জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২ কোটি ১০ লাখ অভিবাসী অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তাঁদের মধ্যে অনেককেই বিপজ্জনক অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ কথা বলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিলেন তিনি।

এর আগে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দিয়েছিলেন। এর কয়েক সপ্তাহ পরই কোভিড-১৯ মহামারি গোটা বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী ‘ইউএস বর্ডার প্যাট্রল’–এর পরিসংখ্যান অনুসারে, বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন প্রায় ৭০ লাখ অভিবাসীকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করার সময় গ্রেপ্তার করেছিল এ বাহিনী। যদিও এ পরিসংখ্যানগুলোতে বারবার সীমান্ত অতিক্রমকারীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয়দের তুলনায় অভিবাসীরা বেশি অপরাধ করেন না।

ভাষণে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের হাতে নিহত নারী ও মেয়েদের উদাহরণ তুলে ধরেন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন লেকেন রিলে ও জোসেলিন নুঙ্গারে।
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি অবৈধ অভিবাসন নিয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করলে অভিবাসন ও কাস্টমস বাহিনীর (আইসিই) জন্য অপরাধী নন, এমন ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা সহজ হয়ে পড়েছে।

আইসিইর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি আইসিইর হাতে অপরাধে যুক্ত থাকার রেকর্ড নেই, এমন গ্রেপ্তার ও আটক হওয়া অভিবাসীর সংখ্যা ২২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভাষণে ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি সরকারি সেন্সরশিপের অবসান ঘটাবেন। যুক্তরাষ্ট্রে বাক্‌স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করবেন।

এর আগে ট্রাম্প তাঁর প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দিয়েছিলেন। এর কয়েক সপ্তাহ পরই কোভিড-১৯ মহামারি গোটা বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল।

আরও পড়ুনকংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন ট্রাম্প৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী