়েছে। সেগুলো সমাধানের কাজ চলছে। ফলাফল কখন দেওয়া হবে, তা বলা যাচ্ছে না। কাজ শেষ হলে ফলাফল দেওয়া হবে।”
এর আগে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২২ ফ ব র ফল ফল দ
এছাড়াও পড়ুন:
সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি
টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।
আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’
মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’
২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’
মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।