‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিৎ সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে বের হওয়া’
Published: 28th, February 2025 GMT
বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে ঘর থেকে বের হওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইলিয়াস মাতুব্বর। একইসঙ্গে তিনি দেশের মানুষের শান্তির জন্য তড়িৎগতি ও কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
আজ শুক্রবার বিকালে ফরিদপুরে সংগঠনটির কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এমন মন্তব্য করেন তিনি। জেলা শহরের কবি জসিম উদ্দীন হল রুমে জেলা শাখার আয়োজনে প্রথমবারের মতো সংগঠনটির কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বিজেপি নেতা ইলিয়াস মাতুব্বর বলেন, আপনারা যারা সরকারে আছেন, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে অর্ডার দিয়ে হবে না। আপনাদের বুঝতে হবে শেখ হাসিনার দোসররা লেগে আছে। তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি যতটা পারবে ততটা করবে। সুতরাং আপনাদের উচিৎ মানুষকে শান্তি দেওয়া। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার উচিৎ সকালে ফাটাকেষ্ট মুভি দেখে ঘর থেকে বের হওয়া। কারণ, প্রশাসনেও কিন্তু ভারতের দোসররা বসে আছে।
তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে এবং তার কর্মকাণ্ড তুলে ধরে বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন দেশের সর্বপ্রথম স্বৈরাশাসক। তার রক্ত শেখ হাসিনার মধ্যে প্রবাহিত। শেখ হাসিনাকে ভারত সাইকো ট্রেনিং দিয়ে পাঠিয়েছে। তার বাবার হত্যার বিচারের জন্য সাইকো হয়ে উঠেছিলেন।
বিজেপির এই নেতা ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমি ভারতের দাদা বাবুদের বলে দিতে চাই, বাঙালি ভাতে-মাছে বাঙালি। দেশের সার্বভৌমত্বের বিষয়ে বাঙালি একটা চুলও ছাড় দেবে না, এক ইঞ্চি জমিও ছাড় দেবে না। প্রয়োজনে ১৮ কোটি মানুষ ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। দাদা বাবুদের দিন শেষ, শেখ হাসিনার মতো একজন সাইকো তৈরি করে এদেশ চুষেছেন; কিন্তু আর না। আমরা কিন্তু প্রাণ দিতে জানি।
কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির দক্ষিণবঙ্গের সমন্বয়ক ইকরাম আলী। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সৈয়দ রাকিবুল হোসেন, যুব বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার আহমেদ অভিসহ বিভিন্ন উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী