Samakal:
2025-07-31@21:58:50 GMT

ঘুরেফিরে সুতির পোশাকেই নজর

Published: 2nd, March 2025 GMT

ঘুরেফিরে সুতির পোশাকেই নজর

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী বিপণিবিতান। নিউমার্কেট হিসাবে খ্যাত এই মার্কেট ঈদ বাজারের প্রধান কেন্দ্র। তখনও ঈদের বাকি এক মাস, এরই মধ্যে মা ও বোনকে নিয়ে ঈদবাজার করতে এসেছেন মো. রিয়াদ। ঈদ মার্কেটে ভিড় এড়াতে তিনি আগেভাগে পরিবারের জন্য কেনাকাটা করতে এসেছেন। ভিড় না থাকায় দামাদামি ও পছন্দমতো কেনাকাটার সুযোগও থাকে। শুধু রিয়াদ নন, রমজান শুরুর আগে বা রমজানের প্রথম সপ্তাহেই অনেকে ঈদের কেনাকাটা সেরে নেন। ব্যবসায়ীরাও রমজানের আগেই ক্রেতাদের জন্য পছন্দমতো ঈদ পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন। তবে ঈদবাজারকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। 
শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ : ঈদের পোশাকের তালিকায় শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ না হলেই নয়। পোশাকটাও হওয়া চাই একটু জমকালো। বিপণিবিতানের আলিফ ফ্যাশনের বিক্রেতা বলেন, ‘ঈদের বাজারে একটু জমকালো পোশাকের মধ্যে জর্জেট, সিল্কের চাহিদা বেশি। আর এই সঙ্গে সুতি, কটন কিংবা ভয়েল কাপড় তো সব সময়ই বিক্রি করছি।’ বিভিন্ন রঙের জর্জেট ও সিল্কের থ্রিপিস, গাউন, ওয়ান পিস রয়েছে বাজারে। সিল্কের ওপর বিভিন্ন রঙের ডিজিটাল প্রিন্টের চাহিদাও রয়েছে। আবার পুঁতি, পাড় বসানো ভারী কাজ করা জর্জেটের কামিজও পাওয়া যাবে এই ঈদে।
এই পোশাকগুলো পেয়ে যাবেন বিপণিবিতান (নিউমার্কেট), চিটাগং শপিং কমপ্লেক্স, সেন্ট্রাল প্লাজা, আখতারুজ্জামান সেন্টার, সিটি করপোরেশন সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেট, মতি টাওয়ার, মতি কমপ্লেক্স ও গুলজার টাওয়ারের দোকানগুলোয়। হাতের কাজ করা লিনেনের ওয়ান পিস, সেই সঙ্গে একটু ভিন্ন ধাঁচের টপ, ফতুয়া, কুর্তা পাওয়া যাবে এ মার্কেটগুলোয়। এ ছাড়া এই আবহাওয়ায় সুতি ও বাটিকের কামিজও পাওয়া যাবে। জর্জেট এবং সিল্ক কাপড়ের প্রতি গজ ১৫০ থেকে ৩৫০ টাকার মধ্যে পাবেন। আর সুতি ও লিনেনের দাম পড়বে গজপ্রতি ৬০ টাকা। জামার জন্য ক্রুশকাঁটা বা পুঁতি, ইয়ক পাবেন ১৫ টাকা থেকেই। শাড়ির জন্য যেতে পারেন বিপণিবিতান, শপিং কমপ্লেক্স, সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেট ও মতি টাওয়ারে। সাধ্যের মধ্যে বাটিক, সুতি, হাফসিল্ক, তাঁত ও জর্জেটের ওপর কাজ করা শাড়ি পাবেন ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে। 
শিশুর ঈদপোশাক : সামর্থ্যের মধ্যে শিশুর ঈদপোশাক পেয়ে যাবেন বিপণিবিতান ও সেন্ট্রাল প্লাজায়। এখানে নবজাতক থেকে শুরু করে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুর পোশাক রয়েছে। কথা হয় বিপণিবিতানের ইহসান শপের বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঈদ এবার গরমকালে হবে। তাই বাজারে শিশুদের জন্য সুতি, ভয়েল, লিনেন, কটন কাপড়ের পোশাক আনা হয়েছে।’ আর এই তালিকায় ছেলেবাচ্চাদের জন্য রয়েছে টি-শার্ট, বাটিকের ফতুয়া, শার্ট ও পাঞ্জাবি। ফতুয়া ও শার্টে রয়েছে বিভিন্ন প্রিন্ট আর টি-শার্টে থাকছে বিভিন্ন লেখা ও কার্টুন চরিত্র। 
এ ছাড়া পাঞ্জাবি-পায়জামা কিনতে পারেন শপিং কমপ্লেক্স ও লাকী প্লাজা থেকে। মেয়েশিশুদের জন্য কামিজ, কুর্তা, লেহেঙ্গা, স্কার্ট, ফ্রকও পেয়ে যাবেন

 এই মার্কেটগুলোয়। সেন্ট্রাল প্লাজা থেকে কিনতে পারেন পাশ্চাত্য ধাঁচের বিভিন্ন পোশাক যেমন স্কার্ট, টপ, শার্ট। বিক্রেতারা জানান, এখন কামিজের সঙ্গে শিশুরা গাউন, মেঝে ছোঁয়া ফ্রকগুলোও পরছে। চাইলে আপনি কাপড় কিনে বানিয়েও নিতে পারেন সাধ্যের মাঝে। কামিজ, লেহেঙ্গা কিনতে চাইলে বিপণী বিতান, সেন্ট্রালপ্লাজা ও শপিং কমপ্লেক্সে। এখানে কামিজ পাওয়া যাবে ৩৫০ টাকা থেকে। লেহেঙ্গার দামটা একটু বেশিই হবে। এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে কিনতে পারেন এই পোশাক।
ছেলেদের পোশাক : পাঞ্জাবি-পায়জামার বিভিন্ন দোকান রয়েছে বিপণি বিতানে। শপিং কমপ্লেক্সে এক থেকে দেড় হাজারের মধ্যে পাঞ্জাবি, ফতুয়া পাওয়া যাবে। আর টি-শার্ট, পোলো শার্ট, প্যান্ট পাবেন সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের দোতলায়।
ব্যবসায়ীরা যা বলছেন : বিপণি বিতানের সভাপতি মোহাম্মদ সাগির বলেন, ‘এবার ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঈদ অনুষ্ঠিত হবে। আশা করছি অন্যবারের তুলনায় এবার ভালো বেচাকেনা হবে। প্রতিটি দোকানে যুগোপযোগী প্রয়োজনীয় নতুন পণ্য দোকানে তুলেছে। মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা এখানে কেনাকাটা করতে আসেন। তাদের বাজেট মাথায় রেখে পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারা যাতে সুলভমূল্যে পছন্দের পণ্যটি কিনতে পারেন সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অধিকাংশ দোকান ফিক্সড প্রাইজ। ক্রেতাদের আর দামাদামির ঝামেলাও থাকবে না।’
সিঙ্গাপুর ব্যাংকক মার্কেটের সিনিয়র সহ সভাপতি হাসান দস্তগীর আজাদ বলেন, ‘ক্রেতাদের সুবিধা অনুযায়ী যুগোপযোগী সুলভ মূল্যে ঈদের পোশাক, কসমেটিক, জুতাসহ বিভিন্ন পণ্য তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে তারা মানসম্মত পণ্য বিক্রি করবেন। আমরা আশা করছি ক্রেতারা এই মার্কেটে এসে বিমুখ হয়ে ফিরবেন না।’ 
চকবাজারের মতি টাওয়ারের সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন,‘আমাদের মার্কেটে মধ্যবিত্ত লোকজন বেশি আসে। এখানে ৫০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে তরুণীদের পছন্দের থ্রি পিছ, লেহেঙ্গাসহ ঈদ পোশাক যেমন কিনতে পাবেন, তেমনি একই দামের মধ্যে শাড়িও মিলবে।’
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঈদ র ক ন ক ট ব যবস য় র কমপ ল ক স দ র জন য পছন দ

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ