৬৫ বছর বয়সী স্পিনার একাই নিলেন ১০ উইকেট
Published: 3rd, March 2025 GMT
৬৫ বছর বয়স আর যাই হোক, ক্রিকেট খেলার জন্য ঠিকঠাক বয়স নয়। এই বয়সী মানুষদের নাতি-নাতনিদের সামনে নিজের পুরোনো দিনের গল্পের ঝাঁপি খুলে দিতে বেশি দেখা যায়। তবে এরপরও কেউ কেউ থাকেন ব্যতিক্রম। তেমনই ব্যতিক্রমী একজন ব্র্যাডলি ও’ডেল। শুধু খেলেই না, রীতিমতো রেকর্ডও গড়েন।
৬৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের স্থানীয় এক ক্রিকেট ম্যাচে নিউক্যাসল সিটি ক্রিকেটের হয়ে এই কীর্তি গড়েছেন ও’ডেল।
শনিবার নিউ সাউথ ওয়েলসের চতুর্থ স্তরের প্রতিযোগিতায় নিউক্যাসল-ওয়েলসেন্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচে ঘটেছে এই ঘটনাটি। নিউক্যাসল ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে ও’ডেল ১৩.
শুধু ইনিংসের সবগুলো উইকেট নেওয়ার কীর্তিই গড়েননি তিনি, করেছেন দারুণ এক হ্যাটট্রিকও। এদিন ও’ডেলের নেওয়া ১০ উইকেটের ৫টি ছিল ক্যাচ, ৩টি বোল্ড এবং ২টি এলবিডব্লিউ। ও’ডেলের স্পিন ঘূর্ণিতে নিউক্যাসল অলআউট হয়ে যায় মাত্র ৯২ রানে।
নিজের অর্জন নিয়ে অনুভূতি জানাতে গিয়ে ও’ডেল এবিসি নিউজকে বলেছেন, ‘এমন কিছু আমি আগে করিনি। নিজের এই অর্জন নিয়ে আমি দারুণ আনন্দিত। সবাই আমাকে জড়িয়ে ধরে উদ্যাপন করছিল। তারা সবাই আমাকে ঘিরে ধরেছিল। ব্যাপারটা দারুণ ছিল।’
আরও পড়ুনইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার পর যে সমস্যায় পড়বেন প্যাটেল০৫ ডিসেম্বর ২০২১ও’ডেলের এই কীর্তি নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রাও। নিউক্যাসলের অধিবাসী ও স্কোরার জাস্টিন মোরান বলেন ‘এই মাঠে এমন কিছু এর আগে দেখা যায়নি। সবাই জানত এটা অনেক বড় একটি মুহূর্ত। এমনকি প্রতিপক্ষ দলও ও’ডেলের এমন কাণ্ডে হতবাক।’
টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ জন ক্রিকেটার ইনিংসে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েছেন। ১৯৫৬ সালে ইংলিশ স্পিনার জিম লেকার ১০ উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
১৯৯৯ সালে ভারতীয় স্পিনার অনিল কুম্বলে ১০ উইকেট নেন পাকিস্তানের বিপক্ষে। আর সর্বশেষ এই কীর্তি গড়েছেন নিউজিল্যান্ড স্পিনার এজাজ প্যাটেল। ২০২১ সালের ভারতের বিপক্ষে ইনিংসের সবগুলো উইকেট একাই নিয়েছিলেন এই বাঁহাতি।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।