ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, তাঁর স্ত্রী নার্গিস সামসাদ, ছেলে রিদওয়ানুল আশিক নিলয় এবং মেয়ে চাশমে জাহান নিশির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেনের (গালিব) আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। মামলার অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলম তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, এনায়েত উল্লাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক এক কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন। অভিযোগ অনুসন্ধানের সময় এনায়েত উল্লাহ, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের নামে অবৈধ আয়ে নিজ এলাকায় কৃষি জমি, ফ্ল্যাট, প্লট কেনা এবং তাঁদের নামে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে জানা যায়। 

এনায়েত উল্লাহ, নার্গিস সামসাদ, ছেলে রিদওয়ানুল আশিক নিলয়, মেয়ে চাশমে জাহান নিশি এবং তাঁদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট কোম্পানি প্রতিষ্ঠানের নামে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়। তাঁরা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হতে পারে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার প্রয়োজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দ শত য গ ন ষ ধ জ ঞ

এছাড়াও পড়ুন:

চুরির অপবাদে ব্যবসায়ীকে গাছে বেঁধে পেটালেন মহাজন

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় সুদের টাকা দিতে না পারায় এক ব্যবসায়ীকে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মহাজনের বিরুদ্ধে। এর একটি ভিডিও সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খরিয়া কাজীরচরের ভাটি লঙ্গরপাড়া গ্রামের মাদ্রাসা পিয়ন ও ব্যবসায়ী নূর আমিন (৩৮) একই এলাকার সুদে কারবারি আব্দুল জলিলের কাছ থেকে মাসিক ১০ হাজার টাকা সুদের শর্তে ১ লাখ টাকা নেন। তিনি ১০ হাজার টাকা করে চার মাস সুদ দিয়ে আর দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। লাঞ্ছিত করা হয় ব্যবসায়ীকে।

জলিল মারধরের অভিযোগ এনে নূর আমিনের বিরুদ্ধে আদালতে নালিশও করেন। যদিও নূর অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন। কিছুদিন পর ভুক্তভোগীর একটি মোটরসাইকেল আটকে রাখেন জলিল। এ নিয়ে নূর আমিন থানায় অভিযোগ দেন। এর পর তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরই মধ্যে রোববার কয়েকজনকে পাঠিয়ে তাঁকে লঙ্গরপাড়া বাজার থেকে ধরে আনেন জলিল।

এক পর্যায়ে গরু চুরির অপবাদ দিয়ে তাঁকে বাড়ির গাছে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাড়ির সবাই মিলে তাঁকে লাঠিপেটা করেন। শরীরের কাপড়ও ছিঁড়ে ফেলা হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, দুই হাত গাছে বাঁধা নূরের। এক নারী জামার কলার ধরে তাঁকে নির্যাতন করছেন।

নূর আমিনকে মারধরের সময় বলতে শোনা যায়, ‘এ ... একটা গরু চোর, তাই ধইরি (ধরে) বান্ধিছি। মাইনষের টাইন (কাছ থেকে) ট্যাহা নিছে। আংগর টাইন ৬ লাখ ট্যাহা নিছে।’ 

ঘটনা জানাজানি হলে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আশরাফুল কবীর রূপা ঘটনাস্থলে যান। তিনি দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা করে বিষয়টি সুরাহা করেন। বিএনপি নেতা বলেন, ‘সেখানে শত শত মানুষ ছিল। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে আগামী আগস্ট মাসে টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে নূরকে মুক্ত করি।’ 

অভিযুক্ত আব্দুল জলিলের ভাষ্য, ‘অনেক দিন ধরে দেড় লাখ টাকা পাই। তাঁকে বাজার থেকে ধরে এনেছিলাম, নির্যাতন করা হয়নি। বাড়ি আনার পর খারাপ আচরণ করায় বেঁধে রেখেছিলাম। নেতারা সমঝোতা করে দেওয়ায় ছেড়ে দিয়েছি।’

ভুক্তভোগী নূর আলম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘জীবনে কোনোদিন এত অপমান কেউ করেনি। মারধর করেছে, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছে। সুদের টাকার জন্য এক বছর ধরে আমার মোটরসাইকেল আটকে রেখেছে। টাকাও দাবি করছে। মাসে ১০ হাজার করে চার মাস টাকা দিয়েছি। এখন আসল টাকা পাবেন ৬০ হাজার।’

এ বিষয়ে শ্রীবরদী থানার ওসি মো. আনোয়ার জাহিদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তার আগেই স্থানীয় নেতারা সমঝোতা করেন। ভুক্তভোগীকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ