পাকিস্তান ক্রিকেটের সমস্যা সমাধানে যে প্রস্তাব হাফিজের
Published: 28th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হয়েও একটিও ম্যাচ জিততে না পারায় পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া বাবর আজমের দলের পারফরম্যান্স হতাশ করেছে সাবেক ক্রিকেটারদেরও। পাকিস্তানের ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করে একেকজন একেক ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ মোহাম্মদ হাফিজ।
পাকিস্তানের এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি খুব একটা ভালো ছিল না। ত্রিদেশীয় সিরিজের গ্রুপপর্ব ও ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর মূল আসরেও একই প্রতিপক্ষের কাছে ৬০ রানে পরাজিত হয় তারা। এরপর ভারতের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হার তাদের বিদায়ের পথ আরও প্রশস্ত করে। পরে বাংলাদেশও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হলে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচেও তারা জয়ের সুযোগ পায়নি, কারণ বৃষ্টিতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়।
এভাবে শূন্য হাতে টুর্নামেন্ট শেষ করে পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২৩ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো আয়োজক দল একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। এর আগে ২০০৬ ও ২০০৯ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা আয়োজক হয়ে ব্যর্থ হয়েছিল, তবে তারা অন্তত একটি করে ম্যাচ জিততে পেরেছিল।
এমন লজ্জার পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি), ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের তীব্র সমালোচনা করছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। তবে হাফিজ সমাধানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা দিয়েছেন—পিসিবির চেয়ারম্যান হিসেবে একজন বিদেশিকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে হাফিজ লিখেছেন, ‘আমরা বিদেশি কোচের প্রয়োজনীয়তার কথা বলি, কারণ আমরা মনে করি তারা ভালো পারফর্ম করে। তাহলে একজন বিদেশি চেয়ারম্যান কেন নয়?’
সাধারণত, পিসিবির চেয়ারম্যান পদে পাকিস্তানেরই কাউকে বসানো হয়। তবে হাফিজ মনে করেন, বিদেশি কেউ দায়িত্ব নিলে পাকিস্তান ক্রিকেটের সংকট কাটতে পারে। তার এই প্রস্তাব নিয়ে ইতোমধ্যে দেশটির ক্রিকেট মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক মেডিকেল টেকনোলজিস্টকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পেয়েছে’ অ্যাখ্যা দিয়ে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বহিরাগতদের বিরুদ্ধে।
বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ মারধরের ভিডিও ধারণের চেষ্টা করলে হামলাকারীরা তিনজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী মো. গোলাম আজম ফয়সাল চিকিৎসা কেন্দ্রেই ফিজিওথেরাপিস্ট হিসেবে কর্মরত। হামলার পর গুরুতর আহতাবস্থায় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।
আরো পড়ুন:
তাহলে তো স্পন্সর নিয়ে প্রোগ্রাম করলেই চাঁদাবাজি: সালাউদ্দিন
রাবি ছাত্রদলের কমিটি: সভাপতি-সম্পাদকসহ অধিকাংশেরই ছাত্রত্ব নেই
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসা কেন্দ্রের ২৩ নম্বর কক্ষে ফয়সাল ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন। প্রথমে একজন বহিরাগত এসে ফয়সালের পরিচয় নিশ্চিত করে যায়। এর কিছুক্ষণ পরেই ৭-৮ জন কক্ষে প্রবেশ করে ফয়সালকে ‘আওয়ামী লীগের আমলে চাকরি পেয়েছে’ অ্যাখ্যা দিয়ে এবং কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে তারা ফয়সালকে টেনেহিঁচড়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের বাইরে নিয়ে আসে এবং এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। মারধর শেষে যাওয়ার সময় যারা হামলার দৃশ্য ভিডিও করার চেষ্টা করলে তারা তিনজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী গোলাম আযম ফয়সাল বলেন, “হামলাকারীদের মধ্যে একজন আরেকজনকে ‘জনি, আর মারিস না’ বলে থামায়। চলে যাওয়ার সময় তারা আমাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দিয়ে যায়।”
নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই একটি ভাড়া বাসায় থাকি। খুব আতঙ্কে দিন পার করছি।” হামলাকারীদের কাউকে চেনেন না বলে মামলার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানান তিনি।
এ ঘটনায় চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মীদের মধ্য আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানান কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকা লিপি। তিনি বলেন, “ফয়সাল আগে আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিংয়ে যেত বলে আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় আমরা সবাই আতঙ্কিত। কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করলে আমাদের পক্ষে দায়িত্ব পালন করা কঠিন হয়ে পড়বে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাকে বহিরাগতরা অত্যন্ত নির্মম ও অমানবিকভাবে প্রহার করেছে। আমরা জনি নামে একজনের কথা শুনেছি, যার নেতৃত্বে এই হামলা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সে সম্ভবত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পুলিশের সহায়তায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, “আমি মাত্র বিষয়টি জানতে পারছি। এ বিষয়ে প্রক্টর স্যারের সঙ্গে কথা বলব। এছাড়া ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে গতকাল পুলিশর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মিটিং হয়েছে। তারা নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে কাজ করছে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী