দেশের উত্তরাঞ্চলে সবজির অন্যতম বড় পাইকারি মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাট। পাইকারি এ বাজারে আজ সোমবার বাগানের বড় আকারের একটি লেবু বিক্রি করে চাষি দাম পেয়েছেন ৮ টাকা। ব্যাপারীর একহাত ঘুরে এই লেবু আড়তদারের গুদামে পৌঁছার পর দাম বেড়ে খরচ পড়ে ১০ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারদের হাত ঘুরে খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানের পসরা পর্যন্ত যেতে এই লেবুর দাম বেড়ে হয় ১২ থেকে ১৩ টাকা।

পাঁচ হাত বদলের পর ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়ার শহরের ফতেহ আলী ও রাজাবাজারে এই লেবু খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে প্রতিটি ২০ টাকা দরে। সেই হিসাবে প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা।

বগুড়ার মহাস্থান ও রাজাবাজারে লেবু বিক্রি করতে আসা কৃষক, ব্যাপারী, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে লেবুর উৎপাদক পর্যায়ে থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত ধাপে ধাপে দাম বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে।

মহাস্থান হাটে আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে লেবু তুলে বস্তায় ভরে হাটে বিক্রি করতে এসেছেন চাষিরা। ব্যাপারীরা চাষিদের কাছ থেকে দরদাম করে এই লেবু কিনছেন।

হাটে আসা পাইকার রিফাত হাসান বলেন, স্বাভাবিক সময়ে হাটে ১ লাখ লেবুর সরবরাহ হয়। রোজা উপলক্ষে লেবুর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু এখন লেবুর মৌসুম না হওয়ায় সরবরাহ আগের মতোই আছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় লেবুর দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।

সদর উপজেলার কাজী নুরইল গ্রামের কৃষক ও লেবুচাষি আসহানুল কবির বলেন, তিনি এ বছর ৩ হাজার ৫০০ গাছের লেবুবাগান গড়েছেন। এক মাস পর বাগানের লেবু পুরোদমে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এবার লেবুর ফলন খুব কম। ইতিমধ্যে বাগানের কিছু লেবু বাজারে বিক্রিও করেছেন। এবার বাগান থেকে প্রতিটি লেবু বিক্রি করে গড়ে আট টাকা দাম পেয়েছেন।

নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা গ্রামের লেবুচাষি শাহনাজ বেগম বলেন, রোজার আগে বাগানের লেবু বিক্রি করে দাম পেয়েছেন গড়ে দুই থেকে আড়াই টাকা। এখন বাগানে নতুন করে ফুল এসেছে। দেড় মাস পর বাগান থেকে লেবু বিক্রি করা শুরু হবে। এখন বাজার থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে লেবু কিনতে হচ্ছে।

মহাস্থান হাটের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাষি ও পাইকারদের হাত ঘুরে আড়ত পর্যন্ত আসার পর একটি লেবুর খরচ পড়ে ১২ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই লেবু কিনে নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ টাকা লাভ করেন। আরও এক হাত বদলের পর খুচরা ব্যবসায়ীরা এই লেবু প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছেন।

প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা। আজ সোমবার বিকেলে বগুড়া সার্কিট হাউসের সামনের সড়কে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য় ২০ ট ক এই ল ব

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ

ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।

বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’

এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’

জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদানির সঙ্গে চুক্তি ক‌রে শুল্ক ফাঁকি
  • শিল্প খাতের উৎপাদন যেন ব্যাহত না হয়
  • কারাগারে গাঁজা সরবরাহ করতে গিয়ে নিজেই কারাগারে
  • ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা কী
  • ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ নেই, ৯০ কারখানায় ছুটি
  • মঙ্গলবার ৭ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব জায়গায়
  • পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে ভারত
  • পর্তুগাল ও স্পেনে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিপর্যয়, পর্যুদস্তু জনজীবন
  • হাসপাতালে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা ও স্যালাইন সংকট
  • বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ