বরযাত্রী নিয়ে বিয়ে করতে যাওয়ার পথে হঠাৎ বরের মৃত্যু
Published: 6th, March 2025 GMT
বিয়ের দিনক্ষণ আগেই ঠিক করা ছিল। সে অনুযায়ী গতকাল বুধবার রাতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কথা। বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের আসরে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন বর মুন্না গড়।
গতকাল রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা–বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুন্না গড় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা–বাগানের গড় লাইন এলাকার আসুক গড়ের ছেলে।
বরের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে প্রায় ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে রওনা হন মুন্না গড়। কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা–বাগানের নতুন লাইন এলাকার সম্পদ রাজগড়ের মেয়ে সুমি রাজগড়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা ছিল। রাত সাড়ে আটটার দিকে মাধবপুর চা–বাগানে পৌঁছার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বর। তখন তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বরের এমন মৃত্যুর খবরে কনের বাড়িতেও কান্নার রোল পড়ে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাজেদুল কবীর বলেন, ‘আমাদের কাছে আনার পর ছেলেটির পালস, শ্বাসপ্রশ্বাস সব বন্ধ পাই। তারপরও আমরা শিওর হওয়ার জন্য তাঁকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কমলগঞ জ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?