আমি না বড্ড সেকেলে, ফেসবুক–ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করি না
Published: 26th, February 2025 GMT
প্রথমবার নির্দেশনা
এত দিন শ্রোতারা আমাকে গানে ও মিউজিক ভিডিওতে দেখেছেন। এবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হচ্ছি। ‘রবিযাপন’ অনেক দিনের স্বপ্ন ও পরিকল্পনা, আজ বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। আশা করি, সব সময়ের মতোই নতুন এ দায়িত্বেও সবার ভালোবাসা ও সমর্থন পাব।
রবীন্দ্রযোগ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান দিয়েই আমার শুরু। বলা যায়, তাঁর গানেই মানুষ আমাকে চিনেছেন। আমার প্রথম নির্দেশনাতেও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই বেছে নিয়েছি। ‘চোখের বালি’ (পাঠ করা হবে), মাঝখানে কিছু সংলাপ, পাশাপাশি সাতটি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশনা। এভাবে সাজানো হয়েছে এই মিউজিক্যাল অডিও ড্রামা। আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে আমার একক পারফরম্যান্স রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া সফর
সিডনির কনসার্ট আমার জীবনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। দেশের বাইরে আগেও পারফর্ম করা হয়েছে, তবে এটা ছিল আমার প্রথম টিকিট শো। আমি একাই পারফরমার, তারপরও মিলনায়তন পূর্ণ ছিল। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, কয়েক দিন আগেই টিকিট সোল্ড আউট হয়ে যায়। প্রবাসীরা আসলে আমাদের মধ্যে দেশের মাটির গন্ধ খুঁজে পান, এটা আমাকে আপ্লুত করেছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বপ্নের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে জুয়েল, অর্থাভাবে অনিশ্চিত ভুটান যাত্রা
ভুটান প্রিমিয়ার লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ক্লাব পারো এফসিতে খেলার সুযোগ পেয়েছেন নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নওদাবস গ্রামের তরুণ ফুটবলার মো. জুয়েল রানা। কিন্তু অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে তার স্বপ্নপূরণের যাত্রা।
শৈশব থেকেই ফুটবলের প্রতি ছিল জুয়েলের গভীর ভালোবাসা। স্থানীয় পর্যায়ের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নিজেকে চিনিয়েছেন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়েও। খেলেছেন ঢাকা সিটি কাপ, মেয়র কাপ, এমনকি বসুন্ধরা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় ডাক পান ভুটানের পেশাদার ফুটবল লিগের ট্রায়াল ক্যাম্পে, যেখানে ৫০ জনের মধ্যে বাংলাদেশের মাত্র তিনজন নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একজন জুয়েল। বর্তমানে জুয়েল ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যামার স্কুল, রংপুর-এর নবম শ্রেণির বাংলা ভার্সনের শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে সিউলকে বিধ্বস্ত করল বার্সেলোনা
রোনালদোর অদম্য ক্ষুধা, দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জেতালেন আল-নাসরকে
নভেম্বর মাসের শেষের দিকে হতে যাওয়া লিগে অংশ নিতে হলে এর আগেই পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট ও খেলার কিটসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু এখানেই সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ।
জুয়েলের বাবা একজন দিনমজুর ও ভ্যানচালক। এমন আর্থিক অবস্থায় এত ব্যয়ভার বহন করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
জুয়েল রানা বলেন, “আমি ডোমার হাইস্কুল মাঠে খেলা শুরু করি, ডোমার ফুটবল একাডেমির কোচ সুজন ভাইয়ের কাছেই প্রথম হাতে খড়ি। এরপর উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে এবং বসুন্ধরা অনূর্ধ্ব-১৮ দলের হয়ে খেলি। ভুটান থেকে পারো এফসির প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে। তাদের নেয়া ট্রায়ালে ৫০ জনের মধ্যে ৫ জন নির্বাচিত হই, পরে মেডিকেল টেস্টের পর আমিসহ ৩ জন সুযোগ পাই। লিগ শুরু হওয়ার এক মাস আগেই যেতে হবে। কিন্তু এখন অর্থের কারণে যাওয়া হবে কি না, সেটা অনিশ্চিত। পাসপোর্ট, বিমানের টিকিট, কিটস সবকিছুতেই টাকা দরকার। আমি শুধু চাই কেউ পাশে দাঁড়াক। আমি দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই।”
জুয়েলের মা রশিদা বেগম বলেন, “ছেলেটা অনেক কষ্ট করে আজ এই পর্যন্ত এসেছে। এখন যদি শুধু টাকার অভাবে তার স্বপ্ন থেমে যায়, সেটা আমাদের সহ্য হবে না।”
জুয়েলের বাবা জয়নুল ইসলাম বলেন, “আমি দিনমজুর মানুষ, ছেলের স্বপ্নপূরণে কিছুই করতে পারছি না। এই কষ্ট ভাষায় বোঝানো যায় না। সরকার কিংবা কেউ যদি সাহায্য করত, আমার ছেলে বিদেশে গিয়ে খেলতে পারত।”
এলাকাবাসীরাও জুয়েলের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “জুয়েল অনেক ভালো খেলে, সে আমাদের গর্ব। কিন্তু তার পরিবার অত্যন্ত অসচ্ছল। সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে সে একদিন দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।”
ডোমার ফুটবল একাডেমির কোচ মো. সাদিকুর রহমান সুজন বলেন, “জুয়েল আমাদের একাডেমির অন্যতম প্রতিভাবান খেলোয়াড়। সে তার পরিশ্রমে অনেক দূর এগিয়েছে। সে ভুটানে খেলার সুযোগ পেয়েছে, কিন্তু এখন শুধু অর্থের অভাবে তার যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে গেছে। তার বাবা একজন ভ্যানচালক—এই খরচ বহন তার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি অনুরোধ করব সরকার বা সমাজের বিত্তবানরা যেন জুয়েলের পাশে দাঁড়ায়।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শায়লা সাঈদ তন্বী বলেন, “আমরা জুয়েলকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। আপনারাও সকলে জুয়েলের পাশে দাঁড়ান, সে যেন দেশের গর্ব হয়ে ওঠে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
একজন উদীয়মান প্রতিভাবান ফুটবলারের স্বপ্ন যেন শুধু আর্থিক সংকটে থেমে না যায়। এই লক্ষ্যেই জুয়েলের পরিবার সমাজের দানশীল, খেলাপ্রেমী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সহযোগিতার আবেদন জানিয়েছেন।
ঢাকা/সিথুন/আমিনুল