চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হয়েও একটিও ম্যাচ জিততে না পারায় পাকিস্তান ক্রিকেট দলকে নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা। গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নেওয়া বাবর আজমের দলের পারফরম্যান্স হতাশ করেছে সাবেক ক্রিকেটারদেরও। পাকিস্তানের ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করে একেকজন একেক ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমী প্রস্তাব দিয়েছেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ মোহাম্মদ হাফিজ।

পাকিস্তানের এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি খুব একটা ভালো ছিল না। ত্রিদেশীয় সিরিজের গ্রুপপর্ব ও ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর মূল আসরেও একই প্রতিপক্ষের কাছে ৬০ রানে পরাজিত হয় তারা। এরপর ভারতের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হার তাদের বিদায়ের পথ আরও প্রশস্ত করে। পরে বাংলাদেশও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাজিত হলে পাকিস্তানের বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায়। নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচেও তারা জয়ের সুযোগ পায়নি, কারণ বৃষ্টিতে ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়।

এভাবে শূন্য হাতে টুর্নামেন্ট শেষ করে পাকিস্তান ক্রিকেট ইতিহাসে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়েছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ২৩ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম কোনো আয়োজক দল একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। এর আগে ২০০৬ ও ২০০৯ সালে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা আয়োজক হয়ে ব্যর্থ হয়েছিল, তবে তারা অন্তত একটি করে ম্যাচ জিততে পেরেছিল।

এমন লজ্জার পারফরম্যান্সের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি), ম্যানেজমেন্ট ও খেলোয়াড়দের তীব্র সমালোচনা করছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। তবে হাফিজ সমাধানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি ধারণা দিয়েছেন—পিসিবির চেয়ারম্যান হিসেবে একজন বিদেশিকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

এক্স (সাবেক টুইটার) অ্যাকাউন্টে হাফিজ লিখেছেন, ‘আমরা বিদেশি কোচের প্রয়োজনীয়তার কথা বলি, কারণ আমরা মনে করি তারা ভালো পারফর্ম করে। তাহলে একজন বিদেশি চেয়ারম্যান কেন নয়?’

সাধারণত, পিসিবির চেয়ারম্যান পদে পাকিস্তানেরই কাউকে বসানো হয়। তবে হাফিজ মনে করেন, বিদেশি কেউ দায়িত্ব নিলে পাকিস্তান ক্রিকেটের সংকট কাটতে পারে। তার এই প্রস্তাব নিয়ে ইতোমধ্যে দেশটির ক্রিকেট মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন

‘“এ সকল নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা নষ্ট মাইয়াছেলে”—বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর নিজের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন বাসে হেনস্তার শিকার ওই তরুণী। আজ প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে দীর্ঘ আলাপে তিনি সেদিনের ঘটনার আদ্যোপান্ত জানান। বললেন, ঘটনার সময় বাসে একজন মানুষও প্রতিবাদ না করায় কষ্ট পেয়েছেন। যিনি এ ঘটনার ভিডিও করেছিলেন, তাঁর কাছ থেকেও কটু কথা শুনতে হয়েছিল। এমনকি তিনি বাস থেকে নামতে গিয়েও পারছিলেন না। যতবার নামার চেষ্টা করেন, চালক বাস টান দিচ্ছিলেন।

তবে দৃঢ়তার সঙ্গে এই তরুণী জানিয়েছেন, এই হেনস্তার ঘটনা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি প্রতিবাদ করে যাবেন।

জুতা হাতে বাস কন্ডাক্টরের আচরণের প্রতিবাদ জানানোর ওই ঘটনা ঘটে গত ২৭ অক্টোবর। বাসের এক ব্যক্তি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তরুণীর এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার মামলা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় (যৌন নিপীড়নের অভিযোগ) মামলাটি করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ এ সময় সামনের দিকে থাকা দুই নারী ও একজন পুরুষ যাত্রী ছাড়া আর কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি।

ওই তরুণী প্রথম আলোকে জানান, তাঁর মা–বাবা ও ভাই–বোনরা চাঁদপুরে থাকেন। বাবার দোকান রয়েছে। ভাই–বোনদের মধ্যে তিনি সবার বড়। চাঁদপুর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর এখন ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ছেন। পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি বাবাকে সহায়তা করতে নিজেও টুকটাক কাজ করেন। হাতের কাজ, ছবি আঁকার কাজ করেন, টেলিভিশন চ্যানেলে মাঝেমধ্যে কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেন। রাজধানীর বছিলা এলাকায় কয়েকজন মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন।

‘শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি’

সেদিনের ঘটনা বলতে গিয়ে তরুণী বলেন, তিনি মুঠোফোন ঠিক করতে হাতিরপুলে মোতালিব প্লাজায় গিয়েছিলেন। বাসায় ফেরার জন্য সেখান থেকে ধানমন্ডি–১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আসেন এবং রমজান পরিবহনের ওই বাসটিতে ওঠেন। তখন বেলা দুইটা কি আড়াইটা। তিনি বাসে উঠে মাঝামাঝি জায়গায় একটি আসনে বসেন। বাস কন্ডাক্টর তাঁর কাছে এসে ভাড়া চাইলে ‘স্টুডেন্ট’ (শিক্ষার্থী) জানিয়ে তিনি অর্ধেক ভাড়া দেন। তরুণী দাবি করেন, বাস কন্ডাক্টর তখন বলে ওঠেন, ‘চেহারা আর পোশাক দেখলে তো মনে হয় না স্টুডেন্ট!’ তখন তিনি রাগ হলেও কন্ডাক্টরকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘স্টুডেন্টের সঙ্গে পোশাকের কী সম্পর্ক? আপনি এসব কী ধরনের কথা বলছেন? ওই সময় কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি।’

রাজধানীর বছিলায় বাসের মধ্যে পোশাক নিয়ে কটূক্তির সাহসী প্রতিবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর প্রশংসা করে এমন চিত্র ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লরা উলভার্ট: হিমালয়ের চূড়ায় এক নিঃসঙ্গ শেরপা
  • ঢাবি থেকে ড. জাকির নায়েককে ডক্টরেট দেওয়ার দাবি শিক্ষার্থীদের
  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
  • অ্যালবামের গল্প বলবে ‘পেনোয়া’