রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এক মাসের আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিচ্ছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।

তবে এই যুদ্ধবিরতির আওতায় স্থলযুদ্ধ পড়বে না। আকাশ, সমুদ্র ও জ্বালানি অবকাঠামোতে হামলার ক্ষেত্রে এই যুদ্ধবিরতি প্রযোজ্য হবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ গতকাল রোববার ফরাসি দৈনিক লে ফিগারোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন।

মাখোঁ বলেন, যুদ্ধবিরতি হলে তা মানা হচ্ছে কি না, সেটি যাচাই করাটা খুব কঠিন হবে। কারণ, রণক্ষেত্র এত বড় যে তা প্যারিস থেকে বুদাপেস্ট পর্যন্ত দূরত্বের সমান।

ইউক্রেনে শান্তি পরিকল্পনা এগিয়ে নিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের আহ্বানে গতকাল লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের একটি সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনে যোগ দেন মাখোঁ। সম্মেলনের পর এখন রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে এক মাসের আংশিক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য দিচ্ছে বলে সাক্ষাৎকারে জানান মাখোঁ।

আরও পড়ুনলন্ডন সম্মেলনে ইউক্রেনের পক্ষে চার বিষয়ে মতৈক্য১২ ঘণ্টা আগে

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করার দুই দিন পর লন্ডনে ইউরোপীয় নেতাদের সম্মেলনটি হলো। সম্মেলনে ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের প্রতি জোরালো সমর্থন দিয়েছেন। তাঁর দেশকে আরও সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মাখোঁ বলেন, ফ্রান্স-ব্রিটিশ প্রস্তাব অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে ইউরোপীয় স্থলসেনা মোতায়েন করা হবে ইউক্রেনে। আগামী সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের মাটিতে কোনো ইউরোপীয় সেনা থাকবে না।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রকে নিয়েই ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ইউরোপ৮ ঘণ্টা আগে

মাখোঁ বলেন, ‘এখন প্রশ্ন হলো, যুদ্ধবিরতির জন্য আমরা এ সময়টিকে কীভাবে কাজে লাগাব। আলাপ-আলোচনা করতেই কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে। তারপর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর সেনা মোতায়েন করা হবে।’

আরও পড়ুনলন্ডন সম্মেলন কি ট্রাম্পের মন জোগাতে পারবে৩৯ মিনিট আগে

ফ্রান্স ও ব্রিটেনের এসব পরিকল্পনা সম্পর্কে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানেন কি না, এ বিষয়ে লন্ডনে সাংবাদিকের করা প্রশ্নে মাখোঁ বলেন, ‘আমি সবকিছু সম্পর্কে অবগত।’

মাখোঁ বলেছেন, ফ্রান্স ও অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোকে প্রতিরক্ষায় আরও বেশি ব্যয় করতে হবে। ইউরোপীয় কমিশনকে প্রতিরক্ষা ব্যয়ের অর্থায়নে আরও উদ্ভাবনী হতে হবে।

আরও পড়ুনইউক্রেন নিয়ে লন্ডন সম্মেলনের ওপর নজর রাখছে মস্কো১৩ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইউরোপ কি যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়া ইউক্রেনে শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে১০ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন র প ইউর প য়

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ