সহিংসতা-বিধ্বস্ত উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুর নিয়ে বড় নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগামী ৮ মার্চ থেকে মণিপুরে জনজীবন স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, মণিপুরে সাধারণ মানুষের অবাধ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ বাধা দেয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। 

মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার (১ মার্চ) দিল্লিতে এক জরুরি বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মূলত মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতেই এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন, মণিপুরের রাজ্যপাল অজয় কুমার ভাল্লা, মণিপুর রাজ্য প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তারা। 

আরো পড়ুন:

ভারতে বাংলাদেশের নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ

ভারতে ভয়াবহ তুষারধস, চাপা ৪১ জনের মধ্যে উদ্ধার ১৬

ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী ৮ মার্চ থেকে যাতে রাজ্যের সর্বত্র মানুষ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন, সে বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে শান্তি ভাঙতে চাইবে যারা, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।

তিনি আরো জানান, কেন্দ্রীয় সরকার মণিপুরে স্থায়ীভাবে শান্তি পুনরুদ্ধার করতে এবং এই বিষয়ে সব প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

মণিপুরের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্তে নির্ধারিত প্রবেশপথের উভয় দিকে বেড়া দেওয়ার কাজ ত্বরান্বিত করার প্রয়োজনীয়তার উপরও জোর দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অমিত শাহ বলেন, সব ধরনের চাঁদাবাজির ক্ষেত্রেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মণিপুরের আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর নির্ধারিত প্রবেশপথের উভয় দিকে বেড়ার কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত। 

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এন বীরেন সিং আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর সেখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়। রাষ্ট্রপতি শাসন জারির পর এই প্রথম নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হলো।

উল্লেখ্য, সংরক্ষণ ইস্যুকে কেন্দ্র করে গত ২০২৩ সালের ৩ মে থেকে অশান্তির শুরু হয় মণিপুরে। কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে নারীদের ওপর অত্যাচার, বিবস্ত্র করে ঘোরানো, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, সড়ক অবরোধ, বোমা, গুলির ঘটনা ঘটে। মণিপুরের সহিংসতায় প্রায় আড়াই শতাধিকের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার মানুষ। ভিটেহারা আরো প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। এমনকি সহিংসতার সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন থানা থেকে পুলিশের কাছ থেকে কয়েক শতাধিক অস্ত্র লুট হয়।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ