Samakal:
2025-06-16@06:06:44 GMT

ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া নয়

Published: 3rd, March 2025 GMT

ইফতারে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া নয়

রোজার অপর নাম সংযম হলেও পরিমিত, সুষম ও স্বাস্থ্যকর খাবার না খেলে গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এবার মার্চজুড়ে রমজান। চৈত্রের খরতাপ অনুভূত হবে। দীর্ঘ সময় পানি পান না করে থাকতে হবে। কর্মস্থলে নতুন সময়সূচির কারণে ‘দেহঘড়ি’ও ভিন্নভাবে অ্যালার্ম দেবে। পরিবর্তিত পরিস্থিতি ধর্মীয় ভাবাবেগের সঙ্গে বিজ্ঞানমনস্কতা আমাদের দেহ-মন দুইকেই সুস্থ রাখবে।
খাদ্য গ্রহণে করণীয়
রোজায় সুস্থতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ জেনেও অনেকেই ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে থাকেন। পেঁয়াজু, চপ, পাকোড়া, বেগুনি ছাড়াও অনেক ভাজাপোড়া খাবার ইফতারের দৈনিক মেন্যুতে থাকতে দেখা যায়। সারাদিন রোজা রেখে পাকস্থলী খুব ক্ষুধার্ত ও দুর্বল থাকে। তার পর যদি এত রকম গুরুপাক খাবার একসঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে কী অবস্থা হবে? পেটের সমস্যা, মাথাব্যথা, দুর্বলতা, অবসাদ, আলসার, এসিডিটি, হজমের সমস্যা ইত্যাদি হবে রোজার নিত্যসঙ্গী। অনেকের ওজনও বেড়ে যায় ভাজাপোড়া খাবারে। নানাভাবে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে। কােলেস্টেরলের মাত্রা ও উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা বাড়িয়ে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি করে।
সাহ্‌রিতে করণীয়
খাবারের মূল উপাদান শর্করা যেমন চাল-আটা সাদার পরিবর্তে লাল গ্রহণ করলে একাধারে ক্ষুধা কম হয় এবং তেমনি পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। প্রোটিনের প্রয়োজন মেটাতে মাছ বা মাংস তেল-মসলা দিয়ে না ভেজে ঝোল ঝোল করে রান্না করুন। অবশ্যই অন্তত একটি ডিম খাবেন। অন্তঃসত্ত্বা বা স্তন্যদানকারী মা চিকিৎসকের পরামর্শে একাধিক ডিম খেতে পারেন। প্রচুর পরিমাণ পানি, ঘোল, দুধে পানি মিশিয়ে পাতলা করে পান করুন। তরমুজ জুস না করে পিস পিস করে কেটে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে। টকদই, বেলের শরবত গ্রহণ করুন। 
বর্জনীয়
বিরিয়ানি, খিচুড়ি, তেহারি, পোলাওজাতীয় খাবার বদহজমসহ সারাদিন হাঁসফাঁসভাব এমনকি মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। চা-কফি পিপাসা ও এসিডিটি বাড়াতে পারে।
ইফতারে করণীয়
হৃদরোগ এড়াতে এক বসায় ইফতারি ও রাতের খাবারের বদলে অল্প অল্প করে কয়েকবারে খান। ছোলা মসলা মিশিয়ে কড়া করে রান্নার পরিবর্তে কাঁচা খান। খেজুর, কলা, পেঁপেজাতীয় ফল মেন্যুতে রাখুন। শসা-টমেটোর সালাদ ইফতারির মজাদার খাবারের ফলে গৃহীত বাড়তি ক্যালরি থেকে বিরত রেখে স্থূলতা প্রতিরোধ করবে।
বর্জনীয়
ধুলাবালি, মাছি, পোকা বসা দোকানের খোলা খাবার উদরাময়সহ নানা রোগের কারণ হতে পারে। একই তেল দিয়ে বিভিন্ন পদের রান্না খাবারকে বিষময় করে তুলতে পারে। এগুলোতে ক্ষতিকর পদার্থ এমনকি মোবিল ব্যবহারের কথা শোনা যায়। ডুবো তেলে ভাজা খাবার, যেমন– পেঁয়াজু, বেগুনি ইত্যাদি ট্রান্সফ্যাটে ভরপুর। পাতে কাঁচা লবণ বর্জনীয়।
ঘুম
শেষরাতে উঠে যাওয়া ছাড়া বিভিন্ন কারণে ঘাটতি ঘুম পূরণে সোশ্যাল মিডিয়া কম ব্যবহার করে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। দিনে ঘুমানোর সুযোগ থাকলে হাতছাড়া করবেন না। ঘুমানো সম্ভব না হলে হালকা ন্যাপ নিন।
রোগীদের জন্য বিশেষ উপদেশ
ডায়াবেটিক রোগীরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শে ইনসুলিন বা এই জাতীয় ওষুধ, খাবারের চার্ট অ্যাডজাস্ট করে নিন। ইফতারের সময় বাড়তি ক্যালরি পরিহার করতে জিলাপি, বুন্দিয়া, মিষ্টি পরিহার করা শ্রেয়। ডায়াবেটিসের পুরোনো রোগীরা ব্লাড গ্লুকোজের মাত্রা কমে ৪-এর নিচে গেলে মিষ্টি খেয়ে রোজা ভেঙে ফেললে বড় রকম স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। শরীর চর্চায় না নেই; হালকা শরীর চর্চা চালিয়ে নেওয়া যেতে পারে। দিনে ৩০ মিনিট হাঁটাকে এই গোত্রে ফেলা যায়। বিকেলের পরিবর্তে রাতে হাঁটাই উত্তম। তবে ভরপেট খাওয়ার পর যথেষ্ট বিরতি দিয়ে হাঁটাই স্বাস্থ্যসম্মত। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইফত র ইফত র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানের হামলায় ২০ ইসরায়েলি নিহত

ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলা চারদিন ধরে চলছে। এসব হামলায় উভয় দেশের মধ্যে নিহতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ইসরায়েলের জাতীয় পরিষেবা জানিয়েছে, আজ সোমবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা  ২০ জনে পৌঁছুল। আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

অন্যদিকে আল-জাজিরা বলছে, ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত ইরানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি পরিষেবার প্রধান ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, মধ্য ইসরায়েলজুড়ে ইরানের হামলায় চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুইজন নারী। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়া, তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রোববার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ