পটুয়াখলীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আইনজীবীদের আদালত বর্জন
Published: 5th, March 2025 GMT
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের ঘুষ-দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মের প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।
বুধবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে এজলাসে কোন আইনজীবী উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। এতে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।
দুপুরে আদালত বর্জনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি ও কলাপাড়া চৌকি আদালত আইনজীবী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো.
এর আগে চৌকি আদালত আইনজীবী ভবনে আইনজীবীদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান চুন্নুর সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট মো. হাফিজুর রহমান চুন্নু, অ্যাডভোকেট নাথুরাম ভৌমিক, অ্যাডভোকেট আব্দুস সত্তার(৫), অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট গোফরান বিশ্বাস পলাশ, অ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান, অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, অ্যাডভোকেট খন্দকার শাহাবুদ্দিন, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট কাওসার, অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। সভায় আইনজীবিরা আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।
ধানখালী থেকে আসা বিচারপ্রার্থী ফিরোজ মিয়া বলেন, “একটি মামলায় আমার আজ হাজিরা ছিল। সেই সকালে এসেছি। পরে শুনলাম আজ কোন উকিল আদালত করবেন না। তাই ফেরত যাচ্ছি। আমার আসা যাওয়ার ভাড়াটাই বৃথা গেল।”
কলাপাড়া চৌকি আদালতে প্রাকটিসরত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও উপজেলা বিএনপির সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান চুন্নু বলেন, “জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশীষ রায়ের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতায় কলাপাড়ার বিচার প্রার্থী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনে জামিন, খালাস আদেশ দেয়ায় আদালতের ভাবমূর্তি সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে।”
অপর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার নাসির উদ্দিন বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেটের ঘুষ, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্য আদালতে মুখ খোলায় আমি তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। কেননা এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উনি আমার পরিচালনাধীন বেশ কয়েকটি মামলায় অন্যায় আদেশ দিয়েছেন। অবিলম্বে ওনার অপসারণের দাবিতে আদালত বর্জন করেছেন আইনজীবীরা।”
জেলা আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট মো. মজিবুর রহমান চুন্নু বলেন, “আজকের সভায় আইনজীবীরা সর্বসম্মতি ক্রমে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অপসারণের জন্য আদালত বর্জনের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে। আমরা আজকের মধ্যেই এ রেজুলেশন জেলা জজ আদালতের প্রধান বিচারকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পৌঁছে দিচ্ছি। অবিলম্বে তাকে অপসারণ করা না হলে আইনজীবীরা কঠোর কর্মসূচি পালনে বাধ্য হবে।”
কলাপাড়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. কাইয়ুম আকন্দ বলেন, “আইনজীবীরা কী করেছে সেটা আসলে আমরা অবগত নই। তবে আজ কোন আইনজীবী এজলাসে উপস্থিত হননি। স্বাভাবিকভাবেই আদালতের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন চ ন ন ন আইনজ ব আইনজ ব র কল প ড
এছাড়াও পড়ুন:
বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা যেভাবে পড়বেন
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রার্থীদের সুবিধার জন্য লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতির পরামর্শ প্রকাশ করা হচ্ছে। আজ পঞ্চম পর্বে থাকছে বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ বিষয়ে প্রস্তুতির পরামর্শ। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২ মূলত আইনজীবীদের পেশাজীবনের অনুসরণীয় বিধিমালা। এ আইন থেকে আইনজীবী তালিকাভুক্তি লিখিত পরীক্ষায় দুটি প্রশ্ন আসবে। উত্তর দিতে হবে একটি। নম্বর থাকবে ১০।
প্রশ্নপত্রের মানবণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আইনটি কেমন হতে পারে। মূলত বার কাউন্সিলের গঠন, আইনজীবী হওয়ার যোগ্যতা এবং একজন আইনজীবী হিসেবে সমাজের প্রতি, মক্কেলের প্রতি, সহকর্মীদের প্রতি যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা এ আইনে বলা হয়েছে। বাস্তবধর্মী ও পেশাজীবনে অতি চর্চিত একটি আইন হলো বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২। এ আইন থেকে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করলে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া সম্ভব।
যেমন বার কাউন্সিল কীভাবে গঠিত হয়, বার কাউন্সিলের কার্যবালি কী, সদস্যরা কীভাবে নির্বাচিত হন, কতগুলো কমিটি রয়েছে, কমিটির কাজ কী কী—এগুলো পড়তে হবে। অনেকেই আছে বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোশিয়েশনের মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। এটি ভালো করে রপ্ত করতে হবে। এমন প্রশ্ন হরহামেশা পরীক্ষায় আসে।
এ ছাড়া বার ট্রাইব্যুনালের গঠন ও কার্যাবলি, আইনজীবীদের পেশাগত অসদাচরণের জন্য কী কী ধরনের শাস্তি রয়েছে, বার কাউন্সিল কি আইনজীবীদের বিরুদ্ধে সুয়োমোটো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে—বিষয়গুলো কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না। অনুচ্ছেদ ৩৩, ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৩২ এবং বিধি ৪১, ৪১ক ও ৫০–এ এসব বিষয়ে বিস্তারিত বলা আছে। সেগুলো ভালো করে পড়তে হবে। অনুসন্ধান করার ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা, একজন আইনজীবী হিসেবে আরেক আইনজীবীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তর জানতে হবে। এসব বিষয় থেকে নিয়মিত প্রশ্ন আসে।
পেশাগত বিধি অংশে রচনামূলক প্রশ্ন আসতে পারে। যেমন পেশাগত বিধি এবং নীতিমালার আলোকে আদালতের প্রতি, মক্কেলের প্রতিসহ আইনজীবীদের প্রতি ও জনসাধারণের প্রতি একজন আইনজীবীর দায়িত্ব ও কর্তব্য পর্যালোচনা করতে বলা হয়। বর্তমান ঢাকা বারসহ বেশ কয়েকটি বার অ্যাসোশিয়েশনে এডহক কমিটি রয়েছে। এডহক বার কাউন্সিলের গঠন ও ফাংশনস সম্পর্কে প্রশ্ন আসতে পারে। এগুলো ভালো করে পড়তে হবে।
অনেক সময়ে আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা করতে দেওয়া হয়। তাই এই মুসাবিদা নিয়মিত অনুশীলন করবেন। মনে রাখবেন, মামলার মুসাবিদা ও আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগের মুসাবিদার ধরন কিন্তু এক নয়। তাই যেকোনো ভালো একটি বই থেকে ফরমেটটি দেখে নেবেন এবং অনুশীলন করবেন। একই সঙ্গে বিগত কয়েক বছরের প্রশ্ন সমাধান করবেন। এ আইন থেকে বিগত বছরের প্রশ্ন রিপিটও হয়।
একটি বিষয় মনে রাখবেন, আইনটি সহজ বলে অবহেলা করার সুযোগ নেই। কারণ, কৃতকার্য হওয়ার জন্য এই ১০ নম্বর অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে।