যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা এখন পুরোটাই ধ্বংসস্তূপ। সেখানে কেবল হাতে গোনা কয়েকটি ভবন আস্ত রয়েছে, বাকি সব ধূলায় মিশে গেছে। এমন পরিস্থিতিতেও রমজান উপলক্ষে রঙ-বেরঙের সাজসজ্জা করেছেন ফিলিস্তিনিরা। বিভিন্ন রঙের বেলুন আর কাগজ দিয়ে সাজিয়েছেন তাদের জন্মভূমি, স্বাগত জানিয়েছেন রোজাকে।

শনিবার দক্ষিণ গাজায় ধ্বংসস্তূপের ঢিবির মধ্য দিয়ে কয়েকশ মিটার দীর্ঘ লাল রঙে আচ্ছাদিত টেবিল তৈরি করেছেন ফিলিস্তিনিরা। সেখানে পবিত্র রমজান মাসের প্রথম দিনে রোজা ভাঙতে একসঙ্গে জড়ো হন তারা। সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিবেশে ইফতার করেন তারা।

ধ্বংসস্তূপের কাছে সম্মিলিতভাবে এই ইফতারের আয়োজন করেছিলেন মালাক ফাদ্দা। তিনি বলেন,  ‘আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং আমাদের চারপাশের সবকিছু হৃদয়বিদারক। তাই আমরা এ রাস্তায় আনন্দ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঠিক যেমনটি যুদ্ধের আগে ছিল।’

মোহাম্মদ আবু আল-জিদিয়ান বলেন, ‘আমরা এখানে ধ্বংসস্তূপের মাঝে আছি এবং ব্যথা এবং ক্ষত সত্ত্বেও আমরা অবিচল আছি। আমরা আমাদের জমিতে ইফতার খাচ্ছি এবং আমরা এ জায়গা ছেড়ে যাব না।’

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ভোর হওয়ার আগে যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা আলোকিত করে সেহেরির জন্য অনেককে ভিড় করতে দেখা যায়।

উত্তর গাজার ক্ষতিগ্রস্ত জাবালিয়া শিবিরের বাসিন্দা ওমর আল-মাধৌন বলেন, ‘আমার বাচ্চারা মাঝে মাঝে আমার কাছে কাপড় এবং খাবার চায়, কিন্তু আমি তাদের খরচ জোগাতে পারি না কারণ আমি দেড় বছর ধরে কর্মহীন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ধ্বংসের মাঝে বসে আছি, আমাদের জীবন কীভাবে পরিচালনা করব তা জানি না। আমরা আরও আশঙ্কা করছি যে যুদ্ধ আবার ফিরে আসবে, আরও ধ্বংস ডেকে আনবে।’

সূত্র: আল-আরাবিয়া

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: রমজ ন ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বকাপে জায়গা করতে বিশ্বকাপজয়ীকে কোচের দায়িত্ব দিল ইতালি

দেশের হয়ে বিশ্বকাপ খেলা যে কতটা গৌরবের আর আনন্দের, সেটা একজন বিশ্বকাপ জয়ের-অভিজ্ঞতাসম্পন্ন খেলোয়াড়ের চেয়ে আর কে ভালো বোঝাতে পারবেন?

আর এমন ভাবনা থেকেই এবার গানারো গাত্তুসোকে জাতীয় ফুটবল দলের কোচ নিয়োগ দিয়েছে ইতালি। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করা নিয়ে শঙ্কায় আছে। এর আগে খেলতে পারেনি ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে। টানা তৃতীয় আসর যাতে দর্শক হয়ে না থাকতে হয়, সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী গাত্তুসোকে দায়িত্ব দিয়েছে ইতালিয়ান ফুটবল ফেডারেশন এফআইজিসি।

২০২৬ বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান বাছাইয়ে ইতালি খেলছে ‘আই’ গ্রুপে। পাঁচ দলের গ্রুপ থেকে শুধু শীর্ষ স্থানধারী দলই বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা করতে পারবে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দল প্লে-অফে খেলার সুযোগ পাবে। এই মুহূর্তে ‘আই’ গ্রুপে ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে নরওয়ে। ৩ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইসরায়েল। ইতালির অবস্থান তিনে, ২ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট।

গত সপ্তাহে নরওয়ের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হারার পরই এফআইজিসি কোচ লুসিয়া স্পালেত্তিকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে বিদায় নিশ্চিতের পরও সোমবার মল দোবার বিপক্ষে ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়ান স্পালেত্তি, ম্যাচটি ইতালি ২-০ ব্যবধানে জেতে।

নরওয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের চারটিতেই জেতায় ইতালি এখন চাপে আছে। হাতে এখনো ৬টি ম্যাচ বাকি। তবে শীর্ষস্থানে থাকতে হলে নিজেদের বাকি সব ম্যাচ তো জিততেই হবে, নরওয়েকেও পয়েন্ট হারাতে হবে। আর এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালি দলের দায়িত্ব নিচ্ছেন গাত্তুসো।

৪৭ বছর বয়সী গাত্তুসো ২০০০ থেকে ২০১০ পর্যন্ত ইতালির জাতীয় দলে খেলেছেন। এর মধ্যে ২০০৬ বিশ্বকাপজয়ী দলের সেরা পারফরমারদের একজন ছিলেন। সব ম্যাচেই শুরুর একাদশে ছিলেন, পরে জায়গা করে নিয়েছিলেন বিশ্বকাপের অলস্টার একাদশেও। ২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ক্লাব সিওনে খেলোয়াড় কাম কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেন। তখন থেকে গত ১২ বছরে মোট ৯টি ক্লাবের ডাগআউটে দাঁড়িয়েছেন গাত্তুসো। যার মধ্যে আছে নিজের সাবেক ক্লাব এসি মিলান এবং ভ্যালেন্সিয়া ও মার্শেই। সর্বশেষ ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব হাইদুক স্প্লিটের দায়িত্বে ছিলেন, যা গত মাসে পারস্পরিক সমঝোতায় ছেড়ে দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোচ হিসেবে মোট ৩৭৬টি ম্যাচে ডাগআউটে দাঁড়িয়ে গাত্তুসোর জয়ের হার ৪২.৮২ শতাংশ। জিতেছেন ১৬১টিতে, ড্র ১০৮ আর হার ১০৭-এ।
এখন দেখার বিষয়, ইতালি দলে তার সাফল্যের হার কতটা হয়, বিশেষ করে যখন দলের দরকার শতভাগ জয়। ইতালি জাতীয় দল তাদের পরবর্তী ম্যাচ খেলবে ৫ সেপ্টেম্বর এস্তোনিয়ার বিপক্ষে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ