গ্রিসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দুই বছর পূর্তিতে বিক্ষোভ, ধরপাকড়
Published: 1st, March 2025 GMT
গ্রিসে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার এথেন্সে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়েছে। রাজধানী এথেন্স ও দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর থেসালোনিকিসহ দেশজুড়ে হাজারো বিক্ষোভকারী সড়কে নেমে আসেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। কিছু জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, এথেন্স থেকে ৮০ জনের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আহত হয়েছেন পাঁচজন।
২০২৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ৫৭ জন নিহত হন। বেশির ভাগই ছিলেন শিক্ষার্থী। দুর্ঘটনা কয়েক দশক আগে দেশটিতে বিদ্যমান যে অব্যবস্থাপনা ছিল, তার প্রতীক হয়ে উঠেছে।
ধর্মঘটে সাড়া দিয়ে গ্রিসের বিভিন্ন শহরে গতকাল হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। গত কয়েক বছরে দেশটিতে এত বেশি মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা যায়নি। এত বেশি মানুষ রাস্তায় নামায় সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান প্রায় অচল হয়ে পড়েছিল।
বিক্ষোভকারীরা সরকারকে উদ্দেশ্য করে ‘খুনি’ বলে স্লোগান দেন। এথেন্সে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ৫৭ বছর বয়সী ক্রিস্টোস মেইন বলেন, ‘ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকার কিছুই করেনি। এটা কোনো দুর্ঘটনা ছিল না, এটা ছিল হত্যাকাণ্ড।’
গতকাল এথেন্সের পার্লামেন্টের সামনের সিনট্যাগমা চত্বরে মানুষের ঢল নেমেছিল। স্প্রে দিয়ে চত্বরের মাঠে তাঁরা নিহত ব্যক্তিদের নাম লাল রং দিয়ে লিখে দেন। বিক্ষোভকারীদের ‘আমি নিশ্বাস নিতে পারছি না’ বলেও স্লোগান দিতে দেখা যায়। ২০২৩ সালের ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার এক নারী জরুরি বিভাগকে কল দিয়ে এই কথা বলেছিলেন। এটাই ছিল তাঁর শেষ বাক্য।
এথেন্সের বিক্ষোভ একটা সময় পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ছিল। কিন্তু হুড পরা তরুণদের একটি দল পুলিশকে লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা ছুড়তে শুরু করলে বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনে সামনের ব্যারিকেড ভাঙতে চেষ্টা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দাঙ্গা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান ব্যবহার করে। তখন বিক্ষোভকারীরা আশপাশ এলাকায় ছড়িয়ে যান। বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলতে থাকে।
এথেন্সের পাশাপাশি দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর থেসালোনিকিতেও বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘাত হয়। সেখানে বিক্ষোভকারীরা ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে আকাশে কালো বেলুন ওড়ান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র ন দ র ঘটন সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৭৮০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক
বেসরকারি খাতের পূবালী ব্যাংক ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড পরিচালন মুনাফা করলেও বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হাজার কোটি টাকা ছাড়ায়নি। গত বছর শেষে পূবালী ব্যাংকের নিট মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৭৮০ কোটি টাকা। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি নিট মুনাফা করেছিল ৬৯৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে ব্যাংকটির মুনাফা ৮২ কোটি টাকা বা প্রায় ১২ শতাংশ বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করা হয়।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদনের পাশাপাশি গত বছরের জন্য লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয় গতকালের এই সভায়। গত বছরের জন্য ব্যাংকটি ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। যার মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ। ২০২৩ সালেও ব্যাংকটি একই হারে শেয়ারধারীদের লভ্যাংশ দিয়েছিল।
ব্যাংকসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংক ঋণের সুদ থেকে ১ হাজার ৫১৩ কোটি টাকা আয় করেছে। বিনিয়োগ, কমিশন, মুদ্রা বিনিময় ও ব্রোকারেজ থেকে আয় করেছে ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তাতে সব মিলিয়ে আয় হয় ৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। বিদায়ী বছরে বেতন-ভাতাসহ নানা খাতে খরচ হয় ১ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা। ফলে পরিচালন মুনাফা হয় ২ হাজার ৩০১ কোটি টাকা। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করে ৯৬১ কোটি টাকা। এরপর কর পরিশোধের পর নিট বা প্রকৃত মুনাফা হয় ৭৮০ কোটি টাকা।
জানতে চাইলে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভবিষ্যতের কথা বিবেচনায় আমরা চাহিদার বেশি নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক এই পরামর্শ দিয়েছে। খেলাপির তুলনায় বেশি সঞ্চিতি রাখার মাধ্যমে ব্যাংকটির ভিত্তি মজবুত করা হয়েছে।
ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পূবালী ব্যাংকের আমানত বেড়ে হয়েছে ৭৪ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এ সময়ে ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় ৬২ হাজার ৯২৫ কোটি টাকা। আর খেলাপি ঋণের হার কমে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৬৭ শতাংশে। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন এখন ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। আর কর্মীর সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৮। সারা দেশে ৫০৮টি শাখা ও ২২৭টি উপশাখা রয়েছে ব্যাংকটির। বর্তমানে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি নেটওয়ার্ক পূবালী ব্যাংকের।