এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কারণ দেখি না: তৌহিদ হোসেন
Published: 4th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাংলাদেশের দুজন ব্যক্তির মালিকানাধীন কোনো সংস্থাকে দেওয়ার কথা বলেছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই বক্তব্য সত্য নয় বলে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
আজ মঙ্গলবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, বাংলাদেশে ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২৯ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ (এসপিএল) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ প্রকল্প নিয়ে কিছু তথ্য দিয়েছেন, যা নিয়ে জনমনে ব্যাপক বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুসন্ধান করেছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছ থেকে এমন এক সংস্থা ২৯ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে, যে সংস্থার নাম আগে কেউ শোনেনি। সেই সংস্থায় মাত্র দুজন কাজ করেন বলেও উল্লেখ করেছিলেন তিনি। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারি মেরিল্যান্ডে এক অনুষ্ঠানে আবারও সেই প্রসঙ্গ তোলেন ট্রাম্প। এদিন তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৯ মিলিয়ন ডলার গেছে রাজনৈতিক পরিসর শক্তিশালী করতে এবং তাদের সহায়তা করতে, যাতে তারা একজন কট্টর বাম কমিউনিস্টকে ভোট দিতে পারে।’
ট্রাম্পের বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাল্টা বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমার মনে হয় না (সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে)। বিষয়টি হলো, তারাও শুধু প্রেসিডেন্ট একটি কথা বলেছেন। প্রেসিডেন্ট কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেননি। আমরাও দেখেছি যে এ রকম কোনো কিছু নেই। এটি নিয়ে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হওয়ার কিছু দেখি না।’
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটার কোনো তদন্ত করা হয়নি। আমরা খোঁজ নিয়েছি যে বিষয়টি কী। এখানে দুই ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান আছে কি না। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, আসলে মার্কিন একটি প্রতিষ্ঠানকে টাকাটা দেওয়া হয়। তারা এখানে বিভিন্ন এনজিওর সঙ্গে কাজ করে। অর্থ সবই প্রোপার চ্যানেলে এসেছে। এখানে দুই ব্যক্তিকে ২৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি সে রকম নয়।’
ভারতের ক্ষেত্রে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার কারণে বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে মার্কিন দূতকে কেন তলব করা হবে না, এমন এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এটাকে আমি কোনো উসকানিমূলক মন্তব্য বলে মনে করি না। একটি বিবৃতি দিয়েছি। আমরা দেখেছি যে এটার তেমন কোনো ভিত্তি দেখা যাচ্ছে না। উনি (মার্কিন প্রেসিডেন্ট) এটা তো স্পষ্ট করে বলেননি যে বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ রকম কোনো কথা তিনি বলেননি। তিনি দুই ব্যক্তি বলে কাকে বোঝাতে চেয়েছেন, সেটি আমি জানি না। কাজেই এরপর আমরা কোনো বাড়াবাড়ি করার প্রয়োজন দেখি না।’
বাংলাদেশের বিবৃতিতে ‘অসত্য’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘এটি বলাই যায়। যেহেতু আমরা কোনো কিছু খুঁজে পাইনি। এ রকম কোনো কিছু নেই। কাজেই এটি যে ঠিক না, সেটাই বলা হয়েছে।’
সুখবর নেই ভারতীয় ভিসা স্বাভাবিকীকরণেবাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য কবে নাগাদ ভারতীয় ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক হবে, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ভিসা জটিলতা আমরা সৃষ্টি করিনি। ভারত যেকোনো কারণে হোক সেটা বন্ধ রেখেছে। ভিসা দেওয়া তাদের সার্বভৌম অধিকার। কোনো দেশ কাউকে যদি ভিসা না দেয় বা কোনো গোষ্ঠীকে ভিসা না দেয়, এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলা যাবে না। এটা তাদের সিদ্ধান্ত। আমরা আশা করছি, তারা (ভারত) তাদের সিদ্ধান্ত জানাবেন বা কার্যকলাপ বাড়াবেন, যেন লোকজন যাঁরা ভারত যেতে চান, তাঁরা ভিসা পান।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প উপদ ষ ট ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত বাসে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ, চালক আটক
ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক কলেজছাত্রীকে চলন্ত বাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। নবীগঞ্জ-শেরপুর সড়কে রোববার রাতে যাত্রীবাহী বাসে এ ঘটনা ঘটে। পরে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে স্থানীয় জনতা সড়কের তিনতালাব পুকুর পাড় নামক স্থানে বাসটি আটক করে এবং বাসের ড্রাইভারকে আটক করে সেনাবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করে। এসময় বাসের হেলপার পালিয়ে যায়।
পরে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে একদল সেনা সদস্য ওই কলেজ ছাত্রী ও ড্রাইভারকে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করে। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জানা যায়, ঢাকায় একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে ওই ছাত্রী। রোববার সকালে ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে একটি বাসে উঠেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি যেতে বানিয়াচং যাওয়ার পথে শায়েস্থাগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডে নামার কথা থাকলেও তিনি বাসের মধ্যে ঘুমিয়ে যান। ফলে বাস তাকে শায়েস্থাগঞ্জে না নামিয়ে শেরপুর বাসস্ট্যান্ডে নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টায় ওই কলেজছাত্রী একটি লোকাল বাসে উঠে। সেই বাসে কয়েকজন যাত্রী ছিল, বাসটি নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি নামক স্থানে পৌঁছালে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। এরপর ওই ছাত্রীকে একা পেয়ে বাসের চালক ও হেলপার তাকে বাসে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।
এ বিষয়ে ওই ছাত্রী জানায়, তিনি ঢাকায় একটি কলেজে লেখাপড়া করেন। তার পরিবারের সবাই ঢাকায় থাকে তিনি ঢাকায় ঈদ করেছে। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি আসেননি এই জন্য আজকে গ্রামের বাড়িতে আসছিলেন।
বানিয়াচং থানার সেনাক্যাম্পের সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হারুনুর রশিদ বলেন, আমরা কলেজছাত্রী ও বাস চালককে নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছি।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানার ওসি দুলাল মিয়া জানান, ঘটনার পর বাস চালককে আটক করা হয়েছে এবং হেলপার পালিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে মামলা লেখার কাজ চলছে।