মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি বিসিবি, থাকছেন
Published: 3rd, March 2025 GMT
চলমান আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মুশফিকুর রহিম-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পারফরম্যান্স ছিল একদম বাজে। অভিজ্ঞ এই দুই ক্রিকেটারের এমন পারফরম্যান্সের ফলে ভুগতে হয়েছে পুরো দলকেই। টুর্নামেন্ট চলাকালীন ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন দুজনে। প্রশ্ন উঠতে থাকে কখন থামবেন দুজন?
মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর কেউ-ই এই বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে কী ভাবছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)? সোমবার (০৩ মার্চ) ১৮তম বোর্ড সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এলে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হন ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
দুজনের অবসর কিংবা খেলা ছাড়ার বিষয়ে বোর্ড আগেভাগে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। ঘোষণাটা আসতে হবে তাদের থেকেই। ফাহিম স্পষ্টভাবে বুঝিয়েছেন এমনটাই।
আরো পড়ুন:
বেড়েছে ক্রিকেটারদের বেতন, ম্যাচ ফি
বিসিবির বোর্ড মিটিং
কেন্দ্রীয় চুক্তি, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতনবৃদ্ধিসহ আসছে যে সব সিদ্ধান্ত
“খুব কঠিন প্রশ্ন। আমার মনে হয় তাদের প্রমাণ করতে হবে। তাদের বয়স দিক থেকে বলি, তাদের ফিটনেসের দিক থেকে বলি, তাদের পারফরম্যান্সের দিক থেকে বলি; এটা আমার কল না, এটা নির্বাচকদের কল। আমার মন্তব্য করাটা ঠিক না। কিন্তু এটা সহজ হবে না।”
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে খেলতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে আউট হন মাত্র ৪ রানে।
মুশফিক দুই ম্যাচ খেললেও কোনো ম্যাচেই দুই অঙ্কের ঘরের দেখা পাননি। ভারতের বিপক্ষে শূন্যর পর কিউইদের বিপক্ষে আউট হন মাত্র ২ রানে।
ফাহিম জানতে চান দুজনে আসলে কী ভাবছেন, “ওরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। যেকোনো খেলোয়াড়েরই একটা সময় আসবেই তার ক্যারিয়ার শেষ করার। আমার মনে হয় ওদের সঙ্গে কথা বলবো— ওদের চিন্তা কী আছে সেটা নিয়ে আলাপ হবে। এটা আমি এই মুহূর্তে আলাপ করতে পারছি না।’’
এদিকে জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স ও সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মেয়াদ ছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি পর্যন্ত। দুজনের ব্যাপারে ইতিবাচক ভাবনা বিসিবির। অর্থ্যৎ দুজনকেই রাখতে চায় বোর্ড।
ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা সন্তুষ্ট, যারা আমাদের সাথে আছে। তাদের সঙ্গে আমরা আবার যোগাযোগ করবো। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে যদি বোঝাপোড়ায় না আসতে পারি তাহলে আমরা বাইরে যোগাযোগ করবো। আমরা আশা করব যে যারা আমাদের সাথে ছিলেন তাদের সঙ্গে সন্তোষজনক আলাপ-আলোচনা করে সমাধান খুঁজতে পারব।”
ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’
লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’
জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।
সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।