চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার জন্য অপয়া বৃষ্টি
Published: 25th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ মানেই যেন বৃষ্টি। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি আসরসহ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তিন আসরে ৮ ম্যাচ খেলতে নেমে অস্ট্রেলিয়ার ৪ ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে।
বৃষ্টির এই বিঘ্নের কারণে অস্ট্রেলিয়া ২০১৩ ও ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কোন ম্যাচ জিততে পারেনি। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৫১ রান তাড়া করে সেমিফাইনালের পথে এগিয়ে গেলেও রাওয়ালপিন্ডির বৃষ্টি টেনে ধরেছে অজিদের।
২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। অস্ট্রেলিয়া ওই ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করে ২৪৩ রান করেছিল। নিউজিল্যান্ড ৫১ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ম্যাচ আর মাঠে গড়ায়নি। ওই আসরের বাকি দুই ম্যাচে ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারের স্বাদ পায় অজিরা।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গত আসর অর্থাৎ ২০১৭ সালের আসরে বৃষ্টি আরও নির্মম আচরণ করেছে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে। সেবার বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচই পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
গ্রুপের প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের ২৯২ রানের লক্ষ্যে নেমে ৫৩ রানে ৩ উইকেট হারায় অজিরা। এরপর বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরের ম্যাচে বাংলাদেশ অজিদের বিপক্ষে মাত্র ১৮২ রান করে। অস্ট্রেলিয়া ১ উইকেটে ৮৩ রান করার পর বৃষ্টি নামলে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। গ্রুপের অন্য ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ এক জয় ও পরিত্যক্ত ম্যাচের এক পয়েন্ট থেকে চলে যায় সেমিফাইনালে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।