চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করলে বিএনপিতে স্থান হবে না
Published: 1st, March 2025 GMT
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এম জি মাসুম রাসেল বলেছেন, রাজনীতি করতে হলে চরিত্র ভালো করতে হবে। চরিত্র খারাপ করে রাজনীতি করলে একসময় জনরোষের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে হয়।
নারায়ণগঞ্জ থেকেও অনেকেই পালিয়েছে। অত্যাচার, নির্যাতন, খুন ও গুম করে ক্ষমতায় থাকা যায়না। ক্ষমতায় থাকতে হলে মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে হয়।
মানুষের ভালোবাসা আদায় করতে পারলে আওয়ামী লীগের মত দিনের ভোট রাতে দিতে হবে না। সৎ ও ভালো মানুষের স্থান সব সময় মানুষের হৃদয়ে থাকে। তাই আগামী নির্বাচনে বিজয়ী হতে বিএনপিকে ভালো কাজ করে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে।
আমাদের নেতা তারেক রহমানের পরিস্কার নির্দেশনা রয়েছে চাঁদাবাজি ও মাস্তানি করলে বিএনপিতে স্থান হবে না। কতিপয় বিএনপি নামধারী ও দুস্কৃতিকারীদের অপকর্মের কারণে দীর্ঘ ১৭ বছর অন্দোলন সংগ্রাম করে অর্জিত সফলতাকে নষ্ট করতে দেওয়া হবে না।
শনিবার (১ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে মধ্য সানারপাড় এলাকায় নাসিক ১ থেকে ৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির নির্দেশে সভায় উপস্থিত সকল নেতাকর্মীদের কাছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা।
এছাড়াও অতিথিদের বক্তব্য দেওয়ার আগে দলীয় অগ্রগতি সম্পর্কে উপস্থিত কর্মীদের কাছ থেকে উন্মক্ত মতামত গ্রহণ করা হয়। মতামত প্রদানকালে ওয়ার্ড কমিটিতে যেন কিছুতেই আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সংগঠনের লোকজন স্থান না পায়, সে বিষয়টির প্রতি গুরুত্বদেন নেতাকর্মীরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো.
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এম আর গণি মোস্তফা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রহমান রাজিব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা, সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন মির্জা জনি, যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম, মো: শাহীন আহম্মেদ, মেহেদী হাসান (মিঠুন), আক্তার হোসেন, সদস্য আনিসুল হক বাবু, আক্তার হোসেন টুটুল, মো: ইসমাঈল খান ও মো: হাসানুজ্জামান লিমন (সহ-দপ্তর) ও শরিফুর রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ আলম মাস্টার, যুগ্ম আহ্বায়ক আহম্মেদ হুমায়ুন কবির, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল হোসেন (সুহিন), লুৎফর রহমান রাসেল, আশরাফুল ইসলাম, মো: শহীদুল্লাহ প্রধান সেলিম, মো: মনোয়ার বিন রশিদ (কর্ণেল অব.), সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু (দপ্তরের দায়িত্বে), মো: আল আমিন, জাহিদুল ইসলাম, আল আমিন শেখ, মো: ইব্রাহিম খলিল, মো: মিজান, মো: ইউসুফ মোল্লা স্বপন, খাজা মহিউদ্দিন হিরা, মো: মিরাজ, মো: মনির হোসেন, মো: রিয়াজ উদ্দিন, মো: জাহিদুল ইসলাম রনি, সোহাগ মিয়া, মো: সফিকুল ইসলাম প্রিন্স, মো: সুমন মিয়া, মো: রাজু আহম্মেদ, মো: আল আমিন জমাদ্দার, ইঞ্জি. রাসেল পাটোয়ারী ও মো: শাহ আলম।
সভাশেষে স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ও সদস্য পদের জন্য সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি এম জে মাসুম রাসেল। একই দিন বিকেল ৪ টায় একই অতিথিদের উপস্থিতিতে গোদনাইল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নাসিক ৬ থেকে ১০ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ স দ ধ রগঞ জ থ ন ল ইসল ম উপস থ ত কম ট র সদস য রহম ন ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!
সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন।
এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন।
এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।
একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।
নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।
যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়।
২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।