মণিপুর নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বড় সিদ্ধান্ত
Published: 2nd, March 2025 GMT
সহিংসতা-বিধ্বস্ত উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুর নিয়ে বড় নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগামী ৮ মার্চ থেকে মণিপুরে জনজীবন স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মণিপুরে সাধারণ মানুষের অবাধ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (১ মার্চ) দিল্লিতে এক জরুরি বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মূলত মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন, মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা, মণিপুর রাজ্য প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তারা।
আরো পড়ুন:
ভারতে বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ
ভারতে ভয়াবহ তুষারধস, চাপা ৪১ জনের মধ্যে উদ্ধার ১৬
ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী ৮ মার্চ থেকে যাতে রাজ্যের সর্বত্র মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন, সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে শান্তি ভাঙতে চাইবে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
তিনি আরো জানান, কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরে স্থায়ীভাবে শান্তি পুনরুদ্ধার করতে এবং এই বিষয়ে সব প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মণিপুরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তে নির্ধারিত প্রবেশপথের উভয় দিকে বেড়া দেওয়ার কাজ ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহ বলেন, সব ধরনের চাঁদাবাজির ক্ষেত্রেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মণিপুরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর নির্ধারিত প্রবেশপথের উভয় দিকে বেড়ার কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এন বীরেন সিং আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর এই প্রথম নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হলো।
উল্লেখ্য, সংরক্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে অশান্তির শুরু হয় মণিপুরে। কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে নারীদের ওপর অত্যাচার, বিবস্ত্র করে ঘোরানো, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ, বোমা, গুলির ঘটনা ঘটে। মণিপুরের সহিংসতায় প্রায় আড়াই শতাধিকের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার মানুষ। ভিটেহারা আরো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। এমনকি সহিংসতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশের কাছ থেকে কয়েক শতাধিক অস্ত্র লুট হয়।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।