লালনসহ গুণীজনের নাম বাদের পেছনে রাজনীতি
Published: 3rd, March 2025 GMT
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আবাসিক হলসহ বিভিন্ন ভবন থেকে লালন সাঁই, বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় (পিসি রায়), কবি জীবনানন্দ দাশসহ শহীদ বুদ্ধিজীবীর নাম বাদ দেওয়া নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। এ ঘটনায় খোদ শিক্ষা উপদেষ্টা অসন্তুষ্ট, শিক্ষার্থীরা বিরক্ত, খুবির বর্তমান প্রশাসন বিব্রত।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢালাওভাবে নাম বাদ দেওয়ার বিষয়টি যেভাবে প্রচার হচ্ছে, ঘটনাটি তেমন নয়। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী তিনটি ভবনের নাম বদল হয়েছে। অন্য ভবন যে নামে পরিচিত ছিল, সেই নামেই ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইচ্ছা করে কারও নাম বাদ দেওয়া হয়নি। স্থাপনাগুলোর নতুন নামকরণ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহ চলছে। আগামী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্যের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থাপনার নাম দেওয়া ও পরিবর্তনের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কিছু ছাত্র-শিক্ষকের বিরোধী ভূমিকা। নানা চাপ এড়াতে আগের নামে ফিরে গিয়ে নতুন আরেক বিতর্কে পড়েছে খুবির নতুন প্রশাসন।
শিক্ষকরা জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্থাপনার রাজনৈতিক নামকরণ না করার বিষয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ঐকমত্য ছিল। ১৯৯১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কোনো স্থাপনাই রাজনৈতিক ব্যক্তির নামে হয়নি। ২০১৬ সালে এই ধারার ছন্দপতন ঘটান তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ফায়েক উজ জামান। প্রথম মেয়াদের শেষে নিয়োগ বাণিজ্য, নির্মাণকাজে অনিয়মসহ নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের বড় অংশ তাঁর বিরোধিতায় নামেন।
ওই সময় ছাত্রদের নতুন হল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ছাত্রীদের নতুন হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে করা হয়। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ ক্ষুব্ধ হলেও প্রতিবাদ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। দ্বিতীয় দফায় উপাচার্য নিয়োগ পেতে নামকরণকেই ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন অধ্যাপক ফায়েক উজ জামান। ২০১৬ সালের ২২ অক্টোবর সিন্ডিকেটের ১৮৮তম সভায় ১৯টি ভবন ও স্থাপনার নতুন নামকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তখন একাডেমিক ভবন-১-কে ড.
এ ছাড়া টিএসসিকে লালন সাঁই মিলনায়তন, অতিথি ভবনকে মাইকেল মধুসূদনের নামে, কেন্দ্রীয় গবেষণাগারকে আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের নামে, মেডিকেল সেন্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর নামে, জিমনেশিয়ামকে সুলতানা কামালের নামে, আইইআর ভবনকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে, আবাসিক ভবনগুলোর মধ্যে প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতার নামে, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. সুখরঞ্জন সমাদ্দারের নামে, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব এবং লেকচারারস কোয়ার্টারকে শহীদ বুদ্ধিজীবী এস এম এ রাশিদুল হাসানের নামে করা হয়।
দেখা গেছে, চতুর্থ একাডেমিক ভবন, টিএসসি ও জিমনেশিয়ামের কাজ তখন শুরুই হয়নি। এসব নাম শুধু কাগজেই রয়েছে।
সূত্রটি জানায়, গণঅভ্যুত্থানের পর গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ৩৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে অন্যতম ছিল ক্যাম্পাসের সব স্থাপনা থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তির নাম বদল।
ওই দিন দাবি উত্থাপনকারীর মধ্যে শিক্ষার্থী আয়মান আহাদ বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিজম রেজিমের সবার নাম পরিবর্তন চেয়েছি। বিশেষ করে শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিযুদ্ধে খুলনায় নিহত বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের নামে করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু বিজ্ঞানী ও বুদ্ধিজীবীদের নামে করা স্থাপনার বিষয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য ছিল না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ছাত্রদের দাবির মুখে অধ্যাপক ড. এ টি এম জহির উদ্দিনকে প্রধান করে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ১২ ডিসেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নামের প্রস্তাব চায়। এর পর কমিটির প্রস্তাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে উত্থাপন করা হলে তারা সেটির অনুমোদন দিয়েছে। পরে গত ১২ ফেব্রুয়ারি অফিস আদেশ জারি করা হয়।
নতুন আদেশে দেখা গেছে, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের’ নাম পরিবর্তন করে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হল, ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের’ নাম বিজয়-২৪ হল, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনের নাম খুবির প্রথম উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রহমান প্রশাসনিক ভবন করা হয়েছে। মাইকেল মধুসূদন দত্ত অতিথি ভবন, কাজী নজরুল ইসলাম গ্রন্থাগার ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিক্ষা ভবনের (আইইআর) নাম বহাল রেখে অন্য ১৩টি ভবন ও স্থাপনা আগের নামে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দুই সিন্ডিকেট সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকে কয়েকজন জানান, ২০১৪ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমান বা জিয়াউর রহমানসহ কোনো রাজনৈতিক নেতার নামে স্থাপনা হয়নি। অন্যায়ভাবে সব নামকরণ করা হয়েছে। তখন আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সবাই একমত ছিলেন। বাকি নামগুলোর বিষয়ে কী হতে পারে, এটা নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ পরামর্শ দিতে পারছিলেন না। এ জন্য আগের নামে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব উঠলে সবাই সরল মনে সমর্থন জানান। কিন্তু এটা যে এভাবে সমালোচনা হবে, তারা বুঝতে পারেননি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘টিএসসি, জিমনেশিয়ামসহ কিছু ভবনের অস্তিত্ব তখন ছিলই না, তবু নামকরণ করা হয়েছে। নামকরণের ক্ষেত্রে সবার মর্যাদা ঠিক রাখা হয়নি। বসবাসের ছোট কোয়ার্টারের নাম শহীদ বুদ্ধিজীবীর নামে কখনোই মানানসই নয়। পিসি রায়ের নামে বড় একটি কলেজসহ বহু একক স্থাপনা রয়েছে। সেখানে একটি ভবনের নাম দেওয়া যুক্তিসংগত ছিল না। এমন অনেক নাম স্থাপনার সঙ্গে যাচ্ছিল না, এ জন্য বেশির ভাগই আমরা আগের নামে ফিরে গেছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নতুন নামকরণের বিষয়ে আলোচনা করছি। সবার মত নিয়ে এই অঞ্চলের বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে স্থাপনার নামকরণ করব।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত শ খ ম জ ব র রহম ন উপ চ র য র জন ত ক ন মকরণ ভবন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম
সন্তানের নাম দেওয়া একটি পবিত্র ও তাৎপর্যপূর্ণ দায়িত্ব। ইসলামে নামকরণ শুধু একটি সামাজিক রীতি নয়, বরং এটি সন্তানের পরিচয়, যা চরিত্র ও ভবিষ্যৎ জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।
আধুনিক যুগে মুসলিম পরিবারগুলো সন্তানের নাম রাখার ক্ষেত্রে এমন নাম খুঁজছে, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, অথচ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক, সংক্ষিপ্ত ও শ্রুতিমধুর।
ফলে ইসলামের আলোকে মুসলিম সন্তানের নামকরণের গুরুত্ব, আধুনিক নামের প্রবণতা এবং কীভাবে ইসলামি ও আধুনিকতার সমন্বয় ঘটানো যায়, তা নিয়ে আলোচনার দাবি রাখে।
ইসলামে নামকরণের গুরুত্বইসলামে সন্তানের নামকরণ একটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব। রাসুল (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক সন্তানের বেলায় পিতার দায়িত্ব হলো তাকে একটি সুন্দর নাম দেওয়া এবং তাকে ভালো শিক্ষা দেওয়া।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪,৯৪৯)
নাম শুধু একটি পরিচয় নয়, বরং এটি সন্তানের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ইসলামে নামের অর্থের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,১৯০)
এটি প্রমাণ করে যে নামের অর্থ সুন্দর, ইতিবাচক ও ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
আরও পড়ুনদস্তরখানের নামে সুরার নাম০৪ মার্চ ২০২৫রাসুল (সা.) নিজে কিছু নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিলেন, যদি সেগুলোর অর্থ ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বা অশোভন হতো। তিনি ‘হারব’ (যুদ্ধ) নামটি পরিবর্তন করে ‘হাসান’ (সুন্দর) রেখেছিলেন।আধুনিক নামকরণের প্রবণতাআধুনিক যুগে মুসলিম সমাজে নামকরণের ক্ষেত্রে কিছু নতুন প্রবণতা লক্ষ করা যায়। মা–বাবা এখন এমন নাম পছন্দ করেন, যা সংক্ষিপ্ত, উচ্চারণে সহজ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গ্রহণযোগ্য। যেমন ‘আয়ান’, ‘ইয়াসির’, ‘জায়ান’, ‘নুয়াইরা’, ‘আদিয়া’ ইত্যাদি নাম বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই নামগুলোর অর্থও ভালো, যেমন ‘আয়ান’ অর্থ ‘ঐশী উপহার’ এবং ‘নুয়াইরা’ অর্থ ‘আলো’ বা ‘দীপ্তি’।
আধুনিক নামের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এগুলো প্রায়ই লিঙ্গ-নিরপেক্ষ। ‘রায়ান’, ‘ইমান’ বা ‘নূর’–এর মতো নাম ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্যই ব্যবহৃত হচ্ছে। এ ছাড়া বাংলা, আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষার শব্দের পাশাপাশি কিছু নাম স্থানীয় সংস্কৃতি থেকেও গৃহীত হচ্ছে, যা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।
ইসলামি ও আধুনিক নামের সমন্বয়ইসলামি নাম বলতে শুধু আরবি নাম বোঝায় না। ইসলাম যেকোনো ভাষার নাম গ্রহণ করতে উৎসাহিত করে, যতক্ষণ তা অর্থপূর্ণ ও ইতিবাচক। শায়েখ উসাইমিন (রহ.) বলেন, ‘নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।’ (ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারব, পৃষ্ঠা: ১২৫, দারুল ইফতা প্রকাশনী: ১৯৯৮)
আধুনিক নামকরণে এই নীতি মেনে চলা যায়। যেমন ‘তাহা’ (কোরআনের সুরার নাম), ‘ইলিয়াস’ (একজন নবীর নাম), ‘আমিনা’ (রাসুলের মায়ের নাম) ইত্যাদি নাম ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আধুনিক পরিবেশেও গ্রহণযোগ্য।
নাম যেকোনো ভাষার হতে পারে, যদি তা শরিয়াহের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় এবং অর্থে কোনো নেতিবাচকতা না থাকে।শায়েখ সালেহ উসাইমিন (রহ.), ফাতাওয়া নূর আলা আদ-দারবএ ছাড়া ‘জায়নাব’, ‘ফাতিমা’, ‘আলি’, ‘ওমর’ ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী নাম আজও জনপ্রিয় এবং সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে।
আরও পড়ুনপাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করার নাম তওবা২৮ জানুয়ারি ২০২৫নামকরণে সতর্কতানামকরণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
প্রথমত, নামের অর্থ যেন ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয়। কোনো দেব-দেবীর নাম বা শিরকের সঙ্গে সম্পৃক্ত নাম ব্যবহার করা উচিত নয়।
দ্বিতীয়ত, জটিল বা উচ্চারণে কঠিন নাম এড়িয়ে চলা ভালো।
তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য গর্বের এবং সমাজে তার পরিচয়কে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করে।
অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ‘ডায়ানা’র মতো নাম অর্থের দিক থেকে সুন্দর হলেও ইসলামি পরিচয়ের সঙ্গে সব সময় মানানসই না–ও হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মা–বাবাকে নামের অর্থ ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।
মা–বাবার করণীয় অনেক মা–বাবা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে এমন নাম রাখেন, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।ইসলামে নামকরণের জন্য কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
প্রথমত, সন্তান জন্মের পর সপ্তম দিনে নামকরণ করা সুন্নাহ। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ২,৮৩২)
এই সময়ে আকিকা দেওয়ার রীতিও রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, নাম রাখার আগে পরিবারের সদস্য, আলেম বা বিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।
তৃতীয়ত, নামটি এমন হওয়া উচিত, যা সন্তানের জন্য আত্মবিশ্বাসের উৎস হয়।
আধুনিক যুগে নামকরণের ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, বই ও অ্যাপের সাহায্য নেওয়া যায়। তবে এসব ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, কারণ, অনেক সময় ভুল অর্থ বা অপ্রমাণিত তথ্য দেওয়া হতে পারে।
নাম শুধু একটি শব্দ নয়, এটি সন্তানের পরিচয়, চরিত্র ও সমাজে তার অবস্থানের প্রতিফলন। তাই মা–বাবার উচিত এমন নাম নির্বাচন করা, যা ইসলামি মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ও শ্রুতিমধুর।
আরও পড়ুন‘আল-ওয়াহিদ’ আল্লাহর অনন্য নাম২৩ জুন ২০২৫