আধা ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে শুধু ডিম-মুরগি নিয়ে ফিরলেন ফজিলাতুন্নেছা
Published: 2nd, March 2025 GMT
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ গাড়ি থেকে সুলভ মূল্যে গরুর মাংস কেনার জন্য আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় আসেন ষাটোর্ধ্ব ফজিলাতুন্নেছা বেগম। এরপর ওই গাড়ির পেছনে আধা ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষার পর পণ্য কেনার সুযোগ পান তিনি। কিন্তু ততক্ষণে গরুর মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়। শুধু ডিম-মুরগি নিয়েই বাসায় ফেরেন তিনি।
আজ রোববার খামারবাড়িতে ফজিলাতুন্নেছার মতো আরও অন্তত ৩০ জন গরুর মাংস কোনার সুযোগ পাননি। একদমই কোনো পণ্য না কিনতে পেরে ফিরে গেছেন প্রায় ১৫ জন।
ফজিলাতুন্নেছা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা বছর তো সেভাবে গরুর মাংস খেতে পারি না। এখন রোজা শুরু হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ভালো কিছু খেতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘এখানে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি হয় শুনে এসেছিলাম। কিন্তু আমার সিরিয়াল আসার আগেই গরুর মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়।’
পবিত্র রমজান উপলক্ষে ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে সুলভ মূল্যে পাস্তুরিত গরুর দুধ, ফার্মের মুরগির ডিম, ড্রেসড (চামড়া ছাড়া) ব্রয়লার মুরগি ও গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২৮ রমজান পর্যন্ত এ বিক্রয় কার্যক্রম চলবে।
প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা, চামড়া ছাড়া (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, পাস্তুরিত দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১৪ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একজন ভোক্তার সব মিলিয়ে ১ হাজার ৯৪ টাকা লাগছে। বাজার থেকে এসব পণ্য কিনতে আরও অন্তত ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বেশি লাগত।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা প্রতিদিন ৬০ হাজার পিস ডিম, ৬ হাজার লিটার পাস্তুরিত দুধ, ২ হাজার কেজি চামড়া ছাড়া (ড্রেসড) ব্রয়লার মুরগি ও দুই থেকে আড়াই হাজার কেজি গরুর মাংস বিক্রি করছে।
গত পরশু থেকেই এই বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হয়। গত দুই দিনের অভিজ্ঞতা থেকে আজ সকাল ১০টার পরই এসব পণ্য নেওয়ার জন্য লোকজন জড়ো হন। খামারবাড়িতে পণ্য বিক্রি করা গাড়ির হিসাবরক্ষক মোকাদ্দাস ইসলাম বলেন, ‘আমাদের গাড়ি এখানে আসার আগেই ৪০ থেকে ৫০ জনের লাইন ছিল। গাড়ি দাঁড়ানোর পর সেটি আরও দীর্ঘ হয়। আজ গাড়ি থেকে প্রায় ১৫০ জন পণ্য কিনতে পেরেছেন। মোটামুটি ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট সময়ের মধ্যে সব পণ্য বিক্রি শেষ হয়েছে।’
মোকাদ্দাস ইসলাম বলেন, তাঁদের গাড়িতে ৫০ কেজি গরুর মাংস, ৪০ কেজি মুরগির মাংস, ১৪০ লিটার দুধ ও ১ হাজার ৮০০ পিস ডিম ছিল। অর্থাৎ প্রথম ৪০ থেকে ৫০ জনের মধ্যেই গরু ও মুরগির মাংস বিক্রি শেষ হয়ে যায়।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এই কার্যক্রমে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ), দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য অংশীজন ও প্রান্তিক খামারিরা সহযোগিতা করবেন।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, রমজান মাসে বাজারে মাছের দাম মোটামুটি স্থিতিশীল থাকায় আলাদাভাবে মাছ বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়নি। বিএফডিসির বিক্রয়কেন্দ্রে সামুদ্রিক মাছ, কাপ্তাই লেক থেকে আহরিত রেডি টু কুক ফিস বা রান্নার জন্য প্রস্তুত মাছ পাওয়া যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ষ হয়
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার
দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।
দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’
তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’
আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা