ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শুরু থেকে বেশ আলোচনায় ছিলেন সাব্বির রহমান। পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবে নাম লিখানোর পাশাপাশি এবার অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন। কিন্তু তার দলের শুরুটা একদমই ভালো হলো না। রান পাননি সাব্বির নিজেও। তাতে হার দিয়ে প্রিমিয়ার লিগের যাত্রা শুরু হয়েছে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের।
মঙ্গলবার শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে। আগে ব্যাটিং করে শাইনপুকুর ৫ উইকেটে ২৯৮ রান করে। জবাব দিতে নেমে পারটেক্স গুটিয়ে যায় মাত্র ২২১ রানে। ৫০ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে সাব্বির ৪৭ বল খেলে মাত্র ২০ রান করেন ৩ বাউন্ডারিতে।
শাইনপুকুরের হয়ে এই ম্যাচে ব্যাট হাতে দ্যুতি ছড়িয়েছেন অনিক সরকার ও রায়ান রাফসান রহমান। অনিক ৭৮ বলে ৭৭ রান করেন ৫ চার ও ৪ ছক্কায়। অধিনায়ক রায়ান ৮১ বলে ৮৭ রান করেন ৭ চার ও ৩ ছক্কায়। এছাড়া মিনহাজুল আবেদীন সাব্বির ৩৫ বলে ৩০ এবং জুবায়ের হোসেন ১৪ বলে ৩৯ রান করেন ১ চার ও ৪ ছক্কায়। তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শাইনপুকুর তিনশর কাছাকাছি পুঁজি পায়।
আরো পড়ুন:
শরিফুলের ভয়ংকর রূপ
১০ ওভারে ৫০ ডট বল, ১৪ রানে নিলেন ৪ উইকেট
মেজাজ হারালেন শান্ত, বড় হারে আবাহনীর শুরু
পারটেক্স লক্ষ্য তাড়ার সেই চ্যালেঞ্জ নিতে পারেনি। ১০৩ রানে ৫ উইকেট হারায় তারা। ১১০ রানে নেই ষষ্ঠ উইকেট। দলের হয়ে কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটি ছোঁয়া ইনিংস খেলতে পারেননি। রুবেল মিয়া ৪০ এবং জাওয়াদ রোয়েন ৪৬ রান করেন। বাকিরা ছিলেন নিষ্প্রভ। বল হাতে আল ফাহাদ ও রাফিকুজ্জামান রাফি ৩টি করে উইকেট নেন। ২ উইকেট পেয়েছেন রাহিম আহমেদ। ১৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে রাফিকুজ্জামান পেয়েছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
ঢাকা/ইয়াসিন/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ইনপ ক র র ন কর ন উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
কাজের আনন্দই জীবনের সার্থকতা
জন্মদিনের অনুষ্ঠান নয়, তবে অনানুষ্ঠানিক আয়োজনটি ছিল সে উপলক্ষেই। আলোকিত মানুষ গড়ার কারিগর, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষাবিদ ও সুবক্তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের জন্মদিন ছিল গত ২৫ জুলাই। তাঁর অগণিত অনুরাগীরা চেয়েছিলেন তাঁকে নিয়ে জন্মদিনের অনুষ্ঠানে মিলিত হতে। উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের যে হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে গেছে, তারপর আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান করতে কিছুতেই সম্মত হননি তিনি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ষষ্ঠতলায় কেন্দ্রের প্রাক্তনী ও তাঁর কিছু ঘনিষ্ঠজন আলাপচারিতার এক ঘরোয়া আয়োজন করেছিলেন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে নিয়ে। সেখানে তিনি বললেন, কাজের মধ্য দিয়ে জীবনে যে আনন্দ পেয়েছেন, সেটিই জীবনের সার্থকতা। এই আনন্দই তাঁকে অনুপ্রাণিত করে, শক্তি জোগায়।
এ আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। তিনি তাঁর চিরপরিচিত সরস অথচ বুদ্ধিদীপ্ত গভীর তাৎপর্যময় কথায় উত্তর দিয়েছেন। কবিতা, সাহিত্য, শিল্প থেকে শিক্ষা, ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংগঠন, প্রেম–ভালোবাসা—সবকিছু উঠে আসে প্রশ্নোত্তরভিত্তিক কথোপকথনে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল থেকে শুরু করে বিশ্বসাহিত্যের বহু কালজয়ী লেখকের রচনা থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি দিয়েছেন তিনি। এক অন্তরঙ্গ প্রাণবন্ত আবহ বিরাজমান ছিল সন্ধ্যা থেকে অনেকটা রাত অবধি এই আয়োজনে।
আবৃত্তিশিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় শুরুতেই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের একটি কবিতা আবৃত্তি করে জানতে চান, তিনি কবিতার চর্চা করেননি কেন? জবাবে তিনি বলেন, কবি শামসুর রাহমান একবার তাঁকে বলেছিলেন, তাঁর মধ্যে কবিত্বের ঘাটতি আছে। তাঁর নিজেরও সে রকম মনে হয়েছে। তারপর সাহিত্য পত্রিকা কণ্ঠস্বর প্রকাশ ও অনেক রকম কাজ করতে গিয়ে আর কবিতা লেখা হয়ে ওঠেনি।
অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এখন একটা কঠিন সময় যাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে দেখেন, কী আশা করেন তাদের কাছে?
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘তরুণেরা কী হবে, তা তরুণদের ওপরে নির্ভর করে না। সেটা নির্ভর করে আমরা তাদের কী বানাতে চাই, তার ওপর। দেখতে হবে তরুণদের গড়ার মতো আমাদের ক্ষমতা কতটা আছে। অর্থাৎ শিক্ষক কেমন হবে, তার ওপরে নির্ভর করে তাঁর ছাত্র কেমন হবে। সক্রেটিস শিক্ষক ছিলেন বলে ছাত্র প্লেটো হয়েছেন। প্লেটোর শিক্ষা পেয়ে ছাত্র অ্যারিস্টটল হতে পেরেছেন। বড়দের যদি বড়ত্ব না থাকে, তবে ছোটরা বড় হতে পারে না। দুর্ভাগ্য যে আমরা বড়রা তাদের সামনে আদর্শ দাঁড় করাতে পারিনি। ফলে এখন বড়দেরই ছোটদের পেছনে দাঁড়াতে হচ্ছে।’
ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম জানতে চান, তিনি এত বিচিত্র ধরনের এত বিপুল কাজ করেছেন। এই প্রাণশক্তি পান কেমন করে?
উত্তর দিতে গিয়ে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘শক্তি আসে আনন্দ থেকে। কাজ করতে পারাটাই আনন্দের। আর সব সময় আশাবাদী থাকি। আশা কখনো শেষ হয় না। আশা শেষ মানে আমি শেষ।’
আলাপচারিতায় আরও অংশ নেন দুদক চেয়ারম্যান এম এ মোমেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, চিকিৎসক আমজাদ হোসেন, অভিনয়শিল্পী খায়রুল আলম সবুজ, কথাশিল্পী আনিসুল হক, ছড়াকার আমিরুল ইসলাম, উপস্থাপক আবদুন নূর তুষার, অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি, মশিউর রহমান, আলী নকী প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রাক্তনী খাদিজা রহমান।