আগামী ডিসেম্বর সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, আগামী ডিসেম্বরকে সামনে রেখে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করছি। আমরা প্রস্তুত আছি। আশা করছি, ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন করতে পারব। 

গতকাল বুধবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভোটার তালিকা হালনাগাদ উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে গেলে এক বছর সময় লাগবে। এতে ডিসেম্বরে সংসদ নির্বাচন করার যে ঘোষণা, সে সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হবে না। তাই আমরা আগে জাতীয় নির্বাচনের কথা ভাবছি।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আপনারা দেখেছেন, আমরা ঘরে ঘরে গিয়ে ইতোমধ্যে ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করেছি। এখন পুরোদমে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। দেশের মানুষ ভোট দিতে আগ্রহী বলেই উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে ভোটার হতে চাচ্ছেন। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করছেন। সমন্বিতভাবে ভোটার তালিকা তৈরির কাজটি শেষ করার জন্য সবাই সচেষ্ট আছেন। 

জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জোবাইদা খাতুন, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম প্রমুখ।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ড স ম বর

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ইরানের তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা

ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তেল ও গ্যাস স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কয়েক দশক ধরে বৈরিতা চলছে। তবে এবারই প্রথম ইসরায়েল ইরানে হামলা চালানোর পর দুই পক্ষ সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হামলা তীব্র হতে থাকায় বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত শনিবার গভীর রাতে ইরানের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয় জানায়, ইসরায়েল একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ডিপোতে হামলা চালিয়েছে। একই সঙ্গে রাজধানী তেহরানে একটি তেল শোধনাগারেও আগুন ধরে যায়। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছেন।

বিশ্বের অন্যতম বড় গ্যাসক্ষেত্র ‘সাউথ পার্স’-এ ইসরায়েলের হামলায় আগুন লাগার পর ইরান আংশিকভাবে এ ক্ষেত্রে উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। ইরান কাতারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে গ্যাস উত্তোলন করে থাকে।

ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানোয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম আরও বাড়তে পারে। দুই দেশই একে অন্যের ভূখণ্ডে আরও বড় ধরনের হামলার হুমকি দিচ্ছে।

ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল মজুতের অধিকারী– এই তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইআইএ) দেওয়া। ফলে দেশটির জ্বালানি অবকাঠামো দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের লক্ষ্যবস্তু ছিল। তবে এতদিন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে হামলা এড়িয়ে চলছিল, বিশেষ করে তার মিত্র যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের চাপ ছিল। কিন্তু এবার তা বদলে গেছে।

গত শনিবার রাতে তেহরানের উত্তর-পশ্চিমে শাররান জ্বালানি ডিপো ও শহরের দক্ষিণে শার-রে অঞ্চলে অবস্থিত দেশের অন্যতম বৃহৎ তেল শোধনাগারে বড় ধরনের আগুন লাগে।  এ ছাড়া ইরানের দক্ষিণ বুশেহর প্রদেশের উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসক্ষেত্র সাউথ পার্স লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। 

হামলায় সাউথ পার্সের ‘ফেইজ ১৪’ প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্রে আগুন লাগে। ফলে এখানে দৈনিক ১ দশমিক ২ কোটি ঘনমিটার গ্যাস উৎপাদনকারী একটি অফশোর প্ল্যাটফর্ম বন্ধ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের হামলার প্রথম দিনে তেল ও গ্যাস স্থাপনা বাদ পড়লেও বাজারে তেলের দাম প্রায় ৯ শতাংশ বেড়ে যায়। সোমবার  বিশ্ববাজারে তেলের দামে আরও বড় উল্লম্ফন হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের গবেষক অ্যালান এয়ার বলেন, ইসরায়েল চায়, ইরানের ওপর হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও জড়িয়ে পড়ুক। তাদের লক্ষ্য, ইরানের এই সরকারের পতন ঘটানো। ইরানের সামরিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া উপায় নেই। কারণ, দেশের অভ্যন্তরে সম্মান রক্ষার বিষয় আছে। কিন্তু ইসরায়েলে বড় ধরনের ক্ষতি করার মতো ক্ষমতা ইরানের নেই। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইরানের বন্ধুর সংখ্যা কম। আর থাকলেও ইসরায়েল পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মতামতকে পাত্তা দেয় না– বলেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ