‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কখন পড়ব
Published: 4th, March 2025 GMT
রাসুল (সা.)–এর সময়ের ঘটনা। একজন যুবক ছিলেন স্বাস্থ্যবান। হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। অসুখে তাঁর স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ল। তাঁকে দেখলে মনে হতো, যেকোনো সময় মারা যাবেন।
খবর পেয়ে রাসুল (সা.) তাঁকে দেখতে এলেন। রাসুলও তাঁকে দেখে অবাক। জানতে চাইলেন, তোমার তো এমন হওয়ার কথা নয়। কী করে এ অবস্থা হলো? তুমি কি আল্লাহর কাছে বিশেষ কোনো দোয়া করেছ?
যুবক বলল, আপনি ঠিকই ধরেছেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি, হে আল্লাহ! আমার আখিরাতের প্রাপ্য সব শাস্তি দুনিয়াতে যেন পাই। আখিরাতে যেন কোনো কষ্ট না পাই।’
রাসুল (সা.                
      
				
এই বলে রাসুল (সা.) দোয়া তাঁকে শিখিয়ে দিলেন, ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাওঁ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাওঁ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২০১)
এর অর্থ: ‘আর তাদের মধ্যে অনেকে বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দাও ও পরকালেও কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে অগ্নিযন্ত্রণা থেকে রক্ষা করো।’
আরও পড়ুনযে সাহাবির মৃত্যুতে আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছিল ২২ মার্চ ২০২৪আরেকটি ঘটনা। সাহাবি আনাস ইবনে মালিক (রা.) তখন বৃদ্ধ, চলতে-ফিরতে অক্ষম। তাঁর কাছে বসরা থেকে একদল লোক এসে বলল, ‘হে আনাস (রা.), আপনি রাসুল (সা.)–কে দেখেছেন। আপনার মতো সৌভাগ্যবান মানুষের কাছ থেকে শুধু দোয়া নিতে আমরা বসরা থেকে এসেছি। আমাদের জন্য দোয়া করুন।’ তখন আনাস (রা.) তাঁদের নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ পড়ে দোয়া করলেন।
বসরার লোকেরা বলল, আরও কিছু দোয়া করুন। আনাস (রা.) আবারও এই দোয়া করলেন। আনাস (রা.) কয়েকবার এ দোয়াই করলেন।
আনাস (রা.) তাঁদের বললেন, ‘আমি শ্রেষ্ঠতম দোয়াটিই করেছি। যদি এই একটি দোয়া কবুল হয়, তবে তোমাদের অন্য যা কিছু প্রয়োজন, সবই এর বরকতে পূরণ হয়ে যাবে।’
এই দোয়া শুরু হয়েছে রাব্বানা দিয়ে। দোয়ায় তিনটি অংশ আছে—
১. দুনিয়ার কল্যাণ ২. আখিরাতের কল্যাণ এবং ৩. জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি।
মহান আল্লাহর থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার ভয় থাকতে হবে, আবার তিনি আমাদের চাওয়াগুলো কবুল করবেন, এই আশাবাদ থাকতে হবে। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করতে হবে, জান্নাত পাওয়ার আশা করতে হবে, ঠিক তেমনি জাহান্নামের আগুনের ভয়েও সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত সুন্দরভাবে এই দোয়ায় আছে। তাই এ দোয়া এত সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুনআল্লাহর নিদর্শন উট হত্যা করেছিল সামুদ জাতি২১ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এই দ য় আম দ র আল ল হ কল য ণ
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’