জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ভাষা-সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার কথাই বলে
Published: 1st, March 2025 GMT
দেশের সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষার আন্দোলন হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ এলাকার ছবির হাট চত্বরে আয়োজিত হলো ‘বহু ভাষার সন্ধ্যা’। তিন বছর ধরে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক কর্মীদের উদ্যোগে এ আয়োজনটি হয়ে আসছে। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল—প্রতিরোধে বাঁচে সংস্কৃতি। নানা জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় লড়াই-সংগ্রামের বিষয়টি প্রাধান্য পায় অনুষ্ঠানে।
বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়া বহু ভাষার সন্ধ্যায় প্রধান আলোচক ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিবিষয়ক লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের পর আমরা ইনক্লুসিভিটি শব্দটি বারবার শুনেছি। দেশের সব জাতিগোষ্ঠীর ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চাকে ধারণ করতে না পারলে একটি ইনক্লুসিভ সমাজ কখনো গড়ে তোলা সম্ভব না। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে সব ভাষার মানুষের সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চা যেভাবে গুরুত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতা পায়, বাংলাদেশেও সেটি কেন হবে না? চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান কিন্তু আমাদের এ অনুপ্রেরণা দেয় যে সব ভাষার মানুষ তাঁদের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নিয়ে এ দেশে মাথা উঁচু করে থাকবে। সমান নাগরিক অধিকার ভোগ করবে।’
দর্শকসারি থেকে উঠে এলেন কৃষক কুদ্দুস মুন্সী। কৃষকদের দুঃখ নিয়ে গাইলেন নিজের লেখা ও সুর করা গান.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’