রূপগঞ্জে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে জামায়াতের মিছিল
Published: 28th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে মিছিল করেন জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা জামাতের আয়োজনে ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় এ মিছিলে অংশগ্রহণ করেন জামায়াতের নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা।
মিছিলটি ভুলতা গাউছিয়া স্টেশন মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে ঢাকা- সিলেট মহাসড়কের গোলাকান্দাইল, সাওঘাট হয়ে গাউছিয়া গোল চত্বরে এক পথ সভার মাধ্যমে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত পথসভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মমিনুল হক সরকার বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বলতে চাই। আপনাদের মনিটরিং সেল কার্যকর করুন। দ্রব্যমূল্য যারা বৃদ্ধি করে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ ও আইনের আওতায় এনে মাহে রমজানে রোজাদারদের স্বস্থির নিঃশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
মমিনুল হক সরকার আরো বলেন, দেশ দ্বিতীয় বার স্বাধীন হওয়ার ৭ মাস অতিবাহিত হতে চললেও আমাদের প্রিয় নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া হয় নাই। এই রমজানের মধ্যেই কারাবন্দি আজহারুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন তিনি।
জামায়াতের এ কর্মসূচিতে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকার ওয়ারী পশ্চিম থানার শুরা ও কর্ম পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ জেলা জামাতের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইশরাফিল হোসাইন, উপজেলা দক্ষিণ আমির সাইফুল ইসলাম সিরাজী, সেক্রেটারি আনিসুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা উত্তর আমির আব্দুল মজিদ,সেক্রেটারি খাইরুল ইসলাম, রূপগঞ্জ পশ্চিম আমির মাওলানা ফারুক আহমেদ, সেক্রেটারি মো: হানিফ ভূঁইয়া প্রমুখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ রমজ ন ব ল দ শ জ ম য ত ইসল ম ন র য়ণগঞ জ রমজ ন র র পগঞ জ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।