বিশ্বমিডিয়ায় গুরুত্ব পেয়েছে এনসিপির আত্মপ্রকাশের খবর
Published: 1st, March 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আত্মপ্রকাশের খবর ফলাও করে প্রচার করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। আল জাজিরা, ব্লুমবার্গ, এপি, ও রয়টার্সের মতো মিডিয়া এনসিপির আত্মপ্রকাশের খবর প্রচার করেছে।
রয়টার্স শিরোনাম করেছে, প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর রাজনৈতিক দল করল বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা।
ব্লুমবার্গ নিউজের শিরোনাম করেছে, বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা, যারা হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তারা নতুন রাজনৈতিক দল করেছে। নিউজের ইন্ট্রোতে বলা হয়েছে, গত বছর শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের প্রধান সংগঠকরা বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে আসন্ন নির্বাচনে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। দেশটিতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
‘ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি’র নেতৃত্ব দেবেন নাহিদ ইসলাম। তিনিই আন্দোলনকারীদের সংগঠিত করতে এবং বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে গত আগস্টে দেশত্যাগে বাধ্য করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
এপি নিউজ শিরোনাম করেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছে।
আল জাজিরা প্রতিবেদনে বলেছে, প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা নির্বাচনে লড়তে নতুন দল গঠন করেছে।
গত বছরের গণবিক্ষোভের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আগামী এক বছরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি রাজনৈতিক দল করেছে।
শুক্রবার রাজধানীর সংসদ ভবনের পাশের মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এক সমাবেশে নতুন দল ন্যাশনাল সিটিজেনস পার্টির (এনসিপি) নেতারা জানান, তারা বিভেদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা ও সুশাসন এবং একটি স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে দেশ গড়তে চান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আলজ জ র এনস প এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
ছাত্র আন্দোলনের ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
সোমবার (১৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবির কথা জানায় সংগঠনটি।
সংগঠনটির মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদী বলেন, “আমাদের স্বাধীনতা দিবস আছে, বিজয় দিবস আছে, কিন্তু আমাদের মুক্তি ঘটেনি। তাই ঐতিকহাসিক ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়াও জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার আগে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।”
আরো পড়ুন:
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
নিরাপদ খাদ্য দিবস শনিবার: ‘নিরাপদ খাদ্য উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি কমায়’
তিনি বলেন, “গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, মৌলিক সংস্কার এবং ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে দেশে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘গাদ্দার’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে। এই সনদে ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের নিরিখে বৈষম্যবিরোধী ইনসাফভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা উপধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সাংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত এবং লিঙ্গের ন্যায্য শরিকানা নিশ্চিত করতে হবে। যেখানে বলা হবে- আমরা বাংলাদেশের জনগণ এই ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান সম্পল্প করেছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ইনকিলাব মঞ্চ ১৩টি প্রস্তাবনা তুলে ধরে, যা জুলাই সনদের কার্যকর প্রয়োগ ও জাতীয় ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করে।
প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১৯৪৭, ১৯৭১ ও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করা সব শহীদকে রাষ্ট্রের শ্রেষ্ঠ সন্তান ঘোষণা করতে হবে; যেসব জুলাই যোদ্ধার স্থায়ী অঙ্গহানি হয়েছে, তাদের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে; ফ্যাসিবাদী আমলে সংঘটিত ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটারবিহীন অবৈধ নির্বাচন বাতিল করে সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এছাড়া ফ্যাসিবাদী আমলের সকল মন্ত্রী, এমপি ও দোষী আমলাসহ রাষ্ট্রীয় কর্মচারীদের বিচারের আওতায় এনে অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ জব্দ করে তা শহীদ ও আহতদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে; দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা রক্ষায় ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই, পিলখানা ও শাপলা গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে দেশি-বিদেশি অপশক্তি চিহ্নিত করতে হবে; রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার করতে হবে যাতে ফ্যাসিবাদ আর স্বৈরতান্ত্রিকতা কখনও ফিরে না আসে; ৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণা করতে হবে।
বাকি দাবিগুলো হলো- জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটের ভিত্তিতে বৈষম্যবিরোধী কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে; সংবিধান থেকে জনবিরোধী ও জুলাই সনদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব ধারা বাতিল করে জুলাই সনদকে সংবিধানের তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী সব দল, মত ও লিঙ্গের ন্যায্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; জুলাই সনদের ভাষাগত দুর্ব্যবহার পরিহার করে জনসাধারণের জন্য সহজ ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে এবং সনদ চূড়ান্ত করার পূর্বে জনগণের মতামতের জন্য তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।
আগামী ২৫ জুনের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করা না হলে রাজধানীর শাহবাগ মোড় থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ অভিমুখে ‘লাল মার্চ’ করার ঘোষণাও দিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী