হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে জেলের জালে ১১ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড়, ১৩ হাজারে বিক্রি
Published: 28th, February 2025 GMT
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে ১১ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন বাগাড় ধরা পড়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে এক জেলের জালে মাছটি ধরা পড়ে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাটে নিলামে এটি ১১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। পরে সিঙ্গাইর উপজেলার এক ব্যক্তি ১৩ হাজার টাকায় কিনে নেন মাছটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে উপজেলার আজিমনগর এলাকার পদ্মা নদীতে নৌকায় জাল নিয়ে মাছ ধরতে যান ঢাকার দোহার এলাকার শ্রীচরণ রাজবংশীসহ আরও দুজন। রাত তিনটার দিকে জাল তোলার পর বাগাড়টি দেখতে পান তাঁরা। পরে আজ সকালে মাছটি হরিরামপুরের আন্ধারমানিক ঘাট এলাকার একটি আড়তে নেওয়া হয়। নিলামে কেনার পর মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির কাছে ১৩ হাজার টাকায় মাছটি বিক্রি করেন এক ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন১০ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড় বিক্রি হলো সাড়ে ১৭ হাজার টাকায়২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫মাছটির ক্রেতা মোশারফ হোসেন জানান, সামনে পবিত্র রমজান মাস। রোজায় পরিবারের সদস্যদের খাওয়ার জন্য তিনি মাছটি কিনেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মৌসুমের শুরু থেকে এ পর্যন্ত জেলেদের জালে প্রায় অর্ধশত বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, পাবনা, ফরিদপুর এবং ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহারের জেলেদের বড় ফাঁস জালে বোয়াল, পাঙাশ, রুই, কাতলার পাশাপাশি বাগাড়ও ধরা পড়ছে।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নূরুল হক ইকরাম বলেন, হরিরামপুরের উজানে পদ্মা ও যমুনা নদী দুটি মিশেছে। নদী দুটির মোহনাসহ আশপাশের এলাকায় জেলেদের জালে প্রায়ই বড় বড় মাছ ধরা পড়ছে। নদীতে পানি কমে চর জাগায় মাছের অভয়ারণ্য দিন দিন কমে যাচ্ছে। এরপরও জেলেদের জালে বড় আকারের বোয়াল, বাগাড়, রুই, কাতলা ধরা পড়ছে।
আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় একটি মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় শিকার করা, ধরা ও বিক্রি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকা সত্ত্বেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও প্রকাশ্যে বিক্রি অব্যাহত আছে। এ ধরনের মহাবিপন্ন মাছ প্রকাশ্যে শিকার ও নিলামে বিক্রি হলেও এসব বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের তেমন ভূমিকা দেখা যায় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।
বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।
আরো পড়ুন:
ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ
ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ
উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি