বগুড়ার একটি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে গর্ভের সন্তানসহ রোখসানা আক্তার নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় তারা হাসপাতালের সাইনবোর্ড এবং দরজা ভাঙচুর চালিয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। 

শনিবার (১ মার্চ) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের জলেশ্বরীতলা এলাকায় অবস্থিত এনাম ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটনাটি ঘটে।

মারা যাওয়া রোখসানা বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপাড়া গ্রামের রুবেল হোসেনের স্ত্রী।

আরো পড়ুন:

নাইক্ষ্যংছড়িতে মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি আহত

রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

রোখসানার ভাই সাফিউল ইসলাম অভিযোগ করেন, “শনিবার রোখনাসার সন্তান প্রসবের ব্যথা ওঠে। সকাল ১১টার দিকে তাকে ক্লিনিকে নিয়ে আসা হয়। সেসময় তাদের (ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ) সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলেন, রোগীকে নিয়ে আসেন ইমিডিয়েট সিজার করিয়ে দেব। রোগীকে ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক ছিল না। তারা জানায়, ডাক্তার কিছুক্ষণ পর আসবেন। রোগী ভর্তির প্রায় ১২ ঘণ্টা পর ক্লিনিকে ডাক্তার আসেন।” 

তিনি আরো বলেন, “রোগীর অবস্থা ভালো না থাকায় তাকে চিকিৎসার জন্য অন্যত্র নিতে বলা হয়। পরে রোগীকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রোখসানাকে গর্ভের সন্তানসহ মৃত ঘোষণা করেন।”

বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, “জেলা প্রশাসক এবং সিভিল সার্জনসহ আমাদের ডিপার্টমেন্টের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

বগুড়ার ভারপ্রাপ্ত সি‌ভিল সার্জন ডা.

ফারজানুল ইসলাম ব‌লেন, “বিষয়‌টি আমরা জা‌নি। এই ঘটনায় তদন্ত হ‌বে। নিহ‌তের পরিবার থে‌কে য‌দি অ‌ভি‌যোগ দেওয়া হয় তাহলে অ‌ভিযোগ‌ অনুযায়ী আমরা কাজ কর‌বে। অ‌ভি‌যোগ না দি‌লে আমরা অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা নে‌ব। ঘটনা জানার পর থে‌কেই আমা‌দের অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হ‌য়ে গে‌ছে। তদ‌ন্তে অ‌ভি‌যোগ প্রমা‌ণিত হ‌লে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হ‌বে।”

ঢাকা/এনাম/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল

দ্রুত সময়ের মধ্যে কম খরচে মামলা নিষ্পত্তি করে মানুষকে মামলার অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে আইন মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তিনটি লক্ষ্য নিয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইনের সংশোধন করা হচ্ছে। আগামী মাস থেকে এ সংশোধনের কাজ শুরু হবে। আমাদের নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। গরীব মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। 

আজ শনিবার রাজধানীর বেইলি রোডে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার (লিগ্যাল এইড ) কার্যালয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত অধ্যাদেশ-২০২৫ নিয়ে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার পক্ষ থেকে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এর খসড়া উপস্থাপন করা হয়।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচারকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। দেশে প্রতি বছর ৫ লাখ মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে লিগ্যাল এইডে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়। আগামীতে এই হার ২ লাখে নিয়ে যাওয়ার আমাদের লক্ষ্য রয়েছে। এতে মামলার সংখ্যা ৪০ শতাংশ কমবে। এজন্য আইন পরিবর্তন করতে হবে। ছোট ছোট যেমন আপোষযোগ্য পারিবারিক মামলা, চেক ডিজঅনারসহ অন্যান্য মামলা আপসে বাধ্যতামুলক করা হবে।

তিনি বলেন, আদালতে মামলার যে অস্বাভাবিক চাপ, তা শুধুমাত্র বিচারিক কাঠামোকে নয়, ন্যায় বিচারপ্রাপ্তির সম্ভাবনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। এ চাপ কমাতে হলে বিকল্প বিরোধ নিস্পত্তি পদ্ধতি আরও গুরুত্ব দিতে হবে। নতুন মামলার চাপ কমানো সময়ের দাবি। এ জন্য মামলার আগে আপস-মধ্যস্থতা বাধ্যতামুলক করা গুরুত্বপুর্ণ। 

দ্রুত সময়ে অল্প খরচে মামলার নিষ্পত্তি করতে সিভিল প্রসিডিউর কোড ইতিমধ্যে সংশোধন করা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধি সংস্কারের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আগামী এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবে। এ সময় লিগ্যাল এইডের মামলা নিষ্পত্তিতে একজন বিচারকের জায়গায় ৩ জন বিচারক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।

মতবিনিময় সভায় অংশীজনদের মধ্যে বক্তব্যে দেন জাতীয় আইনগত প্রদান সংস্থার পরিচালক আজাদ সুবহানি, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. খোরশেদ আলম, ঢাকা জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার সায়েম খান প্রমুখ। এছাড়া চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা জেলার আইনজীবী সমিতি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউএনডিপি প্রতিনিধি, জিআইজেড প্রতিনিধি, আইএলও, ব্রাক, ব্লাস্ট ও প্রশিকার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, লিগ্যাল এইডের প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক ঘাটতি আছে। গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ গরীব ও অসহায় মানুষ জানে না সরকারের এমন একটি আইনিসহায়তা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রচারের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহরে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে বলে মত দেন তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কম খরচে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে কাজ করছে মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল
  • সংস্কারের জন্য তিন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে আইন মন্ত্রণালয়: আসিফ নজরুল