বৈশ্বিক আর্থিক বাজার এমনিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার জেরে নিম্নমুখী। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভালোদিমির জেলেনস্কি সঙ্গে যেভাবে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাতে বিনিয়োগকারীরা স্তম্ভিত। এর প্রভাব পড়েছে আর্থিক বাজারে।

সেই বাদানুবাদ আবার ঘরের ভেতরে হয়নি, বৈশ্বিক গণমাধ্যমের সামনেই দুই নেতা বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় বিনিয়োগকারীরা রীতিমতো আতঙ্কিত। ফলে এ সময় যা হয় তা–ই হয়েছে—বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ মাধ্যমে বিনিয়োগের দিকে গেছেন, যেমন মার্কিন সরকারের ট্রেজারি। এ ঘটনায় রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চুক্তি নিয়েও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্প-জেলেনস্কি প্রকাশ্য বাদানুবাদের পর যুক্তরাষ্ট্রের ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ থেকে কমে ৪ দশমিক ২৩ শতাংশে নেমে আসে। ইউরোপের ফিউচার স্টকের দাম পড়েছে। ডিএএক্স ও সিএসি ৪০ সূচক শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ পড়েছে; ইউরোস্টক্স ৫০ সূচক কমে ১ দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত। শেষমেশ পতন কিছুটা কমে দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ৬ শতাংশে। এর বিপরীতে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এসঅ্যান্ডপি সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ।

একই সঙ্গে ইউরোর দরপতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৩৭ শতাংশ। প্রতি ইউরোরে বিপরীতে এখন ১ দশমিক শূন্য ৩৬ ডলার পাওয়া যাচ্ছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে যা সর্বনিম্ন।

এ পরিস্থিতিতে বাজার বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, এ ঘটনার পর তা আবার অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। ফলে বাজারে আবার অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে। এবারের মার্কিন সফরে জেলেনস্কি চেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র যেন রাশিয়ার সঙ্গে হাত না মেলায় তা নিশ্চিত করতে। কিন্তু পরিস্থিতি এত উত্তপ্ত হয়ে যায়, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স সরাসরি বলেই বসেন, জেলেনস্কি ওভাল অফিস তথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ করেছেন।

এ ঘটনার শানে নজুল হলো, বিনিয়োগকারীরা আবার দেখলেন, ট্রাম্প প্রশাসন সম্পর্কে পূর্বাভাস করা কতটা কঠিন। অর্থাৎ সেই অনিশ্চয়তা। অথচ ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল ভিত্তি হচ্ছে নিশ্চয়তা। এমনিতেই ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে শঙ্কা আছে। এর মধ্যে শুরু হলো জেলেনস্কির সঙ্গে তাঁর এই বিবাদ।

এর মধ্যেই আবার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা ব্যয় সম্প্রতি কমে গেছে। অর্থাৎ ভোক্তাদের আত্মবিশ্বাস কমে গেছে। কমেছে উৎপাদন খাতের গতি। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি বাড়ি বিক্রি কমে গেছে। এ পরিস্থিতিতে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যমে বন্ডের সুদহার বেড়েছিল। কিন্তু গতকাল ট্রাম্পের এ কাণ্ডের পর বন্ডের সুদহারও এক ধাক্কায় কম গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন য দশম ক বন ড র স দ ন শ চয়ত অন শ চ এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের বিরুদ্ধে সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়াতে চায় ইসরায়েল: প্রতিবেদন

ইরানের বিরুদ্ধে নতুন শুরু হওয়া সামরিক সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েল। পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম এক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলি সূত্রের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল ইরানের ‘ফোর্ডো’ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনাটি ধ্বংস করার সক্ষমতা রাখে না। কারণ, এটি পাহাড়ের গভীরে অবস্থিত। তাই তারা এই স্থাপনাটিকে কার্যকরভাবে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চায়।

এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এক্সিওসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক সংঘাতে ওয়াশিংটনকে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েল। তবে ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমানে সেই অনুরোধ বিবেচনা করছে না।

ইসরায়েলি একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক আলোচনায় ইসরায়েলের উগ্রপন্থী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে কথা বলার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, প্রয়োজন দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় অংশ নিতে পারে।

তবে গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলা তারা একাই চালিয়েছে।

শুক্রবার ভোররাতে ইরানের রাজধানী তেহরানসহ বিভিন্ন জায়গায় সামরিক ও পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ