যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে আগের তুলনায় বেশি ব্যবহারকারীদের তথ্য সরবরাহ করছে অ্যাপল, গুগল ও মেটা। গোপনীয়তা সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রোটনের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, গত এক দশকে এই তিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে পাঠানো ব্যবহারকারীদের তথ্যের পরিমাণ ৫৩০ থেকে ৬৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যান্য দেশ থেকে তথ্য চাওয়ার পরিমাণ বাড়লেও তা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় অনেক কম।

প্রোটনের গবেষণায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে গুগল, অ্যাপল ও মেটার তথ্য দেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। ২০১৪ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট-সম্পর্কিত তথ্য শেয়ারের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ১০ বছরে শুধু গুগলের কাছেই তথ্য জানানোর অনুরোধের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২ হাজার ১৭১ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে যে রাজনৈতিক দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ব্যবহারকারীদের তথ্য চাওয়ার প্রবণতায় তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোয় তথ্য চাওয়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়লেও তা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় বেশ কম।

প্রোটনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুধু নিজ দেশের নাগরিকদেরই নয়, অন্যান্য দেশের নাগরিকদের তথ্যেও অবাধ প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সব প্ল্যাটফর্মে পূর্ণাঙ্গ ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ প্রযুক্তি ব্যবহার করলেও তা ব্যবহারকারীদের তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে ব্যবহারকারীদের তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ছে।

প্রোটনের তথ্য মতে, বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত প্রকাশ্যে জানাতে চায় না যে তারা স্বেচ্ছায় বা অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশের সরকারি সংস্থার কাছে ব্যবহারকারীদের তথ্য পাঠিয়ে থাকে। বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে নৈতিকতার চেয়ে অর্থ আয়ই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণেই ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পর ম ণ প র টন র ব যবহ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি

পুঁজিবাজারে সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিক নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা পর্যবেক্ষণে অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

তাই বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থে তদন্ত করে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে করে কমিশন। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিম্নমুখী প্রবণতার কারণ খতিয়ে দেখতে বেশ কিছু শর্ত নির্ধারণ করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

গত রবিবার (২৭ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করা হয়েছে। বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা রাইজিংবিডি ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

‘অরেঞ্জ বন্ড অন্তর্ভুক্তিমূলক পুঁজিবাজার তৈরির সুযোগ দিচ্ছে’

যমুনা অয়েলের ৯ মাসে মুনাফা বেড়েছে ৩৭.৭৮ শতাংশ

তদন্তের বিষয়টি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) অবহিত করা হয়েছে।

গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন-বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান, উপ-পরিচালক মুহাম্মদ ওরিসুল হাসান রিফাত, ডিএসইর সহকারী মহাব্যবস্থাপক মাহফুজুর রহমান এবং সিডিবিএলের সহকারী ব্যবস্থাপক কাজী মিনহাজ উদ্দিন।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে রাজনৈতিক ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারের হাল ধরেন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। ওই দিন অর্থাৎ ১৯ আগস্ট ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৫৭৭৫.৪৯ পয়েন্টে। তিনি কাজে যোগ দেওয়ার ৮ মাস অতিবাহিত হলেও পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসেনি। বরং, ক্ষেভে বিনিয়োগকারীরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

সর্বশেষ সোমবার (২৮ এপ্রিল) ডিএসইর ডিএসইএক্স সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৯৫২.৭৯ পয়েন্টে। ফলে প্রায় ৮ মাসে ডিএসইএক্স সূচক ৮২২.৭০ পয়েন্ট কমেছে।

এমন পরিস্থিতি বিএসইসির গঠিত তদন্ত কমিটি সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিম্নমুখী প্রবণতার কারণ খতিয়ে দেখবে। এ কাজে কোনো কারসাজি চক্র জাড়িত আছে কি-না এবং বাজারে চক্রান্তকারী গুজব রটিয়েছে কিনা-তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা গেছে।

বিএসইসির তদন্তের আদেশ
সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজারের নিম্নমুখী প্রবণতা পর্যবেক্ষণ করেছে বিএসইসি, যা অস্বাভাবিক এবং সন্দেহজনক বলে মনে করা হচ্ছে। তাই কমিশন বিষয়টি পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে তদন্ত করে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছে। এরই ধারাবাহিকতায় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ (১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ নম্বর XVII) এর ২১ ধারা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিও অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ (১৯৯৩ সনের ১৫ নম্বর আইন) এর ১৭(ক) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন আলোচ্য বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। উক্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিএসইসি, ডিএসই এবং সিডিবিএলের ৪জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হলো। গঠিত তদন্ত কমিটির কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করবে।

যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি
ডিএসইএক্স সূচকের সাম্প্রতিক পতনের কারণ চিহ্নিত করা। বাজারে গুজব ছড়ানোর সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা অন্য কোনো আনুষঙ্গিক বিষয় থাকলে তা চিহ্নিত করা। গঠিত তদন্ত কমিটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য সুপারিশ প্রদান করা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে সাম্প্রতিক সময়ে পুঁজিবাজার নিম্নমুখী প্রবণতার কারণ খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটি কি কি কারণে বাজার পতনমুখী প্রবণতায় রয়েছে তা খতিয়ে দেখবে। একইসঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানোর জন্য কি কি করা প্রয়োজন সে বিষয়েও সুপারিশ প্রদান করবে তদন্ত কমিটি।”

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন
  • সাপ্তাহিক পত্রিকা : সোনালি অতীত ও প্রসঙ্গকথা
  • পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি