রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান পদে বহিরাগত নিয়োগের প্রতিবাদে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিভাগের অভ্যন্তরীণ যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকদের মধ্য থেকেই চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসন ভবন ঘেরাও করেন বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

সেখানে তারা বলেন, অবিলম্বে এ নিয়োগ বাতিল করে বিভাগের অভ্যন্তরীণ যোগ্য শিক্ষকদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। ভবিষ্যতে বিভাগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মতামত নিতে হবে।

আরো পড়ুন:

এইচএসসি পাশেই রাবিতে প্রথম শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগ

রাবির ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র বিভ্রাট, ভোগান্তিতে ভর্তিচ্ছুরা

এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দাবি মোদের একটাই, নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান চাই’, ‘মানি না মানবো না’, ‘অন্য বিভাগের চেয়ারম্যান মানবো না’, ‘নিজের ঘরে পরের শাসন, মানি না মানবো না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিন বলেন, “আমাদের বিভাগে যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক থাকার পরও অন্য বিভাগ থেকে কেন চেয়ারম্যান আনতে হবে? বিভাগের শিক্ষকেরা আমাদের বুঝতে পারেন, আমরাও তাদের বুঝতে পারি। তাই আমাদের একটাই দাবি, নিজ বিভাগ থেকে চেয়ারম্যান চাই।”

আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, “বিভাগে এর আগে যেসব চেয়ারম্যান এসেছেন, তাদের কাছ থেকে আশানুরূপ উন্নয়ন আমরা পাইনি। এজন্য নিজের ঘরের দায়িত্ব অন্যকে দিয়ে খাল কেটে কুমির আনতে চাই না। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।”

এর আগে, বুধবার (৫ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড.

ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিভাগটিতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজু সরদারকে বিভাগের সভাপতির রুটিন দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেনকে স্বপদে ও স্ববেতনে প্রেষণে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে বদলি করা হলো।

এতে আরো বলা হয়, প্রেষণে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগে যোগদানের তারিখ থেকে প্রচলিত বিধি অনুযায়ী আগামী ৩ বছরের জন্য তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। এ পদে থাকাকালে তিনি পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভোগ করবেন।

এদিকে, বিকেল ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দেওয়া এ নিয়োগাদেশ স্থগিতে ঘোষণা দিলে অবরোধ উঠিয়ে নেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে রাবি প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, “যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সে আর যোগদান করবেন না। এটা নিয়ে আমরা রাতে বসব। শিক্ষার্থীরা যাকে চাইবে, তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ