আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে জেলেনস্কি চিঠি পাঠিয়েছেন: ভাষণে জানালেন ট্রাম্প
Published: 5th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছেন। ইউক্রেনের নেতা ওই চিঠিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে আলোচনার টেবিলে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাতে মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন। এ সময় তিনি ওই চিঠি থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে কথা বলেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আজ সকালে আমি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির কাছ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পেয়েছি। এতে লেখা ছিল, “স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনার টেবিলে আসতে প্রস্তুত ইউক্রেন। ইউক্রেনীয়দের চেয়ে বেশি শান্তি আর কেউ চায় না।”’
এর আগে গত শুক্রবার উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ফলে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কির আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল।
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিলেন ট্রাম্প।
ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেছেন, জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে ২ কোটি ১০ লাখ অভিবাসী অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত বাহিনী ‘ইউএস বর্ডার প্যাট্রল’-এর পরিসংখ্যান অনুসারে, বাইডেন প্রেসিডেন্ট থাকাকালে প্রায় ৭০ লাখ অভিবাসীকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করার সময় গ্রেপ্তার করেছিল এ বাহিনী। যদিও এ পরিসংখ্যানগুলোয় বারবার সীমান্ত অতিক্রমকারীদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অধিবেশনে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আবার বাক্স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনবেন এবং সরকারি সেন্সরশিপের অবসান ঘটাবেন।
ট্রাম্প এর আগে নিজের প্রথম মেয়াদে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বার্ষিক ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণ দিয়েছিলেন। এর কয়েক সপ্তাহ পরই কোভিড-১৯ মহামারি গোটা বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছিল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন
টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।
এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।
গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।
প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।