‘বি’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের সেমিফাইনাল নিশ্চিত করতে চায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ করাচিতে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা। ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে রান রেটে এগিয়ে থাকার সুবাদে ‘বি’ গ্রুপে টেবিলের শীর্ষে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জিতলে বা ১ পয়েন্ট পেলেই সেমিফাইনালের টিকিট পাবে প্রোটিয়ারা।

দলের অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা বলেন, ‘আমাদের সামনে সহজ সমীকরণ জিতলেই সেমিফাইনাল। আমরা এই সমীকরণকে সামনে রেখেই মাঠে নামবো। এছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।’

গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় ইতোমধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নিয়েছে ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৫ উইকেটে এবং আফগানিস্তানের কাছে ৮ রানে হারে ইংলিশরা। শেষ ম্যাচে জয় দিয়ে এবারের হতাশার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মিশন শেষ করতে চায় ইংল্যান্ড। দলের অধিনায়ক জশ বাটলার বলেন, ‘এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আমরা ভাল করতে পারিনি। তবে শেষ ম্যাচ জিততে চাই। যাতে জয় দিয়ে আসর শেষ করতে পারি।’

এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ৭০ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড। এরমধ্যে ৩৪ ম্যাচে প্রোটিয়ারা এবং ৩০ ম্যাচ জিতেছে ইংলিশরা। ১টি ম্যাচ টাই ও ৫টি পরিত্যক্ত হয়েছে।

ইংল্যান্ড দল : জশ বাটলার (অধিনায়ক), জোফরা আর্চার, গাস অ্যাটকিনসন, টম ব্যান্টন, হ্যারি ব্রুক, ব্রাইডন কার্স, বেন ডাকেট, জেমি ওভারটন, জেমি স্মিথ, লিয়াম লিভিংস্টোন, আদিল রশিদ, জো রুট, সাকিব মাহমুদ, ফিল সল্ট, মার্ক উড।

দক্ষিণ আফ্রিকা দল : তেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), টনি ডি জর্জি, মার্কো জানসেন, হেনরিচ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, আইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, উইয়ান মুল্ডার, লুঙ্গি এনগিডি, কাগিসো রাবাদা, রায়ান রিকেল্টন, তাবরাইজ শামসি, ট্রিস্টান স্টাবস, রাসি ফন ডার ডুসেন ও কর্বিন বশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ