জাপানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন ওয়ারেন বাফেট
Published: 3rd, March 2025 GMT
বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির নগদ রিজার্ভ সম্পর্কে বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করেছেন কিংবদন্তি বিনিয়োগকারী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান ওয়ারেন বাফেট। একই সঙ্গে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এই তহবিল কৌশলগতভাবে ব্যবহার করে ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা হবে। জাপানে বড় ধরনের বিনিয়োগ করা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বাফেট।
প্রতিবছর মার্চ মাসে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বার্ষিক চিঠি লেখেন ওয়ারেন বাফেট। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই চিঠিতেই তিনি কোম্পানির ৩২১ দশমিক ৪ বিলিয়ন বা ৩২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার নগদ জমা নিয়ে শেয়ারহোল্ডারদের আশ্বস্ত করেছেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।
অনেকেই মনে করছিলেন, এত বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ সংরক্ষিত থাকার কারণে কোম্পানির ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি নিম্নমুখী হবে। তবে বাফেট আরও আশ্বস্ত করেছেন যে এই অর্থ অলস পড়ে থাকবে না। বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে। ফলে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।
কোম্পানির নগদ সংরক্ষণ বাড়লেও বাফেট পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে বার্কশায়ার কোম্পানি মূলত ইকুইটি বিনিয়োগ করবে। কোম্পানির নগদ জমা বাড়লেও তার বিনিয়োগের সিংহভাগ এখনো ইকুইটি বিনিয়োগে আছে এবং ভবিষ্যতে এই কৌশল থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। চলতি প্রান্তিকের আগের প্রান্তিক পর্যন্ত দেখা গেছে, টানা দুই প্রান্তিকে বাফেট স্টক বাই ব্যাক করেনি। এ ঘটনা থেকে বিশ্লেষকদের অনুমান, বাফেট মনে করছেন না যে তাঁর কোম্পানির শেয়ার অবমূল্যায়িত হচ্ছে।
বিপুল পরিমাণ নগদ জমা থেকে কোথায় বিনিয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে কিছুটা ইঙ্গিত দিয়েছেন ওয়ারেন বাফেট। তাঁর পরিকল্পনা জাপানে আরও বিনিয়োগ করা, যদিও সেখানে ইতিমধ্যে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ আছে।
এবার জাপানের পাঁচটি বৃহৎ ট্রেডিং প্রতিষ্ঠানে এই বিনিয়োগ করবেন বাফেট। সেগুলো হলো ইতোচু, মারুবেনি, মিৎসুবিশি, মিতসুই ও সুমিতোমো। এসব কোম্পানি ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে জাহাজ ও ইস্পাত পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করে থাকে। এর মধ্য দিয়ে বাফেট জাপানের অর্থনীতিতে আরও সংহত হয়ে ব্যবসা করবেন বলে আশা করছেন।
সেই সঙ্গে ওয়ারেন বাফেটের ইঙ্গিত, এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেখা গেছে, এসব ট্রেডিং কোম্পানিতে বার্কশায়ারের বিনিয়োগ ছিল ২৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার।
এদিকে ২০২৪ সালে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে কোম্পানির বাজার মূলধন এই প্রথম এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। স্বভাবসিদ্ধভাবে ওয়ারেন্ট বাফেট এর কৃতিত্ব দিয়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের। তবে গত বছর কোম্পানিটির মুনাফা প্রায় ৭০০ কোটি ডলার কমেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন য় গ কর র নগদ
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ