সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে ঘিরে দেশে যে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে সেটিকে নথিভুক্ত করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

রোববার (২ মার্চ) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুইস ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী কার্যালয়ের সিনিয়র মানবাধিকার উপদেষ্টা হুমা খান সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এসব মন্তব্য করেন।

এসময় ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বছরের পর বছর ধরে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত সব নৃশংসতা নথিভুক্ত করার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, এ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত সব নৃশংসতার যথাযথ নথির প্রয়োজন রয়েছে। এই ডকুমেন্টেশন না হলে সত্য জানা এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা কঠিন।

আবাসিক প্রতিনিধি লুইস জানান, এক্ষেত্রে জাতিসংঘ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে এবং বাংলাদেশের জনগণকে এ বিষয়ে সক্ষম করে গড়ে তুলতে সহায়তা করতে প্রস্তুত।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অবমাননা সম্পর্কিত অনুসন্ধান প্রতিবেদনের জন্য জাতিসংঘকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এটি সহজ কাজ ছিল না। তারপরও সময়মতো এসেছে। জাতিসংঘ রিপোর্ট প্রকাশ করেছে দেখে আমরা খুবই আনন্দিত।

আবাসিক সমন্বয়কারী লুইস প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন, জাতিসংঘের মানবাধিকারের জন্য হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক আগামী ৫ মার্চ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৫তম অধিবেশন চলাকালীন সদস্য দেশগুলোকে এর ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করবেন।

আবাসিক সমন্বয়কারী লুইস বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস আগামী ১৩ থেকে ১৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করবেন। তার সফরে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ত্রাণ সরবরাহ কমে যাওয়ায় সৃষ্ট সংকট বিশ্বব্যাপী নজরে আসবে।

তিনি বলেন, আমরা অর্থের সংকুলান নিয়ে খুব চিন্তিত। প্রতি মাসে রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে ১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন।

এএ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ