বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি এবং যুক্তরাজ্যের সাবেক দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্তে কীভাবে ঢাকাকে সহযোগিতা করা যায় তা ভাবছে লন্ডন। বুধবার স্কাই নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি খুবই গুরুতর। দেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে। ড. ইউনূসের এই মন্তব্যের পরপরই যুক্তরাজ্যভিত্তিক তদন্তকারীরা টিউলিপের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্তে বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করা যাবে তা খতিয়ে দেখছেন।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক জানুয়ারিতে মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ওই মাসেই বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলায় মা, ভাই-বোন ও খালা শেখ হাসিনার সাথে টিউলিপ সিদ্দিককেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা পূর্বাচল নতুন শহরে প্লট বরাদ্দ নিয়েছিলেন। তবে টিউলিপের একজন মুখপাত্র এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

স্কাই নিউজ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমন সমন্বয় কেন্দ্র (আইএসিসিসি) এখন বাংলাদেশের সরকার এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মহা-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য ‘সুযোগ অনুসন্ধান’ করছে। আইএসিসিসি বর্তমানে ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) মাধ্যমে পরিচালিত হয় এবং প্রাথমিকভাবে যুক্তরাজ্য সরকার এর অর্থায়ন করে। এটিতে বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষকরা রয়েছেন যারা বিদেশী অংশীদারদের সাথে বড় ধরনের দুর্নীতির তদন্তে কাজ করেন। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন করার প্রাথমিক কাজের অংশ হিসেবে অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসে এনসিএ-এর কর্মীরা ঢাকা সফর করেছিলেন।

সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, এই অনুসন্ধানী কাজের অর্থ এই নয় যে যুক্তরাজ্যের সংস্থাগুলো সরাসরি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্তের সাথে জড়িত। সূত্র জানিয়েছে, এই অগ্রগতি এনসিএ বা আইএসিসিসি কোনও নির্দিষ্ট তদন্তকে সমর্থন করছে বলে নিশ্চিত করা উচিত নয়। তবে, শেখ হাসিনার শাসনামালে বাংলাদেশ থেকে অর্থ যুক্তরাজ্যে পাচার করে আনা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিতে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের তদন্তের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে বিষয়টি।

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করবেন শারা

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল–শারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন সফর করবেন। গতকাল শনিবার দামেস্কে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত টম ব্যারাক এ ঘোষণা দেন। এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম সফর।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ১০ নভেম্বরের দিকে এ সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে।

গতকাল বাহরাইনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতিবিষয়ক সম্মেলন ‘মানামা ডায়ালগ’-এর ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টম ব্যারাক। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, শারার এ সফরে সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসলামিক স্টেটবিরোধী জোটে যোগ দেবে।

আরও পড়ুনযে মার্কিন জেনারেল একদিন গ্রেপ্তার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে সাক্ষাৎকার দিলেন আল-শারা২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ বিষয়ে অবগত এক সিরীয় সূত্র জানায়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে শারা ওয়াশিংটন সফরে যেতে পারেন।

কোন কোন বিদেশি নেতা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, তার একটি ঐতিহাসিক তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে সংরক্ষিত আছে। সে তালিকায় দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াশিংটন সফর করেননি। গত সেপ্টেম্বরে শারা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন।

গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।

গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।

ব্যারাক বলেন, ওয়াশিংটনের লক্ষ্য হলো ২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাতে সিরিয়াকে যুক্ত করা। আইএস তাদের উত্থানের সময় ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সিরিয়া ও ইরাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখল করে রেখেছিল।

ব্যারাক বলেন, ‘আমরা সবাইকে এ জোটের অংশীদার করার চেষ্টা করছি, যা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

শারা একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে এক দশক আগে তাঁর নেতৃত্বাধীন আসাদবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই নেটওয়ার্ক থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং পরে আইএসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। আল–কায়েদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ওসামা বিন লাদেন।

আরও পড়ুনসিরিয়ার নেতা শারাকে গ্রেপ্তারে ১ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র২১ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা ২০১৯ সালে সিরিয়ায় আইএসের সবশেষ শক্ত ঘাঁটি দখলমুক্ত করে। তবে বিভিন্ন সূত্র গত জুনে রয়টার্সকে বলেছে, আইএস আসাদ সরকারের পতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিরিয়া ও প্রতিবেশী দেশ ইরাকে নতুন করে ফিরে আসার চেষ্টা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করবেন শারা